Main Menu

সিলেট সেনানীবাসে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপন

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে যথাযথ মর্যাদা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো সিলেট সেনানীবাসে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস।

সিলেট এরিয়া ও ১৭ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে দিবসটি উদযাপন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে ভোর থেকেই সিলেট সেনানিবাসে জড়ো হন সাবেক ও বর্তমান বিভিন্ন পর্যায়ের সৈনিক, বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা।

১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সিলেট এরিয়া কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান শুরুতেই অতিথিদের নিয়ে শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা ও সাদা-নীল রংয়ের বেলুন উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করেন।

র‌্যালী পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বলেন, বিশ্বব্যাপী ২০০৩ সাল হতে ২৯ মে তারিখে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা দিবস পালন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও পুলিশের যে সকল সদস্য মিশনে দায়িত্ব পালনকালে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ কিংবা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের সকলের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।

তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ১৯৪৮ সাল হতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও বাংলাদেশ ১৯৮৮ সালের আগষ্ট মাস হতে সম্পৃক্ত হয়। প্রথমে ইউএন ইরান-ইরাক মিলিটারী অবজারভেশন গ্রুপ (ইউনিমগ) এর আওতায় আন্তর্জাতিক শান্তি প্রয়াসের সাথে সম্পৃক্ত হয়।

শান্তিরক্ষার এই সুমহান দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের সর্বমোট ১৬৮ জন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। ২৭২ জন সদস্য পঙ্গুত্ব বরণ করেন। জীবন উৎসর্গকারীদের সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে ২০২৩ সালের ২৫ মে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে, ২০২২ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় ৩৯টি দেশের নিহত ১০৩ জন শান্তিরক্ষীকে তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য “দ্যাগ হ্যামারশোল্ড” পদক প্রদান করা হয়। এই ১০৩ জন শান্তিরক্ষীর মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫ জন আত্মোৎসর্গকারী সেনাসদস্য এ পদক লাভ করেন।

বিশ্ব শান্তি রক্ষায় অনবদ্য অবদানের কথা স্মরণ করে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও দিবসটি বিশেষ গুরুত্বের সাথে উদযাপন করা হয়। আজকের দিনটি উদযাপনে জাতিসংঘ “The Future of Peacekeeping” বাক্যটিকে স্লোগান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী ১৯৮৮ সাল থেকে, নৌ ও বিমান বাহিনী ১৯৯৩ সাল এবং পুলিশ বাহিনী ১৯৮৯ সাল থেকে শান্তিরক্ষা মিশনে বিচক্ষণতার সাথে অবদান রেখে যাচ্ছে।

এছাড়া বাংলাদশে সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনী বিশ্বের ৪৩টি স্থানে মোট ৬৩টি সফল শান্তিরক্ষা মিশন সম্পন্ন করেছে। এ পর্যন্ত সেনা ও পুলিশসহ মোট ২ লাখ ৫৫৮ জন শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদান রেখেছেন। বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে মোট ১০টি দেশে কিংবা স্থানে মোট ৫ হাজার ৮১৮ জন শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন। এ পর্যন্ত সর্বমোট ৩ হাজার ৬৪৫ জন নারী সদস্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়েছেন। বর্তমানে সেনাবাহিনীর ৩৫৮ জন, নৌবাহিনীর ৮ জন, বিমান বাহিনীর ৭ জন এবং ৭১ জন নারী পুলিশসহ সর্বমোট ৪৪৪ জন নারী শান্তিরক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন।

বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ৩৭ বছর ধরে শৃংখলা, সততা, বিশ্ব শান্তি রক্ষায় আদর্শ হিসাবে স্বীকৃত। বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আজ আমরা বিশ্বের শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের ক্ষেত্রে অন্যতম বৃহৎ অংশীদারি একটি দেশ। আমরা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ও সদা প্রস্তুত। ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Share





Related News

Comments are Closed