সুনামগঞ্জে গৃহবধু ও শিশু ধর্ষণের শিকার, গ্রেপ্তার ৭

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জে পৃথক স্থানে এক গৃহবধু ও এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। সুদের টাকা আনতে গেলে গৃহবধু ও ঘরে ঢুকে এক শিশুকে ধর্ষণ করা হয়। এ দুটি ঘটনায় ৭জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা রাতে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পাথারিয়া ইউনিয়নে আসামুড়া গ্রামে ঘরে একা পেয়ে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একই গ্রামের মৃত ঠাকুর ধনের ছেলে আব্দুল হাসিমকে (৫০) আটক করেছে পুলিশ।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধর্ষিতা শিশুর বাবার বাড়ি পার্শ্ববর্তী জানপুর গ্রামে। মা-বাবা ঢাকা শহরে কাজে থাকায় নানার বাড়ি আমামুড়া গ্রামে নানির কাছে থাকতো এই মেয়ে শিশু। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়েটিকে ঘরে রেখে পাশের বাড়ির এক অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে যান শিশুটির নানি। এই সুযোগে ঘরে ডুকে একই গ্রামের বখাটে আব্দুল হাসিম শিশুটিকে মুখ চাপা দিয়ে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে শিশুটির চিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে আসায় ধর্ষক আব্দুল হাসিম পালিয়ে যায়।
পরে ধর্ষণের ঘটনায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় অভিযোগ করে শিশুটির পরিবার। ধর্ষিত শিশুটি এখন সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি কাজী মোক্তাদিরের নির্দেশনায় এস আই জহিরুলের নেতৃত্বে মঙ্গলবার রাতেই দর্শক আব্দুল হাসিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানোর পর জেলহাতে পাঠিয়েছে আদালত।
এদিকে একইদিন রাতে সুনামগঞ্জে সুদে টাকা ধার আনতে গিয়ে এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, পৌর শহরের জলিলপুর এলাকার শাহজাহান (৩৫), আরমান (৩০), জুয়েল মিয়া (৩২), সামছুদ্দিন (২৮), জহুর মিয়া লিটন (৪২) ও আনোয়ার হোসেন (৫৫)। এর মধ্যে জহুর মিয়া লিটন সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জে শিমুলবাক ইউনিয়নের তেরহাল গ্রামের গৃহবধূ (৩৮) ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য সুনামগঞ্জ পৌরসভার জলিলপুর এলাকার শাহাব উদ্দিনের কাছে সুদে টাকা ধার আনতে যায়। এ সময় শাহাব উদ্দিন গৃহবধূকে জানান, স্থানীয় জুয়েলের কাছ থেকে তিনি বুধবার সকালে টাকা সংগ্রহ করে দেবেন এবং বাড়িতে না ফিরে তার বাসায় রাতে থেকে যাওয়ার জন্য বলেন। গৃহবধূ রাতে ভাত খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলে শাহাব উদ্দিনের বখাটে বড় ভাই শাহজাহান গৃহবধূকে টাকা ধার দেবেন বলে জানান ও তার ঘরেই থাকতে বলেন। গৃহবধূ এতে রাজি না হলে তাকে জোর করেই তার ঘরে নিয়ে যায় শাহজাহান।
পুলিশ আরও জানায়, কিছুক্ষণ পরেই শাজাহানসহ চার জন গৃহবধূকে জোর করে একটি নৌকায় তোলে। সেখান থেকে জলিলপুর গ্রাম সংলগ্ন নৈন্দা বিল এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে চারজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় গৃহবধূকে বেধড়ক মারধরও করে ধর্ষণকারীরা। পরে স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর জহুর মিয়া লিটনের কাছে গৃহবধূকে রেখে ধর্ষণকারীরা চলে যায়। পরে জহুর মিয়া লিটন ও আনোয়ার হোসেন একটি দোকান ঘরের পেছনে নিয়ে গৃহবধূকে আবারও ধর্ষণ করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
বুধবার ভোরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ জলিলপুর এলাকার একটি দোকানের পেছন থেকে গৃহবধূকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে চারজন ও পরে আরও দুই জনকে আটক করে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে গৃহবধূ বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বিকেলে পুলিশ ছয় আসামিকে সুনামগঞ্জ সদর আমলগ্রহণকারী আদালতে তুললে বিচারক কুদরত ই এলাহি তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সুনামগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক আল মামুন জানান, পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয় জনকেই আটক করেছে। নির্যাতনের শিকার মহিলাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের শিকার মহিলার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো, এর বেশি কিছু বলা যাবে না।
Related News

বাগলী স্থল শুল্ক ষ্টেশনে মানববন্ধন অনুষ্টিত
তাহিরপুর সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের বাগলী স্থল শুল্ক ষ্টেশনে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসুচী পালিত হয়েছে। রবিবার সন্ধায়Read More

জগন্নাথপুরে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আক্তার জয়ী
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শনিবার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীRead More
Comments are Closed