সিলেটে সুরমা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে স্কুল, মসজিদ, বাড়িঘর
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: কোনোভাবেই থামছে না সুরমা নদীর ভাঙন। একের পর এক ভাঙনে বিলীন হচ্ছে শহর বন্দর আর গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। ভয়াল ভাঙনের কবলে পড়ে একদিকে যেমন বসতি ছোট হয়ে আসছে তেমনি ঐতিহাসিক স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বাজার তলিয়ে যাচ্ছে। বারবার পত্রিকায় লেখালেখি আর আবেদন নিবেদন করা হলেও ঘুম ভাঙছে না সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের।
সরেজমিন নদী ভাঙ্গনের যে ভয়াল চিত্র দেখা গেছে তাতে রীতিমতো শংকিত হয়ে উঠেছেন নদী তীরবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা।
সুরমা নদীর ভাঙ্গনের চিত্র সরেজমিনে দেখতে গেলে বিভিন্ন এলাকার লোকজন তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। সিলেট নগরের সুরমা নদীর কলাপাড়া অংশে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে হিয়াবরণ মোল্লাপাড়া পয়েন্টের বাঁকে ভয়ানক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সিসিকের তৈরি করা একটি ব্রিজ নদীর পাড়ের সড়কে চরম হুমকির মুখে পড়েছে। নদীর পাড়ে অবস্থিত মাজারটিও ক্রমান্বয়ে ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কবর তলিয়ে গেছে।
এলাকাবাসী হলুদ রঙের পতাকা টানিয়ে রেখেছেন ভাঙ্গনের স্থানে। এভাবে সুরমা নদীর দুইপারের একাধিক স্থানে ভাঙ্গন দেখা গেছে।
এই নদীর গোলাপগঞ্জের অংশে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। বাঘা ইনিয়নের খালোপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ২০/২৫টি পরিবার ভিটাচ্যুত হয়েছে এই ভাঙ্গনের কারণে। তাদের অনেকের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানান এই এলাকার যুবক জিলাল আহমদ। তিনি জানান নদীর পাড়ে তাদের ঘর ছিলো। সেটা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় রাস্তার উত্তর পারে এসে তাদেরকে বসতি স্থাপন করতে হয়েছে। একই ইউনিয়নের রুস্তমপুর, হাতিমনগর এলাকায় এখনও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, হাতিমনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখ অংশ দেবে গেছে নদীতে। স্কুলের সামনে শহীদ মিনার ছিলো, সেটিও বিলীন হয়েছে নদীতে। এখন খেলার মাঠ আর স্কুলের অনিন্দ সুন্দর ভবনটি তলিয়ে যাবার আশংকা দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক শুভ্র দাস জানান, এখানে তারা চরম হুমকীতে। বিশেষ করে ১৯০১ সালে প্রতিষ্টিত এ বিদ্যালয়ের সামনের যে মাঠ রয়েছে সেটি এখন চরম ঝুঁকিরমধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে শিশুরা যখন খেলাধুলা করে তখন তাদের সব সময় চোখে চোখে রাখতে হয়। কখন জানি নদীতে পড়ে যায় শিশুরা। তিনি জানান বার বার লেখা লেখি হয়েছে। কোনো ফল মিলছে না।
এই স্কুলের পাশেই প্রায় তিন’শ বছরের পুরনো একটি মসজিদ রয়েছে। যার নাম হাতিমনগর রুস্তমপুর পুরাতন জামে মসজিদ। সেখানে কথা হয় গ্রামের সমাজকর্মী কলিম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা জ্ঞান হওয়ার পর থেকে শুনছি এ মসজিদটি অনেক পুরনো। বয়স তিন-চারশ বছর হতে পারে। কেউ কেউ এর অধিকও বলে থাকেন। তিনি জানান, তিন/চারমাস আগে হঠাৎ একদিন মসজিদের অর্ধেক অংশ ভেঙে নদীতে চলে যায়। ফলে এখানে মসজিদের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে সকালে সেখানে মক্তবের পড়া শেখেন শিশুরা। ঝুঁকিপূর্ণ এই মসজিদে শিশুদের পাঠদান নিয়েও শংকায় রয়েছেন এলাকাবাসী।
এসব ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না- বলে জানান নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তবে পাউবো’র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায় তারা সম্প্রতি সুরমা নদীর অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রতিবেদন ও সুপারিশ পাঠিয়েছেন। ধাপে ধাপে ভাঙন রোধে কাজ হবে।
Related News
বিশ্বনাথে চুরি হওয়া ৬টি অটোরিকশা উদ্ধার, আটক ১
Manual4 Ad Code বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেটের বিশ্বনাথে চুরি হওয়া অটোরিকশার চেহারা পরিবর্তনের ওয়ার্কশপে অভিযানRead More
সিলেট-৪ আসনে আব্দুল হাকিম চৌধুরীর সমর্থনে মশাল মিছিল
Manual1 Ad Code বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর)Read More



Comments are Closed