Main Menu

শ্রমিক নেতা প্রতাপউদ্দিন আহম্মেদের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ), বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ, বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আপোসহীন শ্রমিক জননেতা প্রতাপউদ্দিন আহম্মেদের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা।

১৪ মার্চ শুক্রবার বিকেল ৩ টায় সংগঠনের সুরমা মার্কেটস্থ জেলা কার্যালয়ে সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুনু মিয়া (সাগর), সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইমান আলী, সিলেট সদর উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মো. মিলন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান, মিরের চক শ্রমজীবী সংঘের অন্যতম নেতা মো. পংকী মিয়া।

সভার শুরুতে মাগুরায় ধর্ষনের শিকার আসিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে অনতিবিলম্বে ধর্ষনকারীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

নেতৃবৃন্দ বলেন প্রতাপউদ্দিন ছিলেন আপোষহীন এবং আজীবন সংগ্রামী নেতা। বর্তমান শ্রমিক আন্দোলন মানেই যখন আপোসকামিতা, লেজুড়বৃত্তি, দালাল নেতৃত্ব, সুবিধাবাদকে সামনে নিয়ে এসে শ্রমিকদের আন্দোলন ও সংগঠন বিমুখ করে তোলা হচ্ছে তখন প্রতাপ উদ্দিন আহমেদের সংগঠন শত প্রতিকূলতা অতিক্রম করে নৌ-যান সেক্টরের পাশাপাশি, হোটেল, গার্মেন্টস, লোকাল গার্মেন্টস, স’মিলসহ বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিক আন্দোলনে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে।

বাংলাদেশ আজ গভীর সামগ্রিক সংকটের মধ্যে নিমজ্জিত। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংকট তীব্র হয়ে গভীর থেকে গভীর হয়ে জটিলতা ও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতিতে সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস অবস্থা হয়ে পড়েছে। আমাদের দেশে শ্রমিক কৃষক জনগণের শ্রমে-ঘামে যে উদ্ধৃত্ত সৃষ্টি হয় তার সিংহভাগই লুটপাট করে নেয় সা¤্রাজ্যবাদ ও তার এদেশীয় দালাল জোতদার-মহাজন, দুর্নীতিবাজ আমলারা। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তাদের শীর্ষ নেতারাই এই লুটপাটের সাথে জড়িত থাকে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বলা হয়েছিল দেশে অন্যায়-অত্যাচার, দুর্নীতি, অপব্যবস্থাপনা থাকবে না, বৈষম্য দূর হবে এবং সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে। কলকারখানায় শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ হবে এবং ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা ফিরে পাবে। কৃষকের কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্যসহ কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হবে। বেকার যুবকদের চাকুরর নিশ্চয়তাসহ শিক্ষাঙ্গনে সুষ্টু পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। নারী ও শিশু পাচার বন্ধ, নারীর উপর নিপীড়ন নির্যাতন বন্ধসহ সকল ধরনের বৈষম্য দূর করা হবে। জনগণের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। বাস্তব চিত্র হল তার বিপরীত।

দেশের এনসিটিবি সহ প্রায় অধিকাংস বাগানে প্রদান করা হচ্ছেনা মজুরি, দেওয়া হয়নি ফাগুয়া উৎসব বোনাস। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নামকাওয়াস্তে তা প্রদান করলেও বাংলাদেশ শ্রম আইন- ২০০৬ এর ২(২ক) ধারা এবং বাংলাদেশ শ্রমবিধি- ২০১৫ এর ১১১ (৫) বিধি অনুযায়ী সব শ্রমিককে সমান হারে উৎসব বোসান প্রদান বাধ্যতামূলক করা হলেও এ প্রেক্ষিতে সরকারের দপ্তরসমূহ যেমন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে অন্যদিকে দালাল ইউনিয়ন মালিকদের স্বার্থরক্ষা করে চলছে। নেতৃবৃন্দ প্রতাপ উদ্দিন আহমেদ এর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে সৎ-সংগ্রামী আপোষহীন, শ্রেণিসচেতন নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শ্রমিকদের দাবি দাওয়া আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার আহবান জানান।

প্রতাপউদ্দিন আহম্মেদ সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা দালালপুঁজি বিরোধী জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ের অন্যতম কান্ডারী ছিলেন। তিঁনি বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের মুক্তি নাই। আর এ সমাজ পরিবর্তন করতে হলে গ্রহণ করা দরকার শ্রমিক শ্রেণীর মুক্তির দর্শন- মার্কসীয় দর্শন। তিনি এই দর্শন গ্রহণ করেছিলেন সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামকে এগিয়ে নেবার প্রয়োজনে। আজীবন সংগ্রামে অবিচল থাকা হচ্ছে প্রতাপউদ্দিন আহম্মেদের শিক্ষা। তাই তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজ পরিবর্তনের দীর্ঘস্থায়ী কঠিন কঠোর লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে প্রতাপউদ্দিন আহমেদ ছিলেন ‘সাপ্তাহিক সেবা’ পত্রিকার অন্যতম শুভানুধ্যায়ী ও পৃষ্টপোষক ছিলেন।

 

Share





Related News

Comments are Closed