Main Menu

সিলেটে চলছে ‘অর্থনৈতিক শুমারি’র কার্যক্রম, সবাইকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহবান

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেটে শুরু হয়েছে চতুর্থ ‘অর্থনৈতিক শুমারি’র ‘লিস্টিং’ কার্যক্রম। গত রবিবার (৭ জুলাই) থেকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর উদ্যোগে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশ নিন, অর্থনৈতিক শুমারিতে তথ্য দিন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২৬ জুলাই পর্যন্ত চলবে ‘অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪’-এর লিস্টিং।

শুমারির তথ্য সংগ্রহের মূল কার্যক্রম এ বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে পরিচালিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে সিলেট বিভাগীয় বিবিএস কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান ‘অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪’-এর সিলেট বিভাগীয় যুগ্ম পরিচালক ও বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়ক মো. সাহাবুদ্দিন সরকার।

তিনি বলেন- অর্থনীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন নির্ধারণ করতে চলতি বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে দেশে হবে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি। এর মাধ্যমে দেশের উদ্যোক্তা পরিবার ও ছোট-বড়-মাঝারি আকারের কলকারখানায় বিনিয়োগের পরিমাণ, কাজের ধরণ, আয়-ব্যয় ও শ্রমিকের সংখ্যাসহ নানা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে। তবে এই কাজ সহজ করার জন্য সিলেটে ৭ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে লিস্টিং। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডসম্পন্ন ঘর (খানা) বা প্রতিষ্ঠান বাছাই করবে বিবিএস। পরে বাছাইকৃত খানা বা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে পরিচালিত হবে অর্থনৈতিক শুমারির মূল কার্যক্রম।

মো. সাহাবুদ্দিন সরকার আরও জানান- সুষ্ঠুভাবে লিস্টিং শুমারির স্বার্থে সিলেট বিভাগের ৪টি জেলাকে ৭টি ‘শুমারি জেলায়’ ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট ৩টি, সুনামগঞ্জ ২টি এবং হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে ১টি। এসব জেলাকে আবার ৪ হাজার ৬৯টি লিস্টিং এলাকায় ভাগ করে চালানো হচ্ছে বর্তমান কার্যক্রম। এ কার্যক্রমের জন্য ৪ হাজার ৬৯টি লিস্টিং এলাকায় একজন করে ৪ হাজার ৬৯ জন লিস্টার বা তালিকা প্রস্ততকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণী এবং পূর্বের শুমারি-কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের পর তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তারা একেকজন গড়ে সাড়ে ৬ শ’টি খানা বা প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত করবেন। লিস্টাররা সকল সাধারণ খানা (ঘর), মেস, বাজার, দোকানপাট, সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত অফিস, ক্লাব, কোম্পানি, ব্যাংক, হল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ সকল ধরনের ছোট-বড় প্রতিষ্ঠানে তথ্য সংগ্রহ করতে যাবেন। লিস্টারদের সঙ্গে রয়েছে পরিচয়পত্র। তাদের কাজ মনিটরিং করার জন্য একজন করে জোনাল অফিসার রয়েছেন। এই জোনাল অফিসারদের কাজ পর্যবেক্ষণের জন্য রয়েছেন উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারীরা (ইউসিসি)। লিস্টিং কার্যক্রম চলছে ট্যাবের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এবং তাদের কাজ মনিটরিংও করা হচ্ছে আইসিএমএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারী সাহাবুদ্দিন জানান- সিলেট বিভাগে চলছে বন্যা। তাই বন্যার কারণে কোনো এলাকায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিস্টিং কার্যক্রম শেষ না করতে পারলে প্রয়োজনে সময় বাড়ানো হবে।

মতবিনিময় সভায় বিবিএস সিলেট জেলার পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ও জেলা শুমারি সমন্বয়কারী-১ মোস্তফা মাহাবুব ইফতেখার চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন- তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে লিস্টাররা মাঝে-মধ্যে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন। কেউ কেউ তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে তাদের অনেক বুঝিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। অথচ অর্থনৈতিক শুমারির জন্য তথ্য দিলে নিজের এবং দেশের লাভ।

মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের জানানো হয়- দেশের প্রথম অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালিত হয় ১৯৮৬ সালে। এরপর দ্বিতীয় শুমারি হয় ২০০১ ও ২০০৩ সালে এবং তৃতীয়টি ২০১৩ সালে। ১০ বছর পর হচ্ছে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি। তবে এবারই প্রথম ট্যাবলেট পিসির মাধ্যমে পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। লিস্টিং কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের মোট ইকোনোমিক ইউনিটের সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে এবং পরবর্তীতে সেসব ইউনিটে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে শুমারির প্রধান কাজ শেষে ধাপে ধাপে বিজনেস রেজিস্ট্রারসহ একাধিক প্রতিবেদন বিবিএস প্রকাশ করবে। স্মার্ট বাংলাদেশের প্রেক্ষিত ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) ইত্যাদি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইকোনোমিক ইউনিটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিদ্যমান সমস্যা নিরূপণ করে সমাধানের মহাপরিকল্পনা গ্রহণে এ শুমারির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই লিস্টাররা গেলে তাদের তথ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সিলেটবাসীর সহযোগিতা করা প্রয়োজন। সকলের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন ও নিরাপদ রাখতে ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আইনগতভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

 

Share





Related News

Comments are Closed