Main Menu

বিশ্বের প্রথম উড়ন্ত বৈদ্যুতিক বাইক উন্মোচন

প্রযুক্তি ডেস্ক: বিশ্বের প্রথম উড়ন্ত বৈদ্যুতিক বাইক উন্মোচন করেছে মার্কিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিক্টর। ‘স্কাইরাইডার এক্স১’ নামের বাইকটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ প্রযুক্তিতে এক বিপ্লবী অগ্রগতি বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের প্রযুক্তি পণ্যের মেলা কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স শো-তে (সিইএস) উড়ন্ত বৈদ্যুতিক বাইক উন্মোচন করা হয়।

নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ‘স্কাইরাইডার এক্স১’ মাটি ও আকাশ উভয় ক্ষেত্রেই চলাচল করতে সক্ষম। বাইকটি ব্যবহারকারীদের চলাচলে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দেবে।

রিক্টর আরও জানিয়েছে, স্কাইরাইডার এক্স১-এ প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে এটি একটানা ৪০ মিনিট পর্যন্ত উড়তে সক্ষম। ভ্রমণকে আরো সহজ ও চিন্তামুক্ত করতে বাইকটিতে ৫০ কিলোওয়াটের অনবোর্ড ডিসি চার্জিং স্টেশন রয়েছে। বাইকটিতে উন্নত প্রযুক্তি ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে ৪ অক্ষ বিশিষ্ট এবং ৮ প্রপেলার বিশিষ্ট সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। কার্বন ফাইবার কম্পোজিট এবং অ্যাভিয়েশন-গ্রেড অ্যালুমিনিয়ামের সমন্বয়ে এর কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে স্কাইরাইডার এক্স১-এ ত্রিমুখী রিডানড্যান্ট ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম যুক্ত করা হয়েছে। ফলে, একটি ইঞ্জিন ব্যর্থ হলেও উড়ন্ত বাইকটি নিরাপদে পরিচালনা করা যাবে। এতে রয়েছে ব্যাটারি সুরক্ষা ব্যবস্থা ও ইমার্জেন্সি প্যারাসুট। এটি যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

স্বয়ংক্রিয় রুট পরিকল্পনা ব্যবস্থা রয়েছে স্কাইরাইডার এক্স১-এ। বাইকটি গন্তব্য অনুযায়ী সবচেয়ে কার্যকর উড়াল পথ নির্ধারণ করতে পারে। সেই সঙ্গে পরিবেশ ও আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে ওড়ার উচ্চতা, গতি এবং দিক স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। গন্তব্য নির্ধারণের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে টেক-অফ ও ল্যান্ডিংয়ের সুবিধাও রয়েছে এতে। যারা নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাদের জন্য রয়েছে ম্যানুয়াল অপশনসহ জয়স্টিক।

রিক্টর নামের এই কোম্পানি মূলত ‘রিক্টর কে১’ নামের ই-বাইক তৈরি ও বিক্রি করে। এখন তারা ‘স্কাইরাইডার এক্স১’ নামের এই উড়ন্ত মোপেডের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। রিক্টরের দাবি, এই যান এক মুহূর্তে রাস্তায় চলবে মোপেডের মতো, আর পরক্ষণে আকাশে উড়বে কোয়াডকপ্টারের মতো।

রিক্টরের দাবি করছে, স্কাইরাইডার এক্স১ একটি বৈদ্যুতিক মোপেড, যা প্রয়োজন হলে কোয়াডকপ্টারে রূপান্তরিত হতে পারে। এটির একটি কেবিন রয়েছে। যানটি শহরের যানজটের মধ্যে আটকে গেলে, এর চারটি বাহু বের করে ফ্যানব্লেড চালু করলে এটি আকাশে উড়বে। স্কাইরাইডার এক্স১ সর্বোচ্চ ২০০ মিটার উচ্চতায় উড়তে সক্ষম।

কোম্পানির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এক্স১ এর দুটি ভিন্ন মডেল থাকবে। এক্স১ এসএল মডেলে রয়েছে ১০ দশমিক ৫ কিলোওয়াট আওয়ারের ব্যাটারি, যা একটানা ২৫ মিনিট উড়তে পারবে। আর এক্স১ এসএক্স মডেলটিতে রয়েছে ২১ কিলোওয়াট আওয়ার ব্যাটারির, যা ৪০ মিনিট পর্যন্ত আকাশে উড়তে পারবে। স্কাইরাইডার এক্স১-এর সম্ভাব্য দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, যা এই ধরনের যানের জন্য অনুমান করা মূল্যের চেয়ে অনেক কম।

আকাশে উড়ন্ত অসংখ্য এই মোপেড-কাম-কপ্টার নিয়ন্ত্রণ কীভাবে করা হবে, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়নি রিক্টর। স্কাইরাইডার এক্স১ এখনই পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। এটি বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।

Share





Related News

Comments are Closed