Main Menu

সিলেটে ছিনতাইকালে হত্যার দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেটের বিয়ানীবাজারে ছিনতাই ও হত্যা মামলায় মো. জাকারিয়া রুবেল (২৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালতের বিচারক। মামলার অপর ৩ আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে রায়ে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬মাসের বিনাশ্রম, ৩৯৩ ধারায় ৩ বছরের কারাদন্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ মাসের বিনাশ্রম, ৩২৫ ধারায় ৩ বছরের কারাদন্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করার আদেশ দেওয়া হয়।

দন্ডপ্রাপ্ত মো. জাকারিয়া রুবেল (২৮) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার দরাপপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে ও বর্তমানে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এ রায় ঘোষনা করেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ আনোয়ারুল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার দেনতপুর গ্রামের মো. রুহুল আমিনের ছেলে বর্তমানে জকিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা রুবেল (২২), একই জেলার রামগতি থানার সেবাগ্রামের কবিরুল হকের ছেলে বর্তমানে একই এলাকার বাসিন্দা মো. কামরুল হক উরফে হাসান (২১)এবং কানাইঘাট উপজেলার সরাইগ্রামের মজিবুর রহমান চৌধুরীর ছেলে আতিকুর রহমান লাভলু (২৮)।

মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২৮ এপ্রিল বিকেল ৫ টার দিকে বিয়ানীবাজারের খাসাড়ীপাড়ার মৃত মো: জমাদ আলীর ছেলে মো. মইনুল হক (৪০) ও পাশ্ববর্তী ছোটদেশ গ্রামের ছানু মিয়ার ছেলে সাহেদ আহমদসহ (২৩) মোটর সাইকেলযোগে জকিগঞ্জ থেকে প্রবাসী ভাইয়ের পাঠানো ৩ লাখ টাকা আনতে যান। টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ফেরার পথে একটি মাইক্রোবাসে ছিনতাইকারীরা তাদের ধাওয়া করে। মোটর সাইকেলটি বিয়ানীবাজারের চারখাই জকিগঞ্জ সড়কের কাটলি ব্রীজের ১০০ গজ পূর্বে পৌছামাত্র ছিনতাইকারীদের মাক্রোবাসটি তাদের সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে মাটিতে ছিটকে পড়ে মো. মইনুল হক ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং সাহেদ আহমদ গুরুতর আহত হন।

তখন ছিনতাইকারীরা মইনুলের পকেটে থাকা ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে না নিয়েই মাইক্রোবাসটি নিয়ে সটকে পড়ে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক আহত সাহেদ আহমদ মোবাইল ফোনে পুলিশ ও নিহতের পরিবারকে জানান।

খবর পেয়ে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং ছিনতাইকারী মো. জাকারিয়া রুবেলকে মাইক্রোবাসসহ আটক করে।

এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মো. আয়নুল হক বাদি হয়ে চার জনকে আসামী করে বিয়ানীবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-২৯(৪)১৩) দায়ের করেন।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে বিয়ানীবাজার থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদ হাসান নাঈম চার জনকেই অভিযুক্ত করে ২০১৩ সালের ৭ আগষ্ট আদালতে এিই মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট নং-৮৬) দাখিল করেন। এরপর ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারী চার্জগঠনের মাধ্যমে মামলার বিচারকার্য শুরু হয়।

দীর্ঘ শুনানী ও ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামী মো. জাকারিয়া রুবেলকে ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো বিনাশ্রমে ৬ মাসের বিনাশ্রমক কারাদন্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অন্যান্য ধারায়ও তাকে দন্ডিত করা হয়েছে।

অপর আসামী রুবেল, মো. কামরুল হক উরফে হাসান ও আতিকুর রহমান লাভলুদের বিরুদ্ধে আদালতে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এপিপি অ্যাডভোকেট এসএম পারভীন ও স্টেট ডিফেন্স অ্যাডভোকেট ফারজানা হাবিব চৌধুরী।

Share





Related News

Comments are Closed