Main Menu

পৃথিবীর মতো কতোগুলো গ্রহ আছে মহাবিশ্বে?

প্রযুক্তি ডেস্ক: পৃথিবীর বাইরে কি প্রাণের অস্তিত্ব আছে? থাকলে সেটা কোথায়? মহাবিশ্বে কি পৃথিবীর মতো কোনো গ্রহ আছে? সৌরজগতের অন্য কোনো গ্রহে কি প্রাণের অস্তিত্ব আছে? মহাবিশ্বে পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা, কিংবা পৃথিবী সদৃশ কোনো গ্রহ আছে কিনা, এ নিয়ে কৌতূহল, গবেষণা, বিজ্ঞানীদের মাথাব্যাথা, কোনো কিছুর অন্ত নেই।

বিজ্ঞানীরা খুঁজেই যাচ্ছেন, সৌরজগতের বাইরে কিংবা মহাবিশ্বে পৃথিবীর মতো কোনো গ্রহ আছে কিনা। খুঁজতে খুঁজতে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা একটা পর্যায়ে পৌঁছেছেন। অন্তত ৪ হাজার গ্রহের অস্তিত্ব বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন, যেখানে অতিমানবীয় কিছু থাকতেও পারে। পৃথিবীর মতো গ্রহও হতে পারে।

মানুষের জন্য বাসযোগ্য গ্রহ পাওয়া খুব বেশি সহজ নয়। কারণ মানুষের বাসযোগ্য হতে হলে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই ওই গ্রহে থাকতে হবে। সূর্য থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে, যেন গ্রহের উপরিভাগে পানি টিকে থাকতে পারে। আবার বেশি দূরে থাকলে পানি বরফ হয়ে যাবে। নাসার কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ আর ট্রানসিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট এ অনুসন্ধানে ভূমিকা রাখছে।

নাসা বলছে, কয়েক দশকের গবেষণা আর অনুসন্ধানের পর নিজেদের পৃথিবীর সদৃশ গ্রহের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তারা। যে গ্রহ আমাদের পৃথিবীর প্রতিফলন। একটি ছোট গ্রহ, মেঘ, সমুদ্রের অস্তিত্ব আর এমনই বায়ুমণ্ডল বেষ্টিত এই গ্রহ, মনেই হবে এতে প্রাণের অস্তিত্ব আছে।

এ গ্রহের অস্ত্বিত্ব থাকলেও সেটা শত আলোকবর্ষ দূরে, যেটার কাছে কখনোই যাওয়া সম্ভব না। কিন্তু শক্তিশালী প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেখানকার বায়ুমণ্ডল সমীক্ষা করে আমরা বলতে পারবো, মানবসভ্যতা অন্য কোনো গ্রহেও আছে, শুধু পৃথিবীতেই না।

ট্র্যাপিস্ট ওয়ান
স্পেস কমিউনিটির একটি আবিষ্কার ট্র্যাপিস্ট ওয়ান। এটাই প্রথম তারা, যেটিকে ঘিরে অন্তত ৭ টি গ্রহ ঘুরছে। ট্র্যাপিস্ট ওয়ান একটি ঠাণ্ডা ছোট তারা। ১৯৯৯ সালে আবিষ্কার করা হয়। বিজ্ঞানীরা ২০১৬ সালে আবিষ্কার করেন, ৩টি গ্রহ এই তারাকে ঘিরে ঘুরছে। দুই বছর পর আরো ৪টি গ্রহের সন্ধান মেলে।

এই তারার চারপাশে পৃথিবী সদৃশ আরও ৭টি গ্রহ আছে, যেগুলোর উপরিভাগে মাটি, পাথর আর পানির অস্তিত্ব আছে বলে ধারণা করা হয়। নিজেদের প্ল্যানেটারি সিস্টেমের বাইরে নতুন এই প্ল্যানেটারি সিস্টেম সম্পর্কে পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা এখন অনেক কিছুই জানে। এই গ্রহগুলো একটা আরেকটার এত কাছে যে, এক গ্রহ থেকে কেউ উপরে উঠলে প্রতিবেশী গ্রহকে খুব সহজেই আকাশে দেখতে পাবে। পৃথিবী থেকে চাঁদকে যতটুকু দেখা যায়, তার চেয়ে আকারে অনেক বড় দেখা যাবে গ্রহগুলো।

কেপলার টুটুবি
কেপলার টুটুবি নাসার বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার। এই গ্রহ দেখতে পুরোপুরি পৃথিবীর মতো। এটির অবস্থান আবার বাসযোগ্য স্থানে। নাসা এই এক্সোপ্ল্যানেটের নাম দিয়েছে সুপার আর্থ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর চেয়ে আকারে বড় এই গ্রহও সমুদ্রে পরিপূর্ণ থাকতে পারে। কেপলার টুটুবি আবিষ্কার করা হয় ২০১১ সালে। এই গ্রহ কক্ষপথের তারা থেকে নিরাপদ দূরত্বে আছে। এর উপরিভাগের তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গ্রহটি একটু বেশি কাত হয়ে থাকায় এর উত্তর আর দক্ষিণ মেরুতে বছরের অর্ধেকটা সময় দিন আর অর্ধেকটা সময় রাত থাকে। কেপলার টুটুবি’তে ভর পৃথিবীর তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেশি। নিজের প্ল্যানেটারি সিস্টেমের কক্ষপথে এক বার ঘুরতে এ গ্রহের সময় লাগে ২৮৯ তিন।

টিওআই সেভেন জিরো জিরো ডি
এখন পর্যন্ত এটি নাসার বিজ্ঞানীদের সবশেষ আবিষ্কার। ‘টিওআই সেভেন জিরো জিরো ডি’। এই গ্রহ পৃথিবী থেকে ১০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে। এই গ্রহ পৃথিবী থেকে খুব বেশি বড় নয়। কক্ষপথের ডর্ফ স্টারে প্রদক্ষিণ করে এই গ্রহ। এই গ্রহে ৩৭ দিনে বছর শেষ হয়।

কেপলার টু জিরো ই, কেপলার টু জিরো এফ, কেপলার টুয়েন্টি ই
এই তিনটি পৃথিবী সদৃশ গ্রহ ২০১১ সালে আবিষ্কার করা হয়েছে। তবে এই গ্রহগুলো নিজেদের কক্ষপথের তারার এত কাছে অবস্থান করছে যে, এগুলোতে প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া আর পানি পাওয়া কঠিন। এ গ্রহগুলোর তাপমাত্রা অনেক বেশি। কিন্তু গবেষণা এখনও চলছে, কারণ এত ছোট এক্সোপ্ল্যানেট এই প্রথম মহাবিশ্বে পাওয়া গেছে, যেগুলো সূর্য সদৃশ তারা চারপাশে ঘুড়ছে। এই গ্রহ পৃথিবীর চেয়ে কিছুটা বড়। নিজ কক্ষপথে ঘুরতে এ গ্রহের সময় লাগে কয়েকদিন।

এরমধ্যে কেপলার টুয়েন্টি এফ’র উপরিভাগের তাপমাত্রা মারকিউরি বা বুধ গ্রহের মতো ৪২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কেপলার টুয়েন্টি ই’র উপরিভাগের তাপমাত্রা ৭৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এত তাপে কাঁচও গলে যাবে।

 

Share





Related News

Comments are Closed