হাওর অঞ্চলে প্রোটিন সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৯৬ এর বাম্পার ফলন

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় প্রথমবারের মতো উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান-৯৬ এর চাষ করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে নতুন এ জাতের ধান চাষ করে ব্যাপক ফলন পাওয়া গেছে। বীজ সংরক্ষণের মাধ্যমে আগামিতে তা পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার বালিজুড়ি গ্রামের কৃষক জুবায়ের আহমদ এর চার বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে উদ্ভাবিত নতুন জাতের উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান৯৬ এর চাষ করা হয়েছে।
পরীক্ষামূলকভাবে এ জাতের ধান চাষের জন্য জুবায়ের আহমদকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এতে উচ্চ ফলনশীল অন্য জাতের ধানের চেয়ে ফলন বেশি হয়েছে। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাইও কম হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ব্রি ধান৯৬ নতুন জাতের একটি উচ্চ ফলনশীল ধান। এটির ফলন অন্য ধানের চেয়ে বেশি। এ জাতের ধানের ভাত খেতে সুস্বাদু।
উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ ধান এটি। অন্য যেকোনো জাতের ধানের চেয়ে এতে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। রান্নার পর ভাত কিছুটা লম্বাও হয়।
এ জাতের ধান গাছ আকারে খাটো ও এর গোড়া শক্ত হয়ে থাকে। একারণে সহজে হেলে না পড়ার কারণে যান্ত্রিকভাবে ফসল কর্তনের জন্যও বেশ উপযোগী। এটির রং সোনালী। যাকে স্বর্ণা টাইপও বলা যেতে পারে। এ ধানের জীবনকাল ১৪০-১৪৫দিন। পূর্ণ বয়স্ক একটি গাছের গড় উচ্চতা ৮৭সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। প্রতি হেক্টরে গড়ে এর সাত টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে ফলন আরও বাড়তে পারে।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে সরিষা-বোরো-রোপা আমন শস্য বিন্যাস প্রোগ্রামের আওতায় এ উপজেলায় চার বিঘা জমিতে এর আবাদ করা হয়েছে। এবছর বীজ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। আগামিতে পুরো উপজেলায় এর চাষ স¤প্রসারিত হবে।
উপজেলার বালিজুড়ি গ্রামের কৃষক জুবায়ের আহমদ চার বিঘা জমিতে এ জাতের ধানের আবাদ করেছেন। চার বিঘার মধ্যে প্রায় জমির ধানই কর্তন করা হয়েছে। এতে বিঘা প্রতি ২৩ মণ করে ধান পেয়েছেন তারা। যা অন্য উচ্চ ফলনশীল জাতের চেয়ে বেশি। আগামিতে তারা ব্যাপক হারে এর চাষাবাদ করবেন বলে জানিয়েছেন।
কৃষক জুবায়ের বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে নতুন জাতের ব্রি ধান-৯৬ এর চাষ করেছি। এতে রোগ-বালাই অনেক কম হয়েছে। তাই ফলনও অনেক বেশি পেয়েছি।
তিনি বলেন, গত বছর ব্রি ধান-২৮ এর চাষ করেছিলাম। সেটিতে বিঘা প্রতি ১৮-২০মণ ধান পাওয়া গেছে। এবছর ব্রি ধান-৯৬ এর চাষ করেছি। ফলনও বাম্পার হয়েছে। বিঘা প্রতি ২৩মণ ধান পেয়েছি। যা অন্য জাতের ধানের চেয়ে বেশি। তাছাড়া এ জাতের ধানের ভাত রান্না করে খেয়েছি। স্বাদও ভালো লেগেছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে উদ্ভাবিত নতুন জাতের উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান-৯৬ এ উপজেলায় প্রথমবার চাষ করা হয়েছে। বালিজুড়ি গ্রামের কৃষককে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে এ জাতের ধানের আবাদ করানো হয়েছে। এতে বেশ ফলন হয়েছে। আগামিতে এর আবাদ আরও বাড়বে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাসান উদ দৌলা বলেন, অন্য যেকোনো জাতের ধানের চেয়ে এ ধানে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। এ ধানের ভাত খেয়ে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এটির ফলনও বেশি। এবছর স্বল্প পরিমাণে এর আবাদের মাধ্যমে বীজ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি
Related News

পঞ্চগড়ে সুপারী বাগান করে লাভবান অনেক কৃষক
মোঃ সফিকুল আলম দোলন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি: বাঙ্গালী ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে পান-সুপারী। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলেরRead More

পঞ্চগড়ে মরিচের বাম্পার ফলন, খুশি চাষিরা
মো. সফিকুল আলম দোলন, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় চলতি মৌসুমে মরিচের বাম্পার ফলনRead More
Comments are Closed