Main Menu

নাট্যকার মমতাজউদ্দীন আহমেদ আর নেই

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: দেশবরেণ্য নাট্যকার, অভিনেতা, নির্দেশক ও ভাষাসৈনিক অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমেদ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ রবিবার বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর স্বজন শাহরিয়ার প্রিন্স বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভাষাসৈনিক মমতাজউদদীন আহমেদ স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। এই সময়টাতে তিনি এক অঙ্কের নাটক লেখায় বিশেষ পারদর্শিতার স্বাক্ষর রেখেছেন। নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ১৯৯৭ সালে একুশে পদক লাভ করেন।

তাঁর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বহুদিন থেকেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন মমতাজউদদীন আহমেদ। এর আগে তিনি একাধিকবার লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসকদের পরামর্শে আইসিইউতে রাখা হয়।

মমতাজউদদীন ১৯৩৫ সালের ১৮ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্তর্গত মালদহ জেলার হাবিবপুর থানার আইহো গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অবিভক্ত বাংলার মালদহ জেলায় জন্মগ্রহণ করলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলায় তিনি শৈশব অতিবাহিত করেন।

ছাত্রাবস্থায় মমতাজউদদীন তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে অংশ নেন। রাজশাহীর ভাষা আন্দোলন কর্মী গোলাম আরিফ টিপুর সাথে তিনি রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা পালন করেন। তিনি রাজশাহী কলেজে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণেও ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৪, ১৯৫৫, ১৯৫৭ ও ১৯৫৮ সালে তিনি রাজনীতির কারণে কারাবরণ করেন।

তিনি ৩২ বছরের বেশি সময় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কলেজে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও ইউরোপীয় নাট্যকলায় শিক্ষাদান করেছেন। তার লেখা নাটক ‘কি চাহ শঙ্খ চিল’ এবং ‘রাজা অনুস্বরের পালা’ রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

এ ছাড়াও তার বেশ কিছু নাটক, বাংলাদেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকসমূহে নিয়মিত কলামও লিখেছেন। মমতাজউদদীন শিক্ষক ও লেখক হিসেবে পরিচিতি পেলেও থিয়েটারের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবনকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

মমতাজউদদীন ১৯৭৭-৮০ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ছিলেন। ২০১১ সাল থেকে তিনি জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৯৭ সালে নাট্যকার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন। এছাড়াও শিল্প ও সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য তিনি জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৬), একুশে পদক (১৯৯৭), নাট্যকলায় অবদানের জন্য ২০০৮ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক বিশেষ সম্মাননা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, আলাউল সাহিত্য পুরস্কার।

Share





Related News

Comments are Closed