জাবিতে জলাশয় ভরাট করে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণে বাঁধা

জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নতুন প্রশাসনিক ভবনের পেছনের জলাশয় ভরাট করে কলা ও মানবিক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ করতে গেলে বাধা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও একদল শিক্ষার্থী।
গত বুধবার (১২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয় । বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে ঘটনাস্থলে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেই সাথে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এবং বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধনে অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, কলা ও মানবিক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যেভাবে কাজ করার কথা বলা হয়েছিল, এখন তার উল্টো কাজ হচ্ছে। কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিন-চার মাস ধরে তারা (প্রশাসন) ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে সভা করে বলেছিল, তারা লেকে ভবন বানাবে না। কিন্তু ক্যাম্পাস যখন ছুটি হয়েছে এবং অনেক শিক্ষার্থী ছুটিতে বাড়ি চলে গেছেন। ঠিক তখন লেক ভরাটের কাজ শুরু করেছে তারা। ক্যাম্পাসে অপরিকল্পিতভাবে ১৭টি স্থাপনার কাজ করতে গিয়ে গাছপালা নিঃশেষের পর এখন তারা জলাশয়ে ভবন বানাতে শুরু করেছে।
জাবি ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলো সম্প্রসারিত হলে সেখানে বাধা দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটা ও জলাশয় ভরাট করা যে একেবারেই অপ্রয়োজনীয়, তা দৃশ্যমান। এরপরও গায়ের জোরে তড়িঘড়ি করে অংশীজনদের মতামতকে উপেক্ষা করে কাজগুলো করা হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়ে প্রতিবছর অতিথি পাখি আসে। এর জাতীয় গুরুত্ব আছে। তারা কীভাবে এর গুরুত্বকে অস্বীকার করে? এখানে চলমান গোটা নির্মাণকাজের প্রক্রিয়াটাই অস্বচ্ছ। এর মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগরের পরিবেশগত ঐতিহ্য ও সংবেদনশীলতার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার আন্দোলনের নেত্রী সৈয়দা রত্না, বায়মণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার, শহীদ আনোয়ারা উদ্যান রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব, মিশন গ্রিন বাংলাদেশের সমন্বয়ক আহসান রনি ও প্রজেক্ট টিম লিডার কেফায়েত শাকিল, নগর পরিকল্পনাবিদ রাকিবুল রনি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পরিজা) সহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধিরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের ৩য় ধাপের বিভিন্ন স্থাপনার নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের ফলে পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) প্রতিনিধিদের কাছে একটি চিঠি প্রদান করে।
Related News

রাশিয়ায় মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের মূল হোতা তামান্না জেরিনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।Read More

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঢুকে পড়েছে ছাত্র-জনতা, ভাঙচুর-আগুন
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী স্লোগানে উত্তাল ধানমন্ডি ৩২ নম্বর। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ঢলRead More
Comments are Closed