গোয়াইনঘাটে উৎপাদিত নাগা মরিচ যাচ্ছে বিদেশে
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক : বিদেশে যাচ্ছে সিলেটের গোয়াইনঘাটের উৎপাদিত নাগা মরিচ। সিলেটের হাটবাজারের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি হওয়ার কারণে গোয়াইনঘাটের নাগা মরিচের চাহিদাও বেড়েছে। উৎপাদনস্হল হতেই পাইকাররা এসে নিয়ে যাচ্ছেন এখানকার নাগা মরিচ। গন্ধ স্বাদ আর ঝালের কারণে সিলেটি ভাষাভাষীর মানুষের কাছে নাগা মরিচ সব সময়ই আকর্ষনীয় ও মুখরোচক খাদ্যপ্রত্য। সিলেটের হাটবাজার হয়ে বিদেশে যায় গোয়াইনঘাটের উৎপাদিত নাগা মরিচ।
গোয়াইনঘাটের আলীরগাও ইউনিয়নের খাস হাওর সোনাপুর গ্রামটি যেন নাগা মরিচের অপার ভান্ডার। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ব্যাপকহারে নাগা মরিচের চাষাবাদ হয়েছে এখানে। হাওর আর হিদাইরখাল নদীর তীরের জমিগুলোতে সবুজের সমারোহ। মঙ্গলবার দুপুরে খাস হাওর সোনাপুর সরজমিন পরিদর্শন কালে এমন চিত্র চোখে পড়ে। গ্রামের সফল কৃষক কাতার প্রবাস ফেরত ফখরুল ইসলাম। প্রবাস জীবন ভালো না হওয়ায় ২০০৯ সালে দেশে এসে প্রতি বছরই করছেন নাগা মরিচ চাষ। তিনি জানালেন এবার ৭ বিঘা জমিতে নাগা মরিচ চাষ ও ৪ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেন।
আবহাওয়া অনুকুলে ও রোগবালাই কম ছড়ানোর কারণে এবারও বাম্পার ফলন হয়েছে উভয় ফসলের। এখনও নাগা মরিচের গাছ সমুহে প্রচুর ফুল ফল আছে। মাঠে লতানো তরমুজ গাছগুলোতে শত শত ছোট বড় তরমুজ। ২০ থেকে ২২ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা নাগা মরিচ বর্তমানে বিক্রি করছেন ৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন,সব মিলিয়ে আমার নাগা মরিচ ক্ষেতে খরচ হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা এবং উৎপাদিত নাগা মরিচ থেকে ইতিপূর্বে ইনকাম ( বিক্রি) হয়েছে ৭ লক্ষ টাকারও বেশি নাগা মরিচ। আসন্ন বৈশাখ মাস পর্যন্ত এমনকি জৈষ্ঠ্যমাসেও যদি আবহাওয়া উপযোগী থাকে তাহলে আরও ৮-৯ লক্ষ টাকার বিক্রি আসবে। সফল এ কৃষক জানান প্রতি বছর নূন্যতম ১৫-১৬ লক্ষ টাকা নাগা মরিচ থেকে ইনকাম করে থাকেন তিনি। তার ৪ বিঘা তরমুজ ক্ষেতে ব্যয় হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা।
এখনো পর্যন্ত রূপায়িত ক্ষেতের তরমুজ থেকে ইনকাম এসেছে সরজমিন পরিদর্শনকালে তিনি কৃষকদের প্রতি কৃষি বিভাগের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার দাবি জানান। কৃষি বিভাগের সময় মতো সঠিক পরামর্শ পেলে আমরা হয়তো আরও ভালো করতে পারতাম।ব্যক্তিগত জীবনে ২ ছেলে ১ মেয়ের জনক এ কৃষক তার উৎপাদিত নাগা মরিচ, তরমুজ বিক্রি করে ১৬ লক্ষ টাকা খরচ করে নতুন বাড়ি ঘর করেছেন। তার বাড়িটি ঘুরে দেখেলে মনে হবে যেন পুরোটাই একটি কৃষি খামার।
কথা হলে গোয়াইনঘাট উপজেলার ৫নং পূর্ব আলীরগাও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান,খাস হাওর সোনাপুরসহ আশপাশের কৃষকরা অত্যান্ত পরিশ্রমি কর্মঠ। তাদের উৎপাদিত কৃষিপন্য স্হানীয় হাটবাজার হয়ে জেলা এমনকি বিদেশেও যায়।
বিশেষ করে নাগা মরিচ চাষে সোনাপুরের কৃষকরা বরাবরই সফলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। তাদের উৎপাদিত নাগা মরিচ মধ্য প্রাচ্য,ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
কৃষকসহ খাস হাওর সোনাপুর এলাকার মানুষজনসহ কৃষকদের সহজতর যোগাযোগ ব্যবস্হার জন্য একটি গ্রামীন সড়ক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। একাধিক কালভার্টসহ সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন হয়ে গেলে এখানকার কৃষকরা ব্যাপকহারে উপকৃত হবেন।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ কর্মকর্তা দেবাশীষ কর জানান,গোয়াইনঘাটের উৎপাদিত নাগা মরিচসহ কৃষি পন্য সামগ্রি স্হানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে যাচ্ছে এটা আমাদের কৃষি বিভাগের জন্য একটি ইতিবাচক রিপোর্ট। কৃষকদের যে কোনো পরামর্শ সহযোগিতা দানে উপজেলা কৃষি বিভাগ তাদের পাশে রয়েছে।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন,কৃষকদের প্রতি সরকার সব সময়ই আন্তরিক। তাদের প্রতি সরকার উদার ও ইতিবাচক মনোভাব থাকায় কৃষিতে এমন সফলতা ফুটে উঠছে। তাদের জন্য সরকারের নানামুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। যে কোন প্রয়োজনে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সেবাপ্রদানে গোয়াইনঘাট প্রশাসন সব সময় কৃষকের পাশে থাকবে।
Related News
গত দুইদিনের বৃষ্টিতে সতেজতা ফিরেছে আমনক্ষেতে
মো. সফিকুল আলম দোলন, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি: জেলায় ভাদ্র মাসের শেষে ও আশির্^নের শুরুতে বৃষ্টিRead More
সিলেটে কৃষি ক্ষেত্রে এআইপি সম্মাননা ২০২১ পেলেন মোঃ সিরাজুল ইসলাম
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: কৃষি ক্ষেত্রে সিলেট বিভাগ থেকে এক মাত্র এআইপি সম্মাননা ২০২১ পেলেন ফলচাষীRead More
Comments are Closed