কৃষিতে পটেটো প্লান্টার মেশিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে

মো: রিমন চৌধুরী, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: আলুর বীজ বপনে কৃষকের সময়, শ্রম, অর্থ ও ঝুকি কমাতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত পটেটো প্লান্টার মেশিনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ব্যবহারকারী কৃষি বিদরা বলছেন এই যন্ত্রটি আলু চাষীদের জন্য খুবই লাগ সই আর কৃষকেরা বলছেন এমন যন্ত্র হাতে পেলে কিছুটা রেহাই মেলে তাদের।
নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে আমন কর্তন, আলু বপন, বোরোর বীজ তলা তৈরীর কাজ শুরু হয়। কৃষিতে এমন শ্রম ঘন অবস্থার কারনে এ সময় শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরনে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবন করেছে পটেটো প্লান্টার নামের একটি যন্ত্র।
প্রচলিত পদ্ধতিতে হাতে আলু রোপন করতে হেক্টর প্রতি ৪৪ জন শ্রমিক দরকার। অথচ পটেটো প্লান্টার থাকলে ৪ জন শ্রমিকই যথেষ্ট। কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের হিসাব অনুযায়ী প্রচলিত পদ্ধতিতে হাতে আলু রোপনের চেয়ে এই যন্ত্রটি ব্যাবহারে হেক্টর প্রতি প্রায় আঠারো হাজার টাকা সাশ্রয় হবে কৃষকের।
সরকারী খামার গুলোতে ব্যাবহারের অভিজ্ঞতায় কৃষিবিদরা বলছেন আলু বপনের সব কাজ এক সাথে সম্পন্ন হওয়ায় কৃষক সময়, শ্রম, অর্থ ও ঝুকি কমাতে পারবে।
পঞ্চগড়ের প্রজনন বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: মহিউদ্দিন গত তিন বছর ধরে এই যন্ত্রটি ব্যাবহার করছেন। তিনি বলেন,”কৃষক পর্যায়ে এটির প্রচলন অত্যন্ত জরুরী। একই সময়ে আমন কর্তন, আলু বপন, বোরোর বীজ তলা তৈরীর কাজ শুরু হওয়ায় এ সময় শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। পটেটো প্লান্টার যন্ত্রটি এই সংকট মোচনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে। কৃষকের সময়, শ্রম, অর্থ ও ঝুকি কমাবে।
নীলফামারীর ডোমার ভিত্তি আলু বীজ উৎপাদন খামারের উপ পরিচালক মো: আবু তালেব মিঞা বলেন যন্ত্রটি কৃষকের আবাদ খরচ কমানোর ক্ষেত্রে খুবই সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে। তবে এটির সাথে সার প্রয়োগের কৌশল যুক্ত করতে পারলে যন্ত্রটি আরো দূর্দান্ত হয়ে উঠতো বলে তার মত।
এদিকে এমন যন্ত্রের কথা জানতে পেরে আশান্বিত আলু চাষিরা বলছেন, আলু বপনে বিঘা প্রতি তাদের শ্রমিক খরচ চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা লাগে। শ্রমিক খরচ দিনকে দিন বেড়ে যাচ্ছে বলে তারা জানান।
ডোমার উপজেলার বসুনিয়াহাট সংলগ্ন এলাকার কৃষক মজিবর রহমান জানান প্রতি বছর পনের থেকে বিশ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেন তিনি। এ সময় শ্রমিক যোগার করতে তার গলদঘর্ম হতে হয়। এমন আলু রোপন যন্ত্র হাতে পেলে খরচের পাশাপাশি হয়রানি থেকেও কিছুটা রেহাই পাওয়া যেত বলে জানার তিনি।
যন্ত্রটি উদ্ভাবনকারী বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের ফার্মমেশিনারী এন্ড পোস্ট হারভেস্ট প্রসেস ইন্জিনিয়ারিং বিভাগ জানায়, মাটির প্রকৃতি অনুযায়ী এটি যেকোন গভীরতায় যে কোন মাপের আলু রোপনে সক্ষম।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের ফার্মমেশিনারী এন্ড পোস্ট হারভেস্ট প্রসেস ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: এরশাদুল বলেন পাওয়ার টিলার থাকলে মাত্র ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে এই যন্ত্রটি সন্নিবেশন করানো যাবে। তিনি বলেন সরকারের ভর্তুকী কার্য়ক্রমে ইতিমধ্যে আলু উত্তোলন যন্ত্র অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। উত্তোলন যন্ত্রের পাশাপাশি আলু রোপনের এই যন্ত্রটি অন্তর্ভূক্ত করা দরকার বলে মত তার।
Related News

জালালপুরে রেড কিং টমেটোর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুপ্রিম সীডের আয়োজনে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জালালপুরে রেড কিং টমেটোর মাঠ দিবসRead More

গোয়াইনঘাটে ‘ঝাড় শিম’ চাষে কৃষকের মুখে হাসি
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেট বিভাগের সীমান্তবর্তী এলাকা গোয়াইনঘাট। এক সময়কার শস্যভাণ্ডার হিসেব খ্যাত এই উপজেলাRead More
Comments are Closed