Main Menu

পশুরহাট ও কোরবানির বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ২৩ নির্দেশনা

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: আসন্ন ঈদুল আজহায় এক কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে দেশে।

সরকারি তথ্য মতে, এ সংখ্যা গত বছর কোরবানি হওয়া পশুর তুলনায় প্রায় ২৫ লাখ বেশি। যার পুরোটাই দেশীয় উৎস থেকে চাহিদা মেটানো হবে। করোনার ফলে ভারত ও মিয়ানমারসহ বাইরের কোনো পশু দেশে প্রবেশ করতে পারবে না।

স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্য অনুসারে, এ বছর দুই সিটি কর্পোরেশনের আওতায় প্রায় ২৩টি অস্থায়ী ও একটি স্থায়ী হাটে পশু কেনাবেচা হবে। তবে, করোনাভাইরাস মহামারিতে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সংক্রমণ ও মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে।

এ বছর কোরবানির পশুর হাটে ও পশু কোরবানির সময়ে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুসরণ করতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ২৩ নির্দেশনা। প্রতিটি হাট কমিটিকে এসব কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হাট পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে দেওয়া এসব নির্দেশনায় বলা হয়, পশুর হাট বসানোর জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা নির্বাচন করতে হবে। কোনো অবস্থায় বদ্ধ জায়গায় হাট বসানো যাবে না।

হাট বসানোর আগে ইজারাদারকে মাস্ক, সাবান, স্যানিটাইজারসহ জীবাণুমুক্ত করণ সামগ্রী সংগ্রহ করতে হবে। পরিষ্কার পানি সরবরাহ ও হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল সাবান বা সাধারণ সাবানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিরাপদ বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

পশুর হাটের সঙ্গে জড়িত সব কর্মকর্তা, কর্মচারী ও হাট কমিটির সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। হাট কমিটির সকলের ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করা এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

হাটের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দিতে হবে। জনস্বাস্থ্যের বিষয় যেমন মাস্কের সঠিক ব্যবহার, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার, শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা, হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্ত করণ- এ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।

স্বাস্থ্যবিধি সমূহ সার্বক্ষণিক মাইকে প্রচার করতে হবে। মাস্ক ছাড়া কোনো ক্রেতা-বিক্রেতা হাটের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। হাট কর্তৃপক্ষ চাইলে বিনামূল্যে মাস্ক সরবরাহ বা এর মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।

প্রতিটি হাটে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে ডিজিটাল পর্দায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এসব নির্দেশনা প্রচার করতে হবে। পশুর হাটে প্রবেশের জন্য এ বছর প্রবেশপথ ও বাহির পথ আলাদাভাবে নির্দিষ্ট করতে হবে।

নির্দেশনা অনুসারে, পর্যাপ্ত পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পশুর বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে। কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি করা যাবে না। সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা। ইউনিয়ন পরিষদকে প্রতিটি হাটে এক বা একাধিক ভ্রাম্যমাণ স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টিম গঠন করে সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

মেডিকেল টিমের কাছে শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য ডিজিটাল থার্মোমিটার রাখতে হবে, যাতে প্রয়োজনে হাটে আসা সন্দেহজনক করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করা যায়। এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে আলাদা করে রাখার জন্য প্রতিটি হাটে একটি আইসোলেশন ইউনিট রাখার কথা বলা হয় নির্দেশনায়।

এতে বলা হয়, একটি পশু থেকে আরেকটা পশু এমনভাবে রাখতে হবে যেন ক্রেতারা কমপক্ষে তিন ফুট বা দুই হাত দূরত্ব বজায় রেখে পশু ক্রয় করতে পারেন। ভিড় এড়াতে মূল্য পরিশোধ ও হাসিল আদায় কাউন্টারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। মূল্য পরিশোধের সময় সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়ানোর সময়কাল যেন কম হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

লাইনে ৩ ফুট বা কমপক্ষে ২ হাত দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে রেখা টেনে বা গোল চিহ্ন দিয়ে দিতে হবে। সকল পশু একত্রে হাটে প্রবেশ না করিয়ে হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী পশু প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে বলে নির্দেশনায় জানানো হয়।

হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করা সম্ভব, এমন সংখ্যক ক্রেতাকে হাটে প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে। অবশিষ্ট ক্রেতারা হাটের বাইরে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে অপেক্ষা করবেন। ১ টি পশু ক্রয়ের জন্য ১ বা ২ জনের বেশি ক্রেতা হাটে প্রবেশে করবেন না।

সেক্ষেত্রে, অনলাইনে পশু কেনাবেচার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করা যেতে পারে। এসব বিধিনিষেধ মেনে চলতে, স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সমন্বয় করে সকল কাজ নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নির্দেশনায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য দেয়া আলাদা ছয়টি নির্দেশনায় বলা হয়, পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা সকলকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। সর্দি, কাশি, জ্বর বা শ্বাসকষ্ট নিয়ে কেউ হাটে প্রবেশ করবেন না। শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থরা হাটে আসতে পারবেন না।

পশুরহাটে প্রবেশের আগে ও বের হবার সময় তরল বা সাধারণ সাবান এবং পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। মূল্য প্রদান এবং হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় কমপক্ষে ৩ ফুট বা দুই হাত দূরত্ব বজায় রেখে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়াতে হবে। হাট কমিটি, স্থানীয় প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সকল নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

এদিকে, পশু কোরবানির ক্ষেত্রেও দেয়া হয় দুইটি নির্দেশনা। এর মধ্যে রয়েছে, পশু কোরবানির সময় প্রয়োজনের অধিক লোকজন একত্রিত হবেন না এবং কোরবানির মাংস সংগ্রহের জন্য একত্রে অধিক লোক চলাফেরা করতে পারবেন না। পশুর চামড়া দ্রুত অপসারণ করতে হবে এবং কোরবানির নির্দিষ্ট স্থানটি ব্লিচিং পাউডারের দ্রবণ দিয়ে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।

Share





Related News

Comments are Closed