Main Menu

দেশে এই প্রথম ভার্টিক্যাল ফ্লোটিং বেড পদ্ধতি উদ্ভাবন

সিকৃবি সংবাদদাতা: বছরের অর্ধেকটা সময়, বিশেষ করে বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে দেশের প্রায় ৩০ লাখ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। এই সময়ে জলাবদ্ধ জমিতে কোনো কৃষিকাজ হয় না। ফলে ওইসব এলাকায় বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কর্মের ব্যবস্থা নেই। জমিতে কৃষি ফলন না হওয়ায় লোকসান হয় কৃষকের। ঘাটতি দেখা দেয় শাক-সবজিসহ খাদ্য সামগ্রীর।

বাংলাদেশের বন্যাপীড়িত ও জলাবদ্ধ অঞ্চলে কৃষিকাজ সচল রাখার জন্য উলম্ব ভাসমান খামারে (ভার্টিক্যাল ফ্লটিং বেড) একক স্থান হতে অধিক ফসল উৎপাদন করে ক্রম-হ্রাসমান ভ‚মির উপর চাপ কমানোর এক অভিনব প্রযুক্তি উদ্ভাবন করলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন এবং কৃষিশক্তি ও যন্ত্র বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন, বিভাগের দুই শিক্ষার্থী আসিফ আল রাযী নাবিল ও সাদিয়া আশরফি ফাইরুজ। সদ্য উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল লালশাক চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তারা।

প্রযুক্তিটি স¤পর্কে গবেষকরা জানান, চট, বাঁশ, সিপিভিসি পাইপ এবং পানির ড্রাম ব্যবহার করে তারা একটি বিশেষ কাঠামো তৈরি করেন যাতে ৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ২ ফুট প্রস্থের তিনটি উলম্ব স্তর রয়েছে। স্তরগুলি চার ইঞ্চি পুরুত্বের মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। প্রতিটি স্তরের মধ্যে দুই ফুট করে ফাঁকা যায়গা রাখা হয়েছে যাতে করে উৎপাদিত চারা গাছগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাস পেতে পারে। পুরো কাঠামোটি তিনটি পানির ড্রাম ব্যবহার করে পানির উপরে ভাসানো হয়। প্রস্তুতকৃত স্তরগুলিতে যেকোনো ধরণের শাকজাতীয় উদ্ভিদ চাষ করা যাবে বলে জানান তারা। পানির উপর ভাসমান বিধায় সেচ দিতে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না কৃষকদের। গবেষকরা আরও বলেন বন্যাক্রান্ত অঞ্চলে বদ্ধ পানির উপর কাঠামোটি ভাসিয়ে কৃষকরা অনায়াসেই চাষাবাদ করতে পারবেন এবং বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর কাঠামোটি শুকনো অনাবাদি জমির উপর স্থাপন করে কৃষিকাজ সচল রাখা যাবে।

ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে তারা কাঠামোটিতে উচ্চফলনশীল লালশাকের চাষ করেছেন এবং সফল হয়েছেন। স¤পূর্ণরূপে অব্যবহার্য জলাবদ্ধ ভ‚মির উপর কাঠামোটি স্থাপন করে তিনটি উলম্ব স্তরে চাষাবাদ করার ফলে তারা কম যায়গা ব্যবহার করে অধিক ফলন নিয়ে আসতে পেরেছেন যা গতানুগতিক চাষাবাদ পদ্ধতিতে পাওয়া অসম্ভব। সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য উপাদান দিয়ে তৈরি এই কাঠামোটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা যাবে।

গবেষকরা আশা প্রকাশ করেন, এই প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে কৃষকরা অধিক ফলন ঘরে তুলতে পারবেন যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। এছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও চাষযোগ্য জমির পরিমাণ দিন দিন হ্রাস পাওয়ায় এই প্রযুক্তি আমাদের দেশের জন্য খুবই উপযোগী। দেশের হাওরাঞ্চল এবং নি¤œাঞ্চলে বছরব্যাপী কৃষিকাজ অব্যাহত রাখতে উদ্ভাবনটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করেন গবেষকরা।

 

Share





Related News

Comments are Closed