Main Menu

সৌদি থেকে নিঃস্ব হয়ে ফিরলেন ১৭৫ বাংলাদেশি

প্রবাস ডেস্ক: একেবারে খালি হাতে সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন ১৭৫ বাংলাদেশি কর্মী। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৭ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি-৮০৪ ফ্লাইটে করে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

একেবারে নিঃস্ব এসব কর্মী যখন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে নামলেন তখন তাদের অনেকেরই ছিল খালি পা, কারও মুখে এবড়োথেবড়ো দাঁড়ি। কেউ আবার সৌদিতে যে পোশাক পরে কাজ করতেন সে পোশাকেই বাংলাদেশে ফিরেছেন।

কর্মরত অবস্থায় সৌদি আরব প্রশাসনের ধরপাকড়ের শিকার হয়ে কোনো টাকা পয়সা না নিয়েই তাদের দেশে ফিরতে বাধ্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তোভোগী কর্মীরা।
রোববার রাতে ঢাকায় পা রাখার পর বাড়ি যাওয়ার ও রাতের খাবার খাওয়ারও টাকা ছিল না তাদের কাছে।

জানা গেছে, এসব কর্মীদের বিমান বন্দরে খাবার সরবরাহসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জরুরি সেবা দিয়েছে ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম।

১৭৫ জনের সেই দলটির একজন চাঁদপুরের বাবুল হোসেন। তিনি বলেন, ৬ মাসের বৈধ আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) থাকা সত্ত্বেও কর্মস্থল থেকে ধরে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তার কোন কথা শোনেনি সে দেশের প্রশাসন।

সৌদি প্রশাসনের ওপর একই অভিযোগ করেছেন টাঙ্গাইলের আলিম, মনির হোসেন, নরসিংদীর মো. জোবাইর, লক্ষ্মীপুরের ফরিদ, মুন্সিগঞ্জের শরিফ হোসেন, মেহেরপুরের সেলিম রেজাসহ অনেকে।

মুখে ক্লান্তির ছাপ নিয়ে কর্মস্থলের পোশাক পরা নরসিংদীর মো. জোবাইর বলেন, একেবারেই শুণ্য হাত আমার। নিঃস্ব হয়ে ফিরলাম। সময় পেলে পরিবারের জন্য কিছু হলেও নিয়ে আসতাম। এখন কি করে বাড়িতে মুখ দেখাই।

প্রতিদিন শত শত কর্মীকে সৌদি প্রশাসন গ্রেফতার করছে ও যাচাই-বাছাই সেভাবে না করেই তাদের পাঠিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন জোবাইর। তিনি বলেন, রিয়াদ ডিপার্টেশন ক্যাম্পে এখনও হাজার খানেক বাংলাদেশী কর্মী রয়েছেন।

ফেরত কর্মী মনির হোসেন বলেন, বৈধ আকামা থাকা সত্ত্বেও কয়েকদিন আগে আমাকে জোরপূর্বক ধরে জেলখানা পাঠিয়ে দিয়েছিল তারা। এরপর কিছুদিন সেখানে রেখে দেশে ফেরত পাঠাল। তার মতো এমন আরও অনেক ভুক্তোভোগী রয়েছেন বলে জানান তিনি।

এছাড়াও কয়েকজন কর্মীর অভিযোগ, তাদের কফিল (মালিক) আকামা নতুন করে নবায়ন করেনি বা আকামা বাতিল করে দিয়েছে। ফলে সেদেশে থাকতে পারেননি তারা।
এক্ষেত্রে সৌদিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের কোনো সহযোগিতা করেনি বলেও অভিযোগ করেন ফিরে আসা এসব কর্মীরা।

তারা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনই ব্যবস্থা না নিলে বড় সমস্যা তৈরি হতে পারে সৌদি আরবের শ্রমবাজারে। জেলখানায় অনেক বাংলাদেশি আটকে আছেন। তাদের অনেকের আকামা নবায়ন করা হয়নি। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সবাইকে বাংলাদেশে নিঃস্ব হয়েই ফিরতে হবে।

সৌদি প্রেস এজেন্সির সংবাদ অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন দেশের অবৈধভাবে কাজ করা কর্মীদের ফেরত পাঠাচ্ছে সৌদি সরকার। এ পর্যন্ত কাজ ও থাকার নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে প্রায় ৩৮ লাখ বিদেশিকে গ্রেফতার করেছে সৌদি প্রশাসন।

গত সাড়ে তিন মাসে গ্রেফতার হয়েছে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫২১ জন বিদেশি। ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতারের মোট ৯ লাখ ৪০ হাজার ১০০ জন বিদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে সৌদি সরকার।

Share





Related News

Comments are Closed