Main Menu

বিয়ে করলেই নাগরিকত্ব পাবেন যেসব দেশের

Manual6 Ad Code

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: জন্মসূত্রে আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। বর্তমানে বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস বা নাগরিকত্ব পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন অনেকেই। কিন্তু উচ্চশিক্ষা, ভালো চাকরি বা বড় অঙ্কের বিনিয়োগ ছাড়া সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। প্রেম হোক বা বিয়ে, সেটা এখন আর নিজের দেশের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই। অনেকে বিদেশি জীবনসঙ্গীকে বেছে নেন ভালোবাসার টানে, আবার কেউ কেউ বিয়ের মাধ্যমে বৈধভাবে একটি নতুন দেশের নাগরিক হওয়ার সুযোগ খোঁজেন। তবে প্রশ্ন হলো, বিয়ে করে কি আদতে নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব?

যদি বলি সম্ভব? পৃথিবীতে এমন কিছু দেশ আছে, যেসব দেশের নাগরিকদের বিয়ে করলে পেয়ে যাবেন সেই দেশের নাগরিকত্ব। কোনো কোনো দেশে এটি খুব সহজ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়, আবার কোনো দেশে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করলেই মেলে নতুন পাসপোর্ট। চলুন, জানা যাক এমনই কয়েকটি দেশ সম্পর্কে, যেসব দেশ তাদের নাগরিককে বিয়ে করার মাধ্যমে বৈধ উপায়ে নাগরিকত্ব দেয়।

Manual6 Ad Code

ব্রাজিল
বিয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়ার দিক থেকে ব্রাজিল বিশ্বের সবচেয়ে উদার দেশগুলোর একটি। এটি পৃথিবীর পঞ্চম বৃহৎ ও দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় দেশ। যদি আপনি একজন ব্রাজিলের নাগরিককে বিয়ে করেন এবং সেখানে তার সঙ্গে টানা এক বছর বসবাস করেন, তবেই আপনি সেখানে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়া ব্রাজিলে রয়েছে দ্বৈত নাগরিকত্বের অনুমতি। অর্থাৎ ব্রাজিলের নাগরিক হতে গেলে আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে না।

স্পেন
কেবল এক বছরেই দক্ষিণ ইউরোপের সবচেয়ে বড় দেশ স্পেনে আপনি পেতে পারেন নাগরিকত্ব। স্পেনের আইনে বলা আছে, স্প্যানিশ নাগরিককে বিয়ে করলে তার সঙ্গে এক বছরের বসবাসেই আপনি স্পেনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। একবার এই দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে গেলে এর পাশাপাশি আপনি পাবেন লাতিন আমেরিকা, ফিলিপাইন, পর্তুগাল ইত্যাদি দেশের দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা। নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য আপনার স্প্যানিশ ভাষার প্রাথমিক দক্ষতা ও তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান, স্প্যানিশ নাগরিককে বিয়ের বৈধ সনদ ও একসঙ্গে বসবাসের প্রমাণ দেখাতে হবে।

Manual8 Ad Code

ফ্রান্স
ফ্রান্সের নাগরিক হতে হলে আপনাকে কোনো ফরাসি নাগরিককে বিয়ে করে তার সঙ্গে চার বছর ফ্রান্সেই বসবাস করতে হবে। আপনি যদি ফরাসি নাগরিককে ফ্রান্সের বাইরে বিয়ে করেন, তাহলে এই চার বছরের সময়সীমা আরও বাড়তে পারে। একবার ফ্রান্সের নাগরিক হলে আপনি পাবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুবিধা।

Manual6 Ad Code

সার্বিয়া
সার্বিয়ায় বিয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পেতে হলে দেশটির বৈধ নাগরিকের সঙ্গে তিন বছরের বিবাহিত সম্পর্কে থাকতে হবে। এর পাশাপাশি সার্বিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে হবে। তবে অনেক সময় নিয়মগুলো খুব কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয় না, তাই সহজেই পেয়ে যেতে পারেন সার্বিয়ার পাসপোর্ট। জীবনযাপন খরচও তুলনামূলক কম।

পর্তুগাল
আপনি যদি কোনো পর্তুগিজ নাগরিকের সঙ্গে তিন বছর ধরে বিবাহিত সম্পর্কে থাকেন, তাহলেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এতে আপনার পর্তুগালে থাকারও প্রয়োজন নেই। পর্তুগিজ ভাষা ও সংস্কৃতি জানা এ ক্ষেত্রে আপনাকে বাড়তি সুযোগ দিতে পারে।

পোল্যান্ড
পোল্যান্ডের নাগরিককে বিয়ে করলে বিয়ের তিন বছর পর এবং পোল্যান্ডে টানা দুই বছর থাকার পর নাগরিকত্বের আবেদন করা যাবে। নাগরিকত্বের জন্য পোল্যান্ডের ভাষা পরীক্ষাও পাস করতে হয়, এজন্য জানা থাকতে হবে পোলিশ ভাষা। বসবাসের জন্য অন্যতম সুন্দর দেশ হলেও পোল্যান্ড হতে পারে কিছুটা ব্যয়বহুল। কারণ, এখানে থাকতে আপনাকে গুনতে হতে পারে উচ্চ হারে আয়কর। পোল্যান্ডে আয়কর ১৮-৩২ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে।

তুরস্ক
অনেকের কাছেই ‘ড্রিম ডেসটিনেশন’ বা স্বপ্নের গন্তব্য তুরস্ক। অপরূপ তুরস্কে বিয়ের পর তিন বছর একসঙ্গে থাকলেই মেলে নাগরিকত্ব। মজার বিষয় হলো, লাতিন আমেরিকা বা ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো তুরস্কের নাগরিকত্বের জন্য সেই দেশের ভাষা বা সংস্কৃতি জানার প্রয়োজন নেই। তিন বছর একসঙ্গে বৈধভাবে দাম্পত্য জীবন কাটালেই করতে পারবেন নাগরিকত্বের আবেদন। এ ছাড়া তুরস্কের নাগরিক হলে আপনি পাবেন এক বিশেষ সুবিধা। তুরস্কের পাসপোর্ট দিয়ে পৃথিবীর ১১০টিরও বেশি দেশে ভিসা ফ্রি বা ভিসা অন অ্যারাইভাল সুবিধা পাওয়া যায়।

কেপ ভার্ড
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা পশ্চিম আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র কেপ ভার্ড। এটি এমন একটি দেশ, যেখানকার নাগরিককে বিয়ের করার সাথে সাথেই আপনি সেই দেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বৈধভাবে কেপ ভার্ডের নাগরিককে বিয়ে করতে হবে। কাজেই প্রক্রিয়াটি সহজ ও সময় সাশ্রয়ী।

Manual2 Ad Code

সুইজারল্যান্ড
সুইজারল্যান্ড সাধারণভাবে কঠোর অভিবাসন নীতির দেশ হলেও বৈধ বিয়ের মাধ্যমে দেশটিতে নাগরিকত্বের সুবিধা পাওয়া যায়। আপনার স্বামী বা স্ত্রী যদি সুইস নাগরিক হন এবং আপনারা যদি তিন বছর বৈবাহিক সম্পর্কে থাকেন, তাহলে ওই দেশে পাঁচ বছর বসবাসের পর আপনি নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারেন। আপনি যদি দেশের বাইরেও থাকেন, তারপরও ছয় বছরের বিবাহিতকাল অতিক্রান্ত হলেই আবেদন করতে পারবেন নাগরিকত্বের জন্য। সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া সাধারণত বেশ দ্রুত সম্পন্ন হয়।

বিয়ের আগে জেনে নিন
বিয়ে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। যদি সত্যিকারের ভালোবাসার টানে কেউ বিদেশি সঙ্গীকে বেছে নেন, আর সেই সম্পর্ক নাগরিকত্বের সুবিধা এনে দেয়, তবে সেটা হতে পারে এক দারুণ সুযোগ। তবে মনে রাখতে হবে, শুধু নাগরিকত্বের জন্য সম্পর্ক শুরু করলে তা কেবল কাগুজে সম্পর্কই থেকে যাবে, মানসিক শান্তি মিলবে না।

Share





Related News

Comments are Closed

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code