Main Menu

নদী হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: নদীর নিজস্ব ভাষা আছে, আছে আপন কথা। আনন্দে সে হাসে, ছলাৎ ছলাৎ শব্দ করে। বেদনায় সে কাঁদে, দূর্বব্যবহার করে। কখনো হয়ে ওঠে প্রতিশোধপরায়ণ । আবহমান কালের মানুষেরা নদীর সে ভাষা বুঝতে পারতো, নদীর প্রতি তাই তাদের আচরণও ছিল ইতিবাচক। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে মানবজাতির চিরসখা সে নদীর কথা ভুলতে বসেছে, নদীর সাথে প্রতিদিন করছে দূর্বব্যবহার। দখল, দূষণ আর ভরাটের মাধ্যমে মানুষ নদী হত্যার নগ্ন খেলায় মেতে উঠেছে। তাই নদী হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করে শাস্তি প্রদানের কোন বিকল্প নেই।

’নদীর কথা, নদীর ব্যাথা ’শীর্ষক এক মুক্ত আলোচনায় বক্তারা একথা বলেন। আন্তর্জাতিক নদী দিবস-২০২২ উপলক্ষে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও সারি নদী বাঁচাও আন্দোলন যৌথভাবে আয়োজিত এ সভা বৃহস্পতিবার বিকেলে (২২ সেপ্টেম্বর) সিলেট নগরীর ইমজা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সুরমা রিভার ওয়াটার কিপার্স আব্দুল করিম কিম’র সভাপতিত্বে ও সারি নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল হাই আল-হাদীর সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী

অ্যাডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী দ্বীপন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগীয় প্রধান আ.ফ.ম জাকারিয়া, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক মোহাম্মদ তাজিম উদ্দিন, সিনিয়র সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম, দৈনিক জৈন্তা বার্তার সম্পাদক ফারুক আহমদ, শাবিপ্রবির সহকারী অধ্যাপক ডঃ বেলাল আহমদ, সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বেলাল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের ব্যুরো প্রধান শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট ইতিহাস ও ঐতিহ্য ট্রাস্ট এর সভাপতি ডাক্তার মোস্তফা শাহ জামান চৌধুরী বাহার, জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় পরিষদের সহসভাপদি এডভোকেট মোঃ হাসান আহমদ, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম, সারি নদী বাঁচাও আন্দোলন এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মনজুর আহমদ, জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এড মোঃ জামাল উদ্দিন, পুলিশ লাইন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহ আলম।

অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহমদ, জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদের সভাপতি মাহফুজুল কিবরিয়া মাহফুজ, গোয়াইনঘাট ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফখরুল ইসলাম, আলোকিত গোয়াইনঘাটের সম্পাদক মোঃ আমিন উদ্দীন, এ কে নিউজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন, পুষ্পকলি সম্পাদক শাহিদ হাতিমী প্রমুখ।

সভায় বক্তারা আরও বলেন, নদী বাংলাদেশের প্রাণ। নদী বাহিত পলির সঞ্চিতকরণে গড়ে উঠেছে এ জনপদ। জালের মতো ছড়ানো নদীগুলো এ ভূখন্ডের গঠন থেকে প্রতিরক্ষা-সর্বক্ষেত্রেই পালন করেছে অগ্রনী ভূমিকা। মহান মুক্তিযুদ্ধে নদীগুলো শক্রুর জন্য অস্ত্র হিসেবে কাজ করেছে। বাঙালির জীবন, সংস্কৃতি ও অস্তিত্বের সাথে নদীগুলো জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে। কিন্তু সে নদীগুলোকে নানামুখী অপরিকল্পিত কর্মকান্ডের মাধ্যমে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যক্তি বা বেসরকারী সংস্থার পাশাপাশি সরকারি নানা সংস্থারও ভূমিকা অস্বীকারের উপায় নেই। উন্নয়নের নামে স্থানীয় মানুষের মতামতের তোয়াক্কা না করে অনেক অপরিকল্পিত প্রকল্পের নামে নদীবিধ্বংসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে ইতিমধ্যে অনেক নদীকে হত্যা করা হয়েছে। কোন কোন নদীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। নদী ও তার প্লাবনভূমির প্রাণ, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্যেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। যে বা যারা এসব নদীবিধ্বংসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদের সবাইকে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

সভায় পিয়াইন নদীর ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে আলোকপাত করতে গিয়ে বক্তারা বলেন, এককালের প্রমত্তা পিয়াইন নদী এখন ধূ ধূ বালুচরে পরিনত হয়েছে। উত্তর-পূর্ব সিলেটের জীবন ও অস্তিত্বের সাথে জড়িত এ নদী বর্তমানে দখল, দূষণ আর ভরাটের উৎসবে পরিণত হয়েছে। ১৯৫৪ সাল থেকে এ নদী খননেন জন্য স্থানীয় মানুষেরা দাবি জানালেও এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ নদীর পর্যটন ও খনিজ সম্পদ থেকে সরকার কোটি কোটি রাজস্ব আদায় করলেও নদীকে বাঁচানোর কোন উদ্যোগ নেই । বক্তারা অবিলম্বে এ নদী খননের প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।

 

Share





Related News

Comments are Closed