Main Menu

স্ত্রীর ‘গায়ের রং কালো’ হওয়ায় নির্যাতন, স্বামী গ্রেপ্তার

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: গায়ের রং কালো থাকায় স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এক গৃহবধু। অবশেষে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নির্যাতিতা মামলা করেন স্বামীর বিরুদ্ধে। এরপর আদালত থেকে নির্যাতিতার স্বামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। ঘটনাটি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের।

শনিবার (১২ নভেম্বর) আসামিকে আদালতের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নে কবিরপুর গ্রামের ছাইম উদ্দিনের ছেলের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সাড়ে ৪ বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শান্তিগঞ্জ উপজেলার কাঠালিয়া গ্রামের সাবির আলীর মেয়ে রিপা আক্তার (২২)। বিয়ের পর থেকে গায়ের রং কালো বলে স্বামীর হাতে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে রিপা আক্তারকে। অনেকবার শ্বশুর বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা দিয়েও দাম্পত্যজীবন আর সুখের হয়ে উঠেনি। অমানবিক নির্যাতনে বিয়ের ৬ মাসের মধ্যেই বাবার বাড়ি পাড়ি জমান ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ। পরে সুনামগঞ্জের পারিবারিক আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন রিপা আক্তার। স্বামীর সংসারে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষা আর মামলার তারিখ গুনতে গুনতে তিন বছর পর গত বছরের ১১ নভেম্বর মামলার আদেশ হয়।

আদেশে আসামির বিরুদ্ধে দেনমোহর ও বিগত দিনের ভরণপোষণ বাবদ এক লাখ ৫৬ হাজার টাকা পরিশোধসহ তার সংসারে ফিরে না নেওয়া পর্যন্ত ৩ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে দেওয়ার নির্দেশ দেন সুনামগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালত। পরবর্তীতে আদালতের আদেশ অমান্য করায় আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। যার প্রেক্ষিতে ১১ নভেম্বর শুক্রবার রাতে জগন্নাথপুর থানার উপ সহকারি পরিদর্শক (এএসআই) মহিবুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ পলাতক আসামি সাইদুলকে নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

কবিরপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি মেম্বার আহমদ আলী বলেন, তাদের এ বিষয়টি আমরা স্থানীয়রা অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ রিপা আক্তার বলেন, আমার কোনো দোষ নাই। দোষ হলো আমি কালো। আমার স্বামী আমাকে বলতেন, তোকে আমার আর চয়েস নাই। তোর সাথে আমাকে মানায় না।

ভুক্তভোগী আরও বলেন, আমার বাবা নেই। বাড়িতেও অনেক অভাব। এরপরেও আমার মা অনেকবার আমার স্বামীকে নগদ টাকা দিয়েছেন। এখনও জায়গাজমি বিক্রি করে গাড়ি কিনে দিতে বলেছেন। কিন্তু এখন সে আর আমায় নিয়ে সংসার করবে না।

আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান।

 

Share





Related News

Comments are Closed