Main Menu

সরে যাচ্ছে ইসরাইলি সেনা, ধ্বংসস্তূপে ফিরছে গাজাবাসী

Manual3 Ad Code

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। শুক্রবার সেনারা গাজার কিছু এলাকা থেকে পিছু হটা শুরু করলে গাজাবাসীরা দলে দলে ধুলায় মোড়া রাস্তায় হেঁটে গাজা সিটির দিকে ফিরতে শুরু করেন।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার (১০ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার বিকাল ৩টা) যুদ্ধবিরতি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছে। এর রূপরেখা অনুযায়ী ইসরাইলি সেনারা এখন বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় আটক ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে; বিনিময়ে ইসরাইলে বন্দি শত শত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক্সে এক পোস্টে বলেন, সরকার সব ফিলিস্তিনি জিম্মিকে মুক্তি দিতে একটি প্রক্রিয়া অনুমোদন করেছে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসাবে গাজায় আটক ইসরাইলি বন্দিদের বিনিময়ে মুক্তি দেবে এমন ২৫০ বন্দির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ইসরাইলের আইন মন্ত্রণালয়। এ তালিকায় ফিলিস্তিনের প্রতিরোধের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত মারওয়ান বারগুতি, আহমদ সাদাত, হাসান সালামেহ এবং আব্বাস আল-সাইয়েদসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র ফিলিস্তিনি নেতার নাম নেই। তবে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে যে, তালিকার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। বার্তায় বলা হয়েছে, ‘চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছালে, বন্দিদের মিডিয়া অফিস প্ল্যাটফর্মে তালিকা প্রকাশ করা হবে।’

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের বাসিন্দাদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, কিছু ইসরাইলি সেনা গাজার পূর্বদিকে সীমান্তসংলগ্ন এলাকা থেকে পিছু হটেছে; যদিও সেখান থেকে ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে। ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল ধরে গাজা সিটির দিকে যাওয়ার রাস্তা থেকেও ইসরাইলি বাহিনী সরে গেছে। দীর্ঘ দুই বছর পর বাড়ি ফেরার অনুভূতি জানিয়ে ৪০ বছর বয়সি মাহদি সাকলা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতি এবং অস্ত্রবিরতির খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই খুব খুশি হয়েছিলাম। গাজা সিটিতে আমাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলাম। অবশ্য এখন আর বাড়ি নেই; সব ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু ধ্বংস্তূপ হলেও সেখানে ফিরতে পারলে আমরা খুশি। এটাও এক দারুণ আনন্দ। গত দুই বছর আমরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বাস্তুচ্যুত হয়ে অনেক কষ্ট সহ্য করেছি।’

Manual7 Ad Code

মধ্য গাজায় আরেক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি নারী বলেন, যুদ্ধবিরতির খবর শুনে আমি খুবই খুশি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, যেখানে আমাদের বাড়ি, আমরা সেখানে ফিরে যাচ্ছি। বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেলেও আমরা জন্মভূমিকে ভালোবাসি। তিনি বলেন, অনেক হয়েছে। আর না। ফিলিস্তিনের জনগণ এখন স্বাধীনতা আর নিরাপত্তা চায়।

Manual4 Ad Code

গাজার সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, উপকূলবর্তী সড়কেও মানুষের ঢল নেমেছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, হাজার হাজার মানুষ সমুদ্র ঘেঁষা আল-রশিদ সড়কে অপেক্ষা করছেন। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তারা সেখানে ছিলেন। এরপর ইসরাইলি সেনারা সরে যাওয়ার পরপরই তারা গাজার উত্তরাঞ্চলে নিজেদের বাড়ির দিকে যাওয়া শুরু করেন।

Manual2 Ad Code

ইসরাইলে ২০০ সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখার জন্য ইসরাইলে সর্বোচ্চ ২০০ মার্কিন সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যে আগে থেকেই অবস্থানরত এই সেনারা একটি বহুজাতিক টাস্কফোর্সের অংশ হিসাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তারা জানান, ইসরাইলে গঠন করা হবে একটি সিভিল-মিলিটারি কো-অর্ডিনেশন সেন্টার বা বেসামরিক-সামরিক সমন্বয় কেন্দ্র। এতে মিসর, কাতার, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সেনারা যোগ দিতে পারেন।

Manual6 Ad Code

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলের হামলায় ১৭ জন নিহত এবং ৭১ জন আহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের আক্রমণে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরাইলের ব্যাপক সামরিক হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৬৭ হাজার ২১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এদের মধ্যে ২০ হাজারেরও বেশি শিশু। এতে আহত হয়েছেন এক লাখ ৬৯ হাজার ৯৬১ জন।

সূত্র: আল-জাজিরা

Share





Related News

Comments are Closed

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code