Main Menu

সিলেটে চলছে বাস-ট্রাক ধর্মঘট, দুর্ভোগে যাত্রীরা

বৈশাখী নিউজ ২৪ ডটকম: ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সারাদেশের মতো শুক্রবার সকাল থেকে সিলেটেও শুরু হয়েছে বাস-ট্রাক ধর্মঘট। ধর্মঘটের কারনে অন্তহীন দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এছাড়া বাস ও ট্রাক ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে সিলেটের জনজীবন। বাস বন্ধ থাকায় চাপ পড়েছে ট্রেনে। ফলে রেল স্টেশনে দেখা দেয় টিকিটের জন্য হাহাকার।

সারাদেশের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় ধর্মঘট। সিলেট থেকে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। কুমারগাঁও ও কদমতলী টার্মিনাল থেকে কোন দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। ফলে সড়ক চলে যায় ৩ চাকার দখলে। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বেশী ভোগান্তিতে পড়েছে দূরপাল্লার যাত্রীরা। বাধ্য হয়ে অনেকে মাইক্রোবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে চলাচল করেন। অনেক যাত্রীকে বাস টার্মিনালেও বসে সময় কাটাতে দেখা যায় একটি বাসের আশায়। বাস বন্ধ থাকায় তাই যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে বেশী ভাড়া গুণতে হয়। এ নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভের যেন কোন শেষ নেই।

অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শুক্রবার সকাল থেকে কুমারগাঁও এবং দক্ষিণ সুরমার কদমতলী বাস টার্মিনালসহ আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ঢাকা থেকে সিলেটে আসা এক পোশাক ব্যবসায়ী বলেন, শনিবার সকালে ব্যবসায়িক কাজে তাঁর জকিগঞ্জে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস টার্মিনালে এসে জেনেছেন, বাস চলবে না। তিনি মাইক্রোবাসে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে মাইক্রোবাসগুলোতে অনেক বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন এ অবস্থায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কি করবেন, কোথায় যাবেন?

অপর এক পোশাক শ্রমিক সিলেটে এসেছেন টাঙ্গাইল থেকে। তিনি বলেন, ২ দিনের ছুটি নিয়ে সিলেটে শুক্রবার ভোরে এসেছেন মাইক্রোবাস করে। গোয়াইনঘাট যাবার কোন বাস নেই। তাই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তিনি।

তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, ট্রাক-বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশন এবং ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘটে বলা হয়েছে, জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করা না হলে পরবর্তীকালে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, এমনিতেই করোনার কারণে পরিবহন ব্যবসা চরম বিপর্যয়ে। যখন ব্যবসাটি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে তখনই জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমন সময় জ্বলানি তেলের দাম বাড়ানোর ফলে পরিবহন ব্যবসায়ীরা মুখ থুবড়ে পড়বেন।

এদিকে, বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ট্যাংকলরি প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে গত শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে পণ্যপরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ফলে সিলেটে কোনো ট্রাক চলাচল করছে না। এতে পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়েন বিভিন্ন উপজেলা ও প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

তবে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে। ট্রেনগুলো নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে সাধারণ দিনের তুলনায় শুক্রবার সকাল থেকে ট্রেনে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। টিকিটের জন্য যাত্রীদের হাহাকার করতে দেখা যায়। ধর্মঘটের কারনে রেল-স্টেশনে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে অনেকেই টাকা বেশী দিয়ে দালালদের কাছ থেকে টিকিট ক্রয় করেন বলে অভিযোগ করেন।

সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক খলিলুর রহমান বলেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে সবকটি ট্রেন গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে। বাস বন্ধ থাকায় ট্রেনে একটু চাপ পড়েছে। তবে টিকিটের কোন সংকট নেই বলে তিনি জানান।

Share





Related News

Comments are Closed