‘১৯১৮’র মহামারিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছিল’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে আরোপিত লকডাউনে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। কিন্তু মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের গবেষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা মনে করছেন, লকডাউন উল্টো অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদই বয়ে আনবে। ১৯১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির প্রভাব বিশ্লেষণ করে তারা এমন পযবেক্ষণ দিয়েছেন। তারা বলছেন, করোনা ভাইরাস রোধে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ অর্থনীতির চাকাকে ধীর বা একেবারে স্থবির করে দিয়েছে। তারপরও এটি নিদেনপক্ষে অর্থনীতির জন্য ইতিবাচকই হবে। খবর ব্লুমবার্গ।
গত সপ্তাহে প্রাথমিকভাবে এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানাননি গবেষকরা। আর বিষয়টি এমন এক সময় প্রকাশ হলো, যখন করোনার ব্যাপক বিস্তার রোধে কর্তৃপক্ষ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখবেন, নাকি সীমিত আকারে চালু রাখবেন তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন।
যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, তিনি চলমান পরিস্থিতি বড়জোর ইস্টার পযন্ত সহ্য করবেন। এরপর ঝুঁকি নিয়ে হলেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করার অনুমতি দেয়া হবে।
যদিও কিছু অর্থনীতিবিদ ট্রাম্পের এ মতের বিরোধিতা করে বলছেন, এতে আরো ক্ষতি বাড়বে। যদি দ্বিতীয়বার সংক্রমণ বিস্তার শুরু হয়, তাহলে আগের চেয়ে বেশি মানুষ মারা যেতে পারে।
মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে নতুন গবেষণার ফলাফল বিশ্বাস করা কষ্টকর। কিন্তু এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য হওয়ায় অনেকেই আশা দেখছেন। কারণ, এর পেছনে রয়েছেন ফেডারেল রিজার্ভ বোর্ডের সার্জিও কোরেইয়া, নিউইয়র্ক ফেডের স্টিফেন লাক, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) এমিল ভার্নারসহ আরো অনেক বিখ্যাত অর্থনীতিবীদ।
আলোচিত গবেষণাপত্রটিতে বলা হয়েছে, ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ইনফ্লুয়েঞ্জা যুক্তরাষ্ট্রে সাড়ে ৫ লাখ থেকে পৌনে ৭ লাখ মানুষের প্রাণ নিয়েছে। তখনকার জনসংখ্যার হিসাবে যা দশমিক ৬৬ শতাংশ। স্প্যানিশ ফ্লু’র প্রবাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মারাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদি মন্দা দেখা দেয়। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্যের ম্যানুফেকচারিং খাতের উৎপাদন ১৮ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিযেছিল। এ মহামারির প্রভাব কয়েক বছর পর্যন্ত ছিল স্থায়ী। বিশেষ করে যেসব এলাকায় সংক্রমণ বেশি ছিল সেখানে মন্দা ছিল দীর্ঘমেয়াদি।
কিন্তু স্প্যানিশ ফ্লু’র (স্প্যানিশ ফ্লু ভাইরাসও এক প্রকার করোনা ভাইরাস) বিস্তার রোধে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। যেমন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, গবেষকরা এটিকে বলছেন, ওষুধবিহীন প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা এনপিআই। এসব পদক্ষেপ অর্থনীতিকে সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই ওষুধবিহীন প্রতিরোধ ব্যবস্থা ওই সময় যেসব শহরে দ্রুত ও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছিল, সেখানে অর্থনীতি অতোটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বরং ম্যানুফেকচারিং কার্যক্রম ও ব্যাংক অ্যাসেট সম্পর্কিত ওই সময়কার উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, যেসব এলাকায় এনপিআই বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ বেশ কঠোর ও আগ্রাসী ছিল সেখানে মহামারির পর অর্থনীতি আগের চেয়ে ভালো করেছে।
অবশ্য গবেষণাটিতে কোভিড-১৯ এবং স্প্যানিশ ফ্লু’র মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্যের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ দ্বিতীয়টাতে (স্প্যানিশ ফ্লু) মৃত্যুহার ছিল অনেক বেশি।
তবে এই দুই মহামারির মধ্যে দারুণ কয়েকটা মিলও রয়েছে। যেমন, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলো একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় ত্বরিৎ পদক্ষেপ নেয়ার কারণে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে এবং তাদের অর্থনীতিরও বেশ কম ক্ষতি হয়েছে।
Related News
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে আহত ৮
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিকRead More
আরব আমিরাতে বন্যা, দুবাই বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তুমুল বৃষ্টি ও ঝড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই অচল হয়ে পড়েছে। মরুরRead More
Comments are Closed