Main Menu

২৯৮টি আসনের প্রার্থী নির্ধারণ করে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে জামায়াতে ইসলামী

Manual4 Ad Code

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: গাজীপুর-৬ ও নরসিংদী-৫ আসন ছাড়া জাতীয় সংসদের বাকি ২৯৮টি আসনের প্রার্থী নির্ধারণ করে প্রায় চার মাস আগেই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বর্তমানে দলটি কেন্দ্রভিত্তিক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে ব্যস্ত রয়েছে। এর অংশ হিসেবে পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

জামায়াতের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

দলীয় সূত্র জানায়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের মূল লক্ষ্য ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনায় ন্যায় ও সমতাভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন’। এই লক্ষ্য সামনে রেখে দলটি পুরোদমে নির্বাচনী তৎপরতায় নেমেছে।

তবে জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন ও নির্বাচনের পদ্ধতি (সংখ্যানুপাতিক বা পিআর) নিয়ে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতবিরোধ রয়ে গেছে। ইতিমধ্যে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ ছয়টি দল অভিন্ন দাবিতে মাঠের কর্মসূচি শুরু করেছে। এ কারণেই নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

২৯৮ আসনে প্রার্থী নির্ধারণ;

Manual2 Ad Code

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের ভোট এবং কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের অনুমোদনের মাধ্যমে ২৯৮টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে জামায়াত। তবে এ তালিকা পুরোপুরি স্থায়ী নয়। সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা হলে কিছু আসনে প্রার্থী প্রত্যাহার করা হতে পারে।

অতীতে জামায়াতের রাজনীতিতে প্রবীণ নেতৃত্বের আধিপত্য থাকলেও এবার দলটি ৩৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী তরুণ নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বিতর্ক এড়িয়ে নীরবে প্রচার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা এবং স্থানীয় উন্নয়নকেন্দ্রিক প্রতিশ্রুতিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা–আখাউড়া) আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন,

‘একসময় আমরাই সভা করতাম, মানুষ আসত না। এখন গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠকে মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি।’

এলাকায় বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা, দুস্থদের সহায়তা, মসজিদে মুসল্লিদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগ জোরদার করছেন জামায়াত প্রার্থীরা।

আমিরসহ নির্বাহী পরিষদের ১৫ জন প্রার্থী

দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের ২০ সদস্যের মধ্যে ১৫ জনই আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তাঁদের মধ্যে আছেন-

আমির ডা. শফিকুর রহমান (ঢাকা-১৫)

Manual2 Ad Code

সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার (খুলনা-৫)

নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান (রাজশাহী-১)

এ.টি.এম. আজহারুল ইসলাম (রংপুর-২)

সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের (কুমিল্লা-১১)

সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান (সিরাজগঞ্জ-৪)

এ.এইচ.এম. হামিদুর রহমান আযাদ (কক্সবাজার-২)

প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ (ময়মনসিংহ-৫)

ইজ্জত উল্লাহ (সাতক্ষীরা-১)

সাইফুল আলম খান মিলন (ঢাকা-১২)

নুরুল ইসলাম বুলবুল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩)

মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন (সিলেট-৬)

মুহাম্মদ মোবারক হোসাইন (ঢাকা-১৩)

মোয়াযযম হোসাইন হেলাল (বরিশাল-৫)

Manual4 Ad Code

অধ্যক্ষ সাহাবুদ্দিন (বগুড়া-১)

আলোচিত প্রার্থীরা

ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আলোচিত প্রার্থী হয়েছেন।
তাঁদের মধ্যে রয়েছেন-

শফিকুল ইসলাম মাসুদ (পটুয়াখালী-২)

শিশির মনির (সুনামগঞ্জ-২)

মুহাম্মদ রেজাউল করিম (লক্ষ্মীপুর-৩)

দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী (ঠাকুরগাঁও-১)

দণ্ডিত নেতাদের সন্তানেরাও প্রার্থী

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত জামায়াত নেতাদের সন্তানদের মধ্য থেকেও কয়েকজন প্রার্থী হচ্ছেন।

নাজিবুর রহমান মোমিন (পাবনা-১) -মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে

মাসুদ সাঈদী (পিরোজপুর-১) – দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছোট ছেলে

শামীম সাঈদী (পিরোজপুর-২) – বড় ছেলে

Manual1 Ad Code

মীর আহমদ বিন আরমান (ঢাকা-১৪) – মীর কাসেম আলীর ছেলে

গাজীপুর-৬ ও নরসিংদী-৫ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি

সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে গাজীপুরে একটি নতুন আসন (গাজীপুর-৬) যুক্ত হয়েছে। এ আসন এবং নরসিংদী-৫ আসনের প্রার্থী এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খুব শিগগিরই এ দুটি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।

অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ

জামায়াতের অভ্যন্তরে কিছু আসনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

পাবনা-৫ আসনে মনোনীত প্রার্থী ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় পর্যায়ে আপত্তি উঠেছে।

ময়মনসিংহ-৬ আসনে কামরুল হাসান মিলনকে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষোভ হয়।

চট্টগ্রাম-১৫ আসনে শাহজাহান চৌধুরীর প্রার্থিতা নিয়েও আপত্তি রয়েছে।

দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছে, প্রার্থী পরিবর্তনের কোনো নজির স্থাপন করা হবে না।

ভোটের মাঠে আশাবাদী জামায়াত

দলের অভ্যন্তরীণ জরিপ অনুযায়ী, রংপুর, খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি আসনে জামায়াত শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারবে বলে আশা করছে।

সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। আগের অভিজ্ঞতা তাদের হতাশ করেছে। এবার জনগণ জামায়াতকে বিকল্প হিসেবে দেখছে। আমরা সেই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত।’

১৯৯৬ সালের পর এককভাবে নির্বাচন করেনি জামায়াত। এবার ইসলামপন্থী অন্যান্য দল, বিশেষ করে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে নির্বাচনী জোট গঠনের আলোচনা চলছে। তবে এককভাবে অংশগ্রহণের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।

Share





Related News

Comments are Closed

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code