Main Menu

মেয়র আরিফের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

বৈশাখী নিউজ ২৪ ডটকম: সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে প্রদীপ্ত সিলেটের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধনে কাফনের কাপড় ও ফুলের মালা পড়ে প্রতীকী আত্মাহুতি করেন দুর্নীতির শিকার ব্যবসায়ী সঞ্জয় রায়।

মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে উক্ত মানববন্ধন ও প্রতীকী আত্মাহুতি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকাল সাড়ে দশটায় এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

মানববন্ধনে নিজেকে দুর্নীতির শিকার দাবি করে ব্যবসায়ী সঞ্জয় রায় বলেন, ২০১৪ সালে সিলেট সিটি করপোরেশনে নগর ভবন নির্মাণের জন্য একটি ওয়ার্ক অর্ডার হয়। এ ওয়ার্ক ওয়ার্ডারটি ১৬ কোটি আট লক্ষ টাকা মূল্যে মাহবুব ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেডকে প্রদান করা হয়। মাহবুব ব্রাদার্স কাজটি সম্পাদনের জন্য ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর সম্পাতপা এন্টারপ্রাইজ এর প্রোপাইটর আমি সঞ্জয় রায় এর সাথে চুক্তি করে।

তিনি জানান, কাজ শুরুর পর নগর ভবন থেকে মাহবুব ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেডের নামে বিল ইস্যু করা হত এবং মাহাবুব ব্রাদার্স অফিস থেকে তিনি নিয়মিত চেক গ্রহণ করে আমার মনোনীত একাউন্টে লেনদেন করতেন। মোট কাজের আনুমানিক ৫ শতাংশ কাজ বাকী থাকাবস্থায় সঞ্জয় রায়ের লিভার সিরোসিস রোগ ধরা পড়লে তিনি জরুরী ভাবে ইন্ডিয়াতে চিকিৎসা নিতে চলে যান। সেসময় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মূল ঠিকাদার মাহাবুব ব্রাদার্সকে জিম্মি করে দুই কোটি ছেষট্টি লক্ষ টাকার চূড়ান্ত বিল সঞ্জয় রায়ের অগোচরে রেখে আত্মসাৎ করেন।

সঞ্জয় রায় বলেন, এক পর্যায়ে ২ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর কাজের বিপরীতে সিটি করপোরেশনে রক্ষিত জামানতের এক কোটি আটান্ন লক্ষ টাকা মেয়র আরিফ মাহাবুব ব্রাদার্সকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সহযোগী হোটেল ক্যাপিটালের পরিচালক তোফায়েল খানের ব্যাংক একাউন্টে নিয়ে আসেন। ওই সময় মেয়র আরিফ মাহবুব ব্রাদার্সকে এই বলে আশ্বস্ত করে যে, এই জামানতের টাকা মেয়র নিজের তত্ত্বাবধানে আমাকে প্রদান করবে।

সঞ্জয় রায় আরো বলেন, জামানতের এই টাকার চেক তোফায়েল খানের একাউন্টে আনার সময় ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছয়ফুল আমীন বাকের সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কিছু দিন পর আমি জানতে পারি চূড়ান্ত বিলের ন্যায় আমার জামানতের টাকাও আত্মসাৎ করা হয়েছে। তখন আমি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে গিয়ে আমার টাকা দাবী করলে মেয়র আরিফ আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখান। শুধু তাই নয়, আমাকে তার বাসায় আটকে রেখে আমার বাসা থেকে একটি ব্ল্যাংক চেক আনিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করানো হয়। ব্ল্যাংক চেক রেখে আমাকে বলেন যে, আমি যদি চূড়ান্ত বিল কিংবা জামানতের টাকা কোনদিন চাইতে আসি তাহলে ব্ল্যাংক চেকে ইচ্ছেমত টাকা বসিয়ে মামলা দিয়ে জেলে দিবেন।

তিনি বলেন, আমি প্রাণের ভয়ে এতদিন এসব কাউকে বলি নাই। আমার পাগলপ্রায় অবস্থা দেখে, পরিবার পরিজন ও বন্ধুবান্ধব বিস্তারিত ঘটনা জানতে চাইলে আমি সব খুলে বলি। তাদের পরামর্শে আমি আইনের আশ্রয়ের জন্য পুলিশ স্টেশন, জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি এবং দুদকে জানানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। তাছাড়া আজকের এই মানববন্ধন ও প্রতীকী আত্মাহুতি’র মধ্য দিয়ে সিলেট নগরবাসী ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আমার এই আবেদন, আমি আমার প্রাপ্য টাকা যথাশীঘ্রই ফেরত পেতে চাই। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কর্তৃক যেসকল দুর্নীতি হয়েছে, তার যথাযথ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করছি।

ঘন্টাব্যাপী স্থায়ী এ মানবন্ধনে শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন।

তবে সঞ্জয়ের এমন অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। মঙ্গলবার বিকেলে নগর ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আরিফুল হক বলেন, নগর ভবনের ঠিকাদার মাহবুব ব্রাদার্স। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কাজের সকল বিল একাউন্ট পে চেকের মাধ্যমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া জামানতের টাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিতে হয়, যা কাজ সম্পন্নের এক বছর পর ফেরত দেয়া হয়। সকল নিয়ম অনুসরণ করেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মেয়র অভিযোগ করেন, যখন এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে তখনতো আমি জেলে ছিলাম। আমার এবং আমার পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজে ঈর্ষান্বিত হয়েই একটি মহল আমার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসময় মেয়র আরিফ সঞ্জয় রায়কে চেনেন না বলেও দাবি করেন।

Share





Related News

Comments are Closed