Main Menu

অশ্রুসিক্ত মুনাজাতের মাধ্যমে সম্পন্ন হলো ইসলাহী জোড়

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: বৃটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত ইলহামী ইসলাহী অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর দুইদিন ব্যাপি ইসলাহী জোড় সম্পন্ন হয়েছে।

২৪ নভেম্বর শুক্রবার শেষ রাতে আমীরে আঞ্জুমান হযরত মুফতি রশীদুর রহমান ফারুক বর্ণভী’র (পীর সাহেব বরুণা) আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।

২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শেখবাড়ী জামিয়া ময়দানে শুরু হওয়া দুদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত এ ইসলাহী জোড়ে হাজার হাজার মুসল্লীর সমাগম ঘঠে। এ জোড়ে হেদায়াত ও আত্মশুদ্ধি অর্জন বিষয়ে বয়ান পেশ করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই শতাধিক ওলামা-মাশায়েখ ও ইসলামী স্কলারগণ।

ইসলাহী জোড় থেকে দেশ ও জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত বক্তব্যে আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমীর হযরত মুফতি মুহাম্মদ রশীদুর রহমান ফারুক বর্ণভী বলেন, ‘আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ একটি ইলহামী ইসলাহী অরাজনৈতিক দ্বীনী সংগঠন। দ্বীনবিমুখ মানুষকে দ্বীনের ওপর তুলে আনা ও সাধারণ মুসলিমদেরকে জরুরিয়াতে দ্বীন শিক্ষা দেওয়াই এ সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য। তাই আমি দেশের সর্বস্তরের মুসলিম জনতাকে এই আহ্বান জানাচ্ছি যে, আপনারা নিজের ও পরিবারের ঈমান-আমলের পরিশুদ্ধির জন্য ঘরে ঘরে তালীম তথা দ্বীনি শিক্ষার চর্চা চালু করুন। মসজিদে, কর্মক্ষেত্রে, আবাসস্থলে-দ্বীনি তালীমের চর্চা জারি থাকলে মুসলমানদের ঈমান-আমল সংরক্ষিত থাকবে। কেউ তাঁদেরকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।

এরপর আমীরে আঞ্জুমান ফিলিস্তিনের মজলুম মুসলমানদের প্রতি সমবেনদা জানিয়ে বলেন, ‘পবিত্র মসজিদুল আকসার সউচ্চ অবস্থান আমাদের কাছে অম্লান থাকবে। ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণে ইসরায়েলের বর্বর আচরণ পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।

কোনো ধর্ম বা রাষ্ট্রীয় নীতিমালা এর সমর্থন করে না। তারা শত্রুতামূলক আচরণের মাধ্যমে এর পবিত্রতা ও মর্যাদা বিনষ্ট করছে এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণ করছে। আমরা মহান আল্লাহর কাছে পবিত্র মসজিদুল আকসা, ফিলিস্তিন জাতি ও মুসলিমদের পবিত্র স্থানগুলোর সুরক্ষার জন্য বিনীতভাবে প্রার্থনা করি এবং সারা বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় দোয়া করি।’

দেশের সর্বস্তরের মুসলিম জনতার সহযোগীতা কামনা করে তিনি আরও বলেন, আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। দেশের প্রতিটা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সংগঠনের শাখা কমিটি গঠনের কাজ চলমান। আল্লাহর ওলীদের বরকতমণ্ডিত এ সংগঠনের বিস্তার প্রচারে আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন।

আখেরী মুনাজাতে আমীরে আঞ্জুমান দেশ, জাতি ও বিশ্বের মাজলুম মুসলমাদের কল্যাণ কামনা করে আভেগভরা মুনাজাত করেন। তাঁর মুনাজাতের কথাগুলো চারপাশের হাজারো মুসল্লিকে যেন ছুঁয়ে যাচ্ছিল। আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা চেয়ে অনেকেই অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। আবেগাপ্লুত হাজারো মুসল্লির কণ্ঠে তখন উচ্চারিত হয় ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনি।

দুদিন ব্যাপী বিশাল এ মাহফিলে উপস্থাপনা করেন আঞ্জুমানের মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সবুর, যুগ্ম মহাসচিব হাফিয মাওলানা শেখ সা‘দ আহমদ আমীন বর্ণভী, প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা শাব্বীর আহমদ ফতেহপুরী প্রমুখ।
ইসলাহী জোড় ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও ২২ নভেম্বর বুধবার থেকেই মাহফিলস্থলে মুসল্লিয়ানে কেরামের সমাগম ঘটতে থাকে।

২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বাদ ফজর আমীরে আঞ্জুমানের উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক সূচনা হবার পর থেকে পরদিন শুক্রবার শেষ রাতে আখেরী মুনাজাত পর্যন্ত মোট চৌদ্দটি অধিবেশনে দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় শতাধিক ওলামা-মাশায়েখ বয়ান পেশ করেন। সাত অধিবেশনে ধারাবাহিক সভাপতিত্ব করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখ।

বয়ান করেন- মুফতি জসীম উদ্দিন চট্টগ্রাম, মাওলানা সাইদুর রহমান বর্ণভী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব ঢাকা, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজি ঢাকা, মাওলানা সিবগাতুল্লাহ নূর বি-বাড়িয়া, মাওলানা মুমতাজ উদ্দীন বড়দেশী সিলেট, মাওলানা ওলীউর রহমান বর্ণভী, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম কাসেমী নেত্রকোনা, মাওলানা আব্দুল কাদির বাঘরখালী, মাওলানা শামছুল হক সরাইলী, মাওলানা শাহ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মাওলানা মুসা আল হাফিজ ঢাকা, মাওলানা শেখ সাদ আহমদ আমীন বর্ণভী, মুফতি ফয়জুল্লাহ আশরাফী ঢাকা, মুফতি ওয়াজেদ আলী ঢাকা, মুফতি শামছুল আলম শাহবাজপুরী, মুফতি আবু তাহের জিহাদী ঢাকা, মুফতি আব্দুল্লাহ ফিরোজী ঢাকা, মুফতি মুজিবুর রহমান ফয়জী ঢাকা, মুফতি আব্দুল লতিফ ফারুকী ঢাকা, মুফতী আবুল বারাকাত গাজীপুরী, মাওলানা মাসউদুল করীম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, দুদিন ব্যাপি এ মাহফিলের ১৪টি অধিবেশনের মধ্যে ৭টি ঘিরে ছিল- শেখবাড়ী জামিয়ার ইসলামী মহাসম্মেলন।

Share





Related News

Comments are Closed