Main Menu

মীর কাসেম আলীর মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে

Manual4 Ad Code

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর মৃত্যু পরোয়ানা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে। এ পরোয়ানার ভিত্তিতে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরে পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করবে কারা কর্তৃপক্ষ।

Manual5 Ad Code

সোমবার (৬ জুন) রাত সাড়ে সাতটার দিকে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানা ও মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি নিয়ে কারাগারের নিয়ে যান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা পারভেজ হোসেন।

এর আগে সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মীর কাসেম আলীর মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক এবং বিচারিক প্যানেলের দুই সদস্য বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী।

এরপরই আইন অনুসারে বিচারিক আদালত ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রেরণ করে। এ পরোয়ানার ভিত্তিতে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরে পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করবে কারা কর্তৃপক্ষ।

এর আগে, সোমবার দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় বিচারিক আদালত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

এর ভিত্তিতে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে পূর্ণাঙ্গ রায় কারাগারে পাঠিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। সেখানে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যু পরোয়ানা ও রায় পড়ে শোনানো হবে।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ২৪৪ পৃষ্ঠার এ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এর আগে রায়ে স্বাক্ষর করেন রায় প্রদানকারী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

গত ৮ মার্চ আপিল বিভাগ মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেয়।

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ায় এখন ওই রায়ের বিরুদ্ধে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ বা পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবে আসামিপক্ষ।

ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সামনে উপস্থাপন করার পর রায়ের প্রত্যায়িত কপি পাঠানো হবে কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। নিয়ম অনুসারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করা হবে।

Manual1 Ad Code

আপিল বিভাগের সর্বোচ্চ সাজার আদেশ হাতে পেয়ে ট্রাইব্যুনাল কারাগারে মৃত্যু পরোয়ানা পাঠাবে। ওই মৃত্যু পরোয়ানার ভিত্তিতেই সরকারের তত্ত্বাবধানে কারা কর্তৃপক্ষ সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি নেবে।

অন্যদিকে দণ্ড কার্যকরের আগে আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার সুযোগ পাবেন মীর কাসেম। রিভিউ না টিকলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষাও তিনি চাইতে পারবেন। তবে এর আগে যুদ্ধাপরাধের মামলায় প্রাণদণ্ড কার্যকর হওয়া কোনো জামায়াত নেতাই প্রাণভিক্ষা চাননি।

Manual3 Ad Code

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেম আলীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর খালাস চেয়ে মীর কাসেম আলী আপিল করেন।

ট্রাইব্যুনালে আটজনকে নির্যাতনের পর হত্যা ও মরদেহ গুম এবং ২৪ জনকে অপহরণের পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন নির্যাতনকেন্দ্রে আটকে রেখে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী ১৪টি অভিযোগে অভিযুক্ত হন মীর কাসেম আলী।

এ ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয় বলে রায়ে বলা হয়। বাকি ৪টি অভিযোগ প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি।

১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি অর্থাৎ ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং ৪টি অর্থাৎ ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেননি বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়।

১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ মোট ৮ জনকে হত্যার দায়ে মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ১১ নম্বর অভিযোগে শহীদ কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে ও ১২ নম্বর অভিযোগে রঞ্জিত দাস লাতু ও টুন্টু সেন রাজুকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। ১১ নম্বর অভিযোগে সর্বসম্মত ও ১২ নম্বর অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ফাঁসির রায় দেন বিচারপতিরা।

Manual4 Ad Code

ফাঁসি ছাড়াও প্রমাণিত অন্য ৮টি অভিযোগে আরো ৭২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ পান মীর কাসেম আলী। এর মধ্যে ফারুককে অপহরণ-নির্যাতনে (২ নম্বর অভিযোগ) ২০ বছর ও নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতনের (১৪ নম্বর অভিযোগ) অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার। এছাড়া অপহরণ, আটক ও নির্যাতন সংক্রান্ত ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে ৭ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

মীর কাসেম আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জামায়াতে ইসলামী একে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিচার বলছে। জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের এক নম্বর বেঞ্চে ৭ কার্যদিবসে এ শুনানি শেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল মামলার রায় দেওয়ার জন্য দিন ঠিক করেন ৮ মার্চ।

৮ মার্চ মীর কাসেমের আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ৪, ৬ ও ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়।

আর ২, ৩, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আপিল নাকচ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ই বহাল রাখা হয়।

এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে হত্যার দায় থেকে এই জামায়াত নেতা অব্যাহতি পেলেও ১১ নম্বর অভিযোগ সর্বোচ্চ সাজাই বহাল রাখা হয়েছে।

Share





Related News

Comments are Closed

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code