টাকার বিপরীতে বাড়ল ডলারের দাম

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের দাম আবারও বাড়ল। রোববার (২৪ জুলাই) খোলা বাজারে ডলারের দাম ১০৪ টাকা ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। নতুন দামে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হয়েছে। আরও ২৫ পয়সা বাড়ানোয় প্রতি ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা। এর আগে যা ছিল ৯৪ টাকা ৪৫ পয়সা।
তবে এই দামে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো সোমবার (২৫ জুলাই) ১০২ টাকার বেশি দামে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করেছে। খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়।
এশিয়ার দেশগুলোতে জেঁকে বসেছে ডলারের দাম। পাকিস্তানি রুপির বিপরীতে ডলারের দাম ২০০ রুপি ছাড়িয়েছে বহু আগে। বর্তমানে ডলারপ্রতি ২০৮ রুপি গুনতে হচ্ছে পাকিস্তানীদের। কেবল পাকিস্তান নয়, বাংলাদেশ, ভারত ও জাপানেও রাষ্ট্রীয় মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ছে হু হু করে।
গত সপ্তাহে এক ডলারের বিপরীতে ১৩৫ দশমিক ১৯ ইয়েন পাওয়া যাচ্ছিল। আর ডলারপিছু ভারতীয় রুপির দাম দাঁড়িয়েছে ৭৮ দশমিক ২৮। এদিকে ডলারের বিপরীতে টাকার মান নব্বইয়ের ঘরে ঘোরাফেরা করছে।
এ ব্যাপারে ফোরেক্স অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তানের (এফএপি) চেয়ারম্যান মালিক বোস্তান বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চুক্তি থেমে থাকা, দুর্বল রিজার্ভ ও চীন থেকে অর্থ সহয়তা পেতে দেরি হওয়ায় দিনকে দিন পাকিস্তানি রুপির ওপরে চাপ বাড়ছে। এতে করে কমছে রাষ্ট্রীয় মুদ্রার মান, বাড়ছে ডলারের দাম।
মালিক বলেন, ‘এখনই রিজার্ভের ব্যাপারে ভাবতে হবে আমাদেরকে। মানুষ যাতে অহেতুক বিদেশে ঘুরতে যেতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। যেভাবেই হোক ডলারের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে আসতে হবে।’
এদিকে ভারত ও জাপান তাদের রাষ্ট্রীয় মুদ্রার মান কমার পেছনে দায়ী করছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট ও যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতে ঠেকাতে নেয়া পদক্ষেপগুলোকে।
তবে ব্যাংক অফ জাপান তাদের চিরাচরিত রীতি মেনে মনিটরি ইসিং প্রোগ্রামের ওপরই ভরসা রেখেছে। তারা মনে করছে, এর ফলে আর্থিক বৃদ্ধির হার ধরে রাখা সম্ভব হবে। জাপানের অর্থনীতিবিদ তাকাহিদে কিনৌছি বলেছেন, ইয়েনের দাম কমে যাওয়ায় জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সুদের হারে ফারাক পড়বে।
ভারতের ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাংক ইতোমধ্যে রুপির দাম ৫০ বেসিক পয়েন্ট বাড়িয়েছে। এর ফলে সুদের হার বাড়বে। কিন্তু ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বেশি অর্থ দিতে হবে। রিজার্ভ ব্যাংক বিদেশি মুদ্রা বিক্রি করেও রুপির দাম স্থিতাবস্থায় আনার চেষ্টা করেছে।
বিদেশি মুদ্রার ব্যবসায়ীরা বলছেন, এশিয়ার দেশগুলির মুদ্রা দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে। ডলারের দামের সঙ্গে সঙ্গে ভারতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এপ্রিলে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ ছিল সাত দশমিক ৭৯ শতাংশ, যা আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সরকার চিনি রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। পেট্রল-ডিজেলের দাম অনেকখানি বাড়িয়ে তারপর আবার কিছুটা কমানো হয়েছে।
একই অবস্থা পাকিস্তানে। সেখানে মূল্যস্ফীতির হার ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ। বলা হচ্ছে বর্তমানে পাকিস্তানের রিজার্ভে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আছে তা দিয়ে মাত্র দুই মাসের আমদানি ব্যয় বহন করা সম্ভব।
বৈদেশিক আমদানি কমাতে ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে দেশটির সরকার। সম্প্রতি পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী আহসান ইকবাল দেশের জনগণকে চা পান কমাতে বলে সমালোচনার মুখে পড়েন। মূলত চা আমদানি কমানোর লক্ষ্যে জনগণকে বর্তমানে এ ধরনের অনুরোধ করতে বাধ্য হচ্ছে সরকার।
Related News

১২ কেজি এলপিজির নতুন দাম ১৩৬৩ টাকা
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।Read More

স্বর্ণের দাম কমলো ভরিতে ১৭৪৯ টাকা
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: রেকর্ড দাম হওয়ার পর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমেছে। ভালো মানেরRead More
Comments are Closed