Main Menu

ডোমারে স্কুলের ছাদে বাগান করলেন শিক্ষক

মোঃ রিমন চৌধুরী, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডোমার উপজেলার পাঙ্গা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাদে সারি সারি টব। সেখানে বেড়ে ওঠা গাছের ডালের ঝাঁকে ঝাঁকে নানান প্রজাতির ফুল, ফল আর সবজি শোভা পাচ্ছে। সেই দৃশ্য দেখতে ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন এলাকার উৎসাহী মানুষ জন।

স্কুলের ছাদে যে বাগান করা সম্ভব, সেটি প্রমাণ করেছেন পাঙ্গা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী কৃষি শিক্ষক সুকুমার রায়। এই স্কুল ছাদের বাগান দেখে অনেক স্কুল ও প্রতিষ্ঠানের মালিক ছাদে বাগান লাগাতে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছেন।

ডোমার শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত পাঙ্গা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়টি এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৪ সালে। এই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক-কর্মচারী ১৮ জন শিক্ষার্থী ৩২৯ জন লেখা পড়া করেন। সহকারী কৃষি শিক্ষক সুকুমার রায়ের পরিকল্পনায় আসে স্কুলের ছাদটিকে খালি ফেলে না রেখে ছাদটি বাগান হিসাবে ব্যবহার করা যায় কী না। সহকারী কৃষি শিক্ষক সুকুমার রায় ২০১৮ সালের শুরুতে নিজের উদ্যোগে ছাদে বাগান করা শুরু করেন। শুরুতে অল্প কিছু চারা গাছ থাকলেও আজ পুরো ছাদ ভরে গেছে ফুল আর ফলের গাছে।

শৈশব থেকেই গাছ ভালোবাসেন তিনি। যখন বাগান শুরু করতে যান তখন অনেকেই শিক্ষকের পাগলামি বললেও এখন সবাই সহকারী কৃষি শিক্ষক সুকুমার রায়ের প্রশংসা করছেন। এখন বাগানটিতে ফুলের মধ্যে রয়েছে গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, জবা, সূযমুখী, চেরি, কাঠগোলাপ, কচমচ, হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজ, টগর, বেলি, স্টার, এ্যলমুন্ডা, কলাবতীসহ আরো হরেক রকম ফুলের গাছ। ঔষুধিঃ গাছের মধ্যে রয়েছে তুলশী, পাথরকুচি, ঘৃতকুুমরী, আকন্দ, থানকুনি, পুদিনাপাতা। সবজির মধ্যে রয়েছে লাউ, কোয়স, পেপেঁ, বেগুন, মরিচ, পেঁয়াজ, টমেটো, ধুনিয়াপাতা, পালনশাক, ওলকপি, করলা, কাকরল, চিচিংগা। ফলের মধ্যে রয়েছে আম, লেবু, আঙ্গুর, বেল, কমলা, মাল্টা, জাম্বুরা। আরো হরেক রকমের বাহারী গাছ রয়েছে বাগানটিতে।

সহকারী কৃষি শিক্ষক সুকুমার রায় বলেন ২০১৮ সালের সরুতে নিজ উদ্যোগে ও নিজের অর্থায়নে কয়েকটি ফুলের চারা ও কয়েকটি আমের চারা শৌখিনতার জন্য লাগাই। সেখানে ফুল ও মুকুল আসায় স্কুলটিতে ফুলের সুবাশ ও মুকুলের ঘ্রাণে আলাদা একটা সোভা দিচ্ছিল। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে বাগান করার অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন ফুল ফল ও ঔষুধি গাছের চারা সংগ্রহ করে স্কুল ছাদে বাগান করা শুরু করি। স্কুল ছাদে বর্তমানে চার শত চারা গাছ আছে। ব্যওিগত ভাবে প্রায় আড়াই লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এখানে আমার কাছে টাকাটা মুখ্য নয়, ছাদকে ফেলে না রেখে ফুল বাগানের পাশাপাশি ফল আর সবজিও যে চাষ করা যায়, সেটি দেখাতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। কারো বাসার ছাদ ফেলে না রেখে সেখানে সবজি ও ফুলের চারা চাষ করে উপার্জন করা সম্বব বলে মনে করেন সহকারী কৃষি শিক্ষক সুকুমার রায়। তাই তার সেই ইচ্ছেই আজ বাস্তবে রুপ নিয়েছে। বাগান না দেখলে বিশ্বাসেই হবে না যে এটি একটি স্কুলের ছাদ। বর্তমানে গোলাপ সহ নানা প্রজাতি ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে বিদ্যালয়ের ছাদটি আর এই সৌরভ ছড়াচ্ছে এলাকার সর্বত্র। ফুলের পাশাপাশি বর্তমানে বিভিন্ন ফলের গাছে মুকুল এসেছে।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা যানায় আমাদের এই স্কুলটিতে লেখাপড়ার মান অনেক ভালো এবং আমাদের শিক্ষকগনও অনেক ভালো। আমাদের স্কুলের ছাদে যে ফুলের বাগান লাগিয়েছে আমাদের সার সেই বাগান দেখে আমরাও বাসায় ফুলের বাগান লাগাতে আগ্রহী হচ্ছি এবং স্কুল থেকে আমাদের বিভিন্ন ফুলের চারা দেয়া হয় সেই চারা গুলো আমরা বাসায় লাগাছি এবং আমাদের বাসার আসে পাশের সবাইকে ফুল ফল ও সবজি বাগান লাগানোর আগ্রহী করছি।

পাঙ্গা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরনি কান্ত রায় বলেন, বিদ্যালয়ের ছাদ বাগানটি মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। এখানে শিক্ষার্থীরা জীববিঞ্জানের অংশ উদ্ভিদ বিঞান এবং কৃষি বিষয়ে হাতে কলমে শিখতে পাছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফুলের চারা নিয়ে গিয়ে নিজ বাড়িতে লাগাচ্ছে। এলাকার মানুষজন ও অভিভাবকেরা অবসর সময়ে স্কুলের ছাদে এসে বাগান দেখে সময় কাটায় বলে তিনি জানিয়েছেন।

Share





Related News

Comments are Closed