অবশেষে মনি কিশোরের দাফন নিয়ে যে সিদ্ধান্ত আসলো
বিনোদন ডেস্ক: নব্বই দশকের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মনি কিশোর। প্রায় পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই সংগীতশিল্পী। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে বিটিভিতে গেয়েছিলেন ‘কী ছিলে আমার’। যা আজও শ্রোতাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। আর শিল্পীকে এনে দিয়েছেন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা।
গত শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর রামপুরার নিজবাসা থেকে মনি কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ৪ থেকে ৫ দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। এরপর মনি কিশোরের বড় ভাই অশোক কুমার মণ্ডল জানান, শিল্পীর মরদেহ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হবে। কারণ, শিল্পী মনি কিশোর বেঁচে থাকতেই তার মেয়ে নিন্তি চৌধুরীকে বাবার মরদেহ দাফনের কথাই নাকি বলে গিয়েছিলেন।
সংগীত জীবনের শুরুতে বিয়ে করেন মনি কিশোর। শামীমা চৌধুরীর সঙ্গে সেই বিয়ে টেকেনি। দেড় যুগ আগে তাদের দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটে। বিয়ের সময় ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন মনি কিশোর। সে হিসেবে তার মরদেহের দাফন করা হবে বলে জানান বড় ভাই অশোক কুমার।
এদিকে মনি কিশোরের মরদেহ তিনদিন ধরে পড়ে আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। দাফন নাকি সৎকার – এমন প্রশ্নে নিয়েও ছিল জটিলতা। মেয়ে দেশে আসা না আসা নিয়েও কথা উঠছিল। সবমিলিয়ে শিল্পীর দাফন বিলম্ব হচ্ছিল। অবশেষে সকল জটিলতার অবসান হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মনি কিশোরের দাফন করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গীতিকার মিল্টন খন্দকার।
দাফন প্রসঙ্গে এ গীতিকার বলেন, মনি কিশোরের মেয়ে নিন্তি চৌধুরী সরকারিভাবে একটি কাগজ পাঠিয়েছেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে থানা কর্তৃপক্ষ কাগজটি পেয়ে যাবে। পেতে পেতে হয়তো রাত হয়ে যাবে। রাতে তো আর দাফন সম্ভব নয়। আশা করছি, আগামীকাল বৃহস্পতিবার জোহরবাদ তার নামাজে জানাযা ও দাফন হবে। এ বিষয়ে সকালে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে চাই। যাতে তার জানাজা ও দাফনে সবাই উপস্থিত থাকতে পারেন।
কোথায় দাফন হবে শিল্পীর? এমন প্রশ্নে জবাবে মিল্টন খন্দকার বলেন, ইতোপূর্বে মনি কিশোরের লাশ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফনের কথা প্রচার হচ্ছিল। এটি আসলে ভুল তথ্য ছিল। মনি কিশোরের ভাই এটি ভুল করে বলেছিলেন। এখন পারিবারিকভাবে দাফনের চেষ্টা চলছে। দাফনের জন্য প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্তানের কথা ভাবা হয়েছিল। সেখানে অনেক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি। রামপুরা অথবা বনশ্রীর কোন একটি গোরস্থানে এখন দাফন করতে চাই। সরকারি কাগজটি হাতে পেলেই দাফনের স্থানটি সবাইকে জানিয়ে দেব।
তিনি আরও বলেন ,বলা হয়েছিল, মনি কিশোরের মেয়ে দেশে এলেই দাফন হবে। আমরার আশা করেছিলাম মেয়ে দেশে আসবেন। কিন্তু তার পরীক্ষা চলার কারণে তিনি আসতে পারবেন না। এ কারণে সেখান থেকে তিনি বাংলাদেশ দূতাবাসে লাশ দাফনের জন্য লিখিত দিয়েছেন। বাংলাদেশ দূতাবাস সেটি ঢাকায় পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিটা এখন যাবে থানায়। এরপর হবে লাশ দাফন।
এর আগে, মনি কিশোরের মরদেহ উদ্ধারের পর রামপুরা থানার ওসি সংবাদমাধ্যমকে বলে ছিলেন, নিন্তি চৌধুরী আমাদের কাছে একটা তথ্য হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছেন। আমরা তাকে পরামর্শ দিয়েছি, ওখানকার দূতাবাস অথবা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যেন পাঠান। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, তার বাবাকে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করতে। অন্যদিকে পরিবার, ভাই–বোনেরা চেয়েছিলেন হিন্দুধর্মমতে মরদেহের আনুষ্ঠানিকতা সারতে। দুই পক্ষ থেকে দুই ধরনের বক্তব্যের কারণে একটা বিতর্ক ও জটিলতা তৈরি হতে পারে। এই বিতর্ক ও জটিলতার অবসানে আমরা শিল্পী মনি কিশোরের মেয়ে নিন্তি চৌধুরীকে উপস্থিত মরদেহ গ্রহণ না হলে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের অনুরোধ করেছি। এরপরই আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব।
প্রসঙ্গত, ৩০টির বেশি একক অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে মনি কিশোরের, যার প্রায় সবগুলোই ছিলো হিট। রেডিও ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পীও ছিলেন তিনি।
তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘কী ছিলে আমার’, ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’ ইত্যাদি। তার সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান ‘কী ছিলে আমার’ তারই সুর করা ও লেখা।
Related News
অভিনেতা মাসুদ আলী খান আর নেই
বিনোদন ডেস্ক: দেশের গুণী ও বয়োজৈষ্ঠ অভিনেতা অভিনেতা মাসুদ আলী খান মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (৩১Read More
অবশেষে মনি কিশোরের দাফন নিয়ে যে সিদ্ধান্ত আসলো
বিনোদন ডেস্ক: নব্বই দশকের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মনি কিশোর। প্রায় পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এইRead More
Comments are Closed