দীর্ঘায়িত হচ্ছে ছাতকে বন্যা, ত্রাণের জন্য হাহাকার

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে ছাতকে সুরমা, চৈলা, পিয়াইন ও বটের নদীর পানি কিছুটা কমলেও বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এ অবস্থায় বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণের জন্য হাহাকার বাড়ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল পর্যন্ত উপজেলায় মোট ৩০ টন চাল, ৫ শতাধিক বস্তা শুকনো খাবার এবং নগদ ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপজেলায় ১০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১শত ৩০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এসব বানভাসির মানুষের খোজ খবর নিয়মিত নিচ্ছেন।
বন্যায় তলিয়ে গেছে এখানের বহু পাকা রাস্তাঘাট, প্লাবিত হয়েছে হাজার হাজার বসত ঘরবাড়ি, শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মৎস্য খামার। গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক সড়কের বিভিন্ন অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এখানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ। চরম দুভোর্গের শিকার বানভাসি মানুষ।
অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়ন, ছাতক সদর, কালারুকা, চরমহল্লা, জাউয়াবাজার, দোলারবাজার, ভাতগাঁও, উত্তর খুরমা, দক্ষিণ খুরমা, সিংচাপইড়, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। এতে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও বসত ঘরের মধ্যে হাঁটুপানি, কোমরপানি থাকায় ৫ দিন ধরে হাড়ি বসছে না তাদের ঘরে।
উপজেলার ১৩টি ও একটি পৌরসভার সবকটি এলাকা কম-বেশি বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। বন্যাকবলিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ ত্রাণ থেকে এখনো বঞ্চিত রয়েছেন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ত্রাণ বরাদ্দ পর্যাপ্ত এবং অব্যাহত আছে। কিন্তু, ধাপে ধাপে সংশ্লিষ্টদের হাত পেরিয়ে তা সময়মতো বন্যাদুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে, দুর্গতদের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি বাড়ছে।
গ্রামীণ সড়ক বন্যা প্লাবিত হওয়ায় ১৮টি সড়ক ও মধ্যে বুড়াইর গাও-আলমপুর পাকা সড়ক শনিবার সকালে ভেঙ্গে গেছে। উপজেলা সদরের সাথে যান ও মানুষ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ছাতক-সিলেট সড়কে পানি একট কমেছে।
গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক সড়ক পথে ঝুঁকি নিয়ে কিছু কিছু যান চলাচল করলেও শনিবার সকাল থেকে ছাতকের সঙ্গে জেলা সদরসহ দেশের সব অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ মোটামুটি চালু হয়।
এব্যাপার উপজেলার ছৈলা আফজলাবাদ ইউপির তেঘরি গ্রামে শফিক মিয়াও নোয়াপাড়া গ্রামে রোবহান উদ্দিন জানান, সুরমা নদীর পানি উপচে আমাদের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। আমরা খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছি। কিন্তু, এখনো কোনো সহায়তা পাইনি।’ নদীতে কার্গো লোডিং আন লোডিং কাজও বন্ধ হয়ে পড়েছে । এতে কয়েক হাজারো শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।
এছাড়া উপজেলার জাউয়া বাজার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে থাকা অসহায় বন্যার্ত মানুষের মাঝে শনিবার দুপুরে ত্রাণ বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ও উপজেলা ইউএনও মামুনুর রহমান।
এখানে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা ২১ পরিবারের মধ্যে চাল ও প্যাকেট জাত শুকনো খাবার বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাউয়াবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হক, ইউপি সচিব মোহাম্মদ কায়েস মাহমুদ প্রমুখ।
শনিবার বিকালে গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাও ইউপির লক্ষীপুর গ্রামের মাষ্টার হাবিবুর রহমান ফাউডেশনের পক্ষ থেকে দশঘর, মালিকান্দিসহ ১০টি গ্রামে ৫ শতাধিক অসহায় বন্যার্ত মানুষের মাঝে প্যাকেট জাত শুকনো খাবার বিতরণ করেন। প্রধান সম্বয়ক মাসুম আহমদ ও শিক্ষক রেজ্জাদ আহমদের নেতৃত্বে বানভাসি মানুষের ঘরে ঘরে ত্রান পৌছে দেয়া হচ্ছে।
সুরমা, চৈলা, পিয়াইন, বটের নদীতে বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদ সীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
Related News

সুনামগঞ্জে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরেরRead More

সুনামগঞ্জ-৩ আসনে মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেন পরিকল্পনামন্ত্রী
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রীRead More
Comments are Closed