Main Menu

সিলেটের তামাবিল ও শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানিতে স্থবিরতা

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেটের দুটি স্থলবন্দর দিয়ে হঠাৎ করে পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল ভারত। আর এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এ দুটি স্থলবন্দরে পণ্য রপ্তানিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এই স্থলবন্দরগুলো হলো- ভারতের মেঘালয় রাজ্যের এপারে সিলেটের তামাবিল ও আসামের এপারে বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর।

জানা যায়, ভারতের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা পণ্যগুলোই সিলেটের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে বেশি রপ্তানি হতো। তাই সিলেট থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি প্রায় বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে ভারতের সেভেন সিস্টারে বাংলাদেশি পণ্যের বিশাল বাজার হারানোর শঙ্কা প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা।

আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের এপারে সিলেটের তামাবিল ও আসামের এপারে শেওলা স্থলবন্দর। সিলেটের এই দুটি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ার ফলে বাংলাদেশি পণ্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে ভারত।

সিলেটের তামাবিল ও শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোষাক, ফল, ফলের জুস, বিভিন্ন রকম ভোগ্যপণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, আসবাবপত্র ও ক্রোকারিজ ভারতে রপ্তানি হতো। এর ফলে সিলেটের শেওলা ও তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, সিলেটের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে যেসব পণ্য রপ্তানি হতো, সেগুলোর বেশিরভাগই ভারতের নিষেধাজ্ঞার তালিকায়। ব্যবসায়ীরা সবধরণের পণ্য মিলিয়ে রপ্তানি করতেন। কিন্তু বেশিরভাগ পণ্য নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকায় অন্যসব পণ্যও রপ্তানি করা থেকে বিরত রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সূত্র জানায়, ভারতের সেভেন সিস্টারের চাহিদা বিবেচনায় সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জের ইন্ডাস্ট্রিরিয়াল এলাকায় বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেছে। এসব কারখানায় উৎপাদিত বিভিন্ন ধরণের ভোগ্যপণ্য ও প্লাস্টিক পণ্য শেওলা ও তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হতো। ভারতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে।

হঠাৎ করে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় চরম বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বলছেন, তারা নিয়মিত এসব স্থলবন্দর দিয়ে প্লাস্টিকসামগ্রী ও জুস রপ্তানি করেন। কয়েক দিন আগেও পণ্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে রপ্তানি বন্ধে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলেও জানান তারা।

শেওলা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট শাহ আলম সাংবাদিকদের জানান, ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রপ্তানি বন্ধ থাকলে তাদেরকে উৎপাদনও কমাতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘যে পণ্যগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি, সেগুলো খুব কম পরিমাণে ভারতে আমদানি হয়। মূলত বেশি আমদানিকৃত পণ্যের ওপরেই তারা (ভারত) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যার কারণে বন্দরের অবস্থা এক ধরণের অচল।’

শাহ আলম জানান, গত সোমবার (১৯ মে) এক ট্রাক পরিমাণ মেলামাইন পণ্য শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া রপ্তানি করতে না পারায় ভোগ্যপণ্য ও প্লাস্টিক পণ্য বোঝাই ট্রাক শেওলা স্থলবন্দর থেকে ফিরে গেছে।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ফয়েজ হাসান ফেরদৌস জানান, ‘ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে সিলেটের রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়াটাই স্বাভাবিক। এতে দুদেশের ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। দুই দেশের সরকার পর্যায়ে আলোচনা করে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা গেলে উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও লোকজন লাভবান হবেন।’

 

Share





Related News

Comments are Closed