সিলেটে অষ্টাদশ কেমুসাস বইমেলার উদ্বোধন

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেটে উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের (কেমুসাস) উদ্যোগে ১৬ দিনব্যাপী অষ্টাদশ কেমুসাস বইমেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাবেক সভাপতি ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এ এইচ সা’দাত খান-কে নিবেদিত বইমেলা রবিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল চারটায় নগরের দরগাহ গেইটের কেমুসাস প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক কবি জাকির আবু জাফর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বইয়ের মাঝে মহাকাল ঘুমিয়ে থাকে। বই অসংখ্য শতাব্দীকে ধারণ করে। লেখকরা বইয়ের মাধ্যমে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা ইতিহাস-ঐতিহ্য, সভ্যতা-সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন। এই বই মহাকাল এবং মন্ষ্যুত্বের মধ্যে যোগসূত্র ঘটায়। তাই একজন লেখককে তার লেখার চেয়ে উন্নত মানুষ হতে হবে। এজন্য বইয়ের সাথে সংযোগ ঘটানোর বিকল্প নেই।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহসভাপতি সাংবাদিক আফতাব চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও বইমেলা উপ-কমিটির সদস্য সচিব কামরুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ প্রফেসর নন্দলাল শর্মা।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সেলিম আউয়াল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী, সিলেট লেখিকা সংঘের সাধারণ সম্পাদক ইশরাক জাহান জেলি এবং স্বাগত বক্তব্য দেন মাসিক আল ইসলাহ সম্পাদক ও বইমেলা উপকমিটির আহবায়ক আহমদ মাহবুব ফেরদৌস। শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন এডভোকেট ওমর ফারুক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন। বইমেলায় ঢাকা এবং সিলেটের ২৩টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নেয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সংসদের কোষাধ্যক্ষ ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত, কার্যকরী পরিষদ সদস্য জাহেদুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সদস্য শফিকুর রহমান সদস্য, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি মুহিত চৌধুরী, দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সিলেট ব্যুরো প্রধান আব্দুল কাদের তাপাদার, আল ইসলাহ’র সাবেক সম্পাদক কবি নাজমুল আনসারী, ভ্রমণকাহিনী লেখক মোয়াজ আফসার, কবি সেনুয়ারা আক্তার চিনু, কবি আমিনা শহীদ চৌধুরী মান্না, বইমেলা উপকমিটির সদস্য এডভোকেট জুনেদ আহমদ ও গল্পকার মিনহাজ ফয়সল, কবি ও সংগঠক হোসনে আরা কলি, কবি কামাল আহমদ, দোআঁশ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী লুৎফুর রহমান তোফায়েল, কবি নূর মোহাম্মদ চৌধুরী, কবি সাজ্জাদ আহমদ সাজু, গল্পকার তাসলিমা খানম বীথি, সিলেট সেন্ট্রাল কলেজের প্রভাষক আবদুল কাদির জীবন, কবি কুবাদ বখত চৌধুরী রুবেল, কবি ও সাহিত্য সমালোচক আব্দুল বাছিত, সৈয়দ লিসান প্রমুখ।
অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ বলেন, বইমেলা বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষের প্রাণের মিলনমেলা। নতুন প্রজন্মকে বইপাঠের প্রতি মনোযোগী করে তোলার জন্যই বইমেলার আয়োজন। নতুন প্রজন্ম যাতে বইপাঠে আগ্রহী হয়, সেই লক্ষ্যেই আমাদেরকে ভূমিকা রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কেমুসাসের সহসভাপতি সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী বলেন, একটি সভ্য ও মার্জিত জাতি গঠনে বইপাঠের বিকল্প নেই। যে জাতি যতবেশি বই পড়ে, তারা তত বেশি নিজেদের আলোকিত করতে পারে। আলোকিত সমাজ গঠনে বইপাঠ প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখে। কেমুসাস ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বইমেলার মাধ্যমে সেই সুযোগ করে দিয়েছে।
বইমেলা উপলক্ষে সাহিত্য সংসদ গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২ ডিসেম্বর সোমবার বিকেল ৩টায় চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা (বিশেষ এবং ক গ্রুপ), সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রকাশনা অনুষ্ঠান, ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ৩টায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা (খ, গ ও ঘ গ্রুপ), সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রকাশনা অনুষ্ঠান, ৪ ডিসেম্বর বুধবার বিকাল ৩টায় হাতের লেখা প্রতিযোগিতা (ক ও খ গ্রুপ) এবং গান প্রতিযোগিতা (সব গ্রুপ), ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় সাহিত্য আসর, ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টায় আবৃত্তি প্রতিযোগিতা (বিশেষ এবং ক গ্রুপ), সন্ধ্যা ৬টা থেকে আলোচনা সভা : ছড়াসাহিত্য, ছড়া পাঠের আসর, ৭ ডিসেম্বর শনিবার আবৃত্তি প্রতিযোগিতা (খ, গ ও বিশেষ গ্রুপ), সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রকাশনা অনুষ্ঠান, ৮ ডিসেম্বর রবিবার বিকাল ৩টায় ক্যালিগ্রাফি প্রতিযোগিতা (ক ও খ গ্রুপ), ৯ ডিসেম্বর সোমবার উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা (ক ও খ গ্রুপ), ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ক্বিরাত প্রতিযোগিতা (বিশেষ, ক ও খ গ্রুপ), ১১ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় ‘লিটলম্যাগ আন্দোলন’ শীর্ষক আলোচনা সভা, ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় কেমুসাস সাহিত্য আসর, ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রকাশনা অনুষ্ঠান, ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, ১৫ ডিসেম্বর রবিবার বিকাল ৩টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, সমাপনী, পুরস্কার ও সার্টিফিকেট প্রদান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
Related News

৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি বাউল শাহ্ আবদুল করিম লোক উৎসব
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল শাহ্ আবদুল করিমের ১০৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারওRead More

কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: অবশেষে বাংলাদেশের জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯৭২ সালেরRead More
Comments are Closed