Main Menu

এসকে সিনহার বিরুদ্ধে মনিপুরী জনগোষ্ঠীর মানববন্ধন

বৈশাখী নিউজ ২৪ ডটকম: সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন সিলেটের মনিপুরী জনগোষ্ঠী। তার লেখা ‘এ ব্রোকেন ড্রিম’ বইয়ে মনিপুরি সম্প্রদায়কে নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক ও অসত্যের বানোয়াট কাহিনী তুলে ধরেছেন বলে তারা মন্তব্য করেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এসেছে তিনি স্বীকার করেছেন, ১৯৭১ সালে তিনি শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর বইয়ে মনিপুরি সম্প্রদায়কে রাজাকার ও পাকিস্তানপন্থী বানানোর অপপ্রয়াস করেছেন। তাঁর এসব অসত্য বানোয়াট কল্পকথা প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে মানববন্ধনে বক্তারা হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
সোমবার সকাল ১১টায় সিলেট নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ মনিপুরি জনগোষ্ঠী আয়োজিত এসকে সিনহার বইয়ে মনিপুরি জনগোষ্ঠীকে নিয়ে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপনের প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
প্রতিবাদ সভায় মৌলভীবাজার মনিপুরি সমিতির সভাপতি নীলচাঁদ সিংহের সভাপতিত্বে মানবাধিকার কর্মী সমেন্দ্র সিংহের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা মনমোহন সিংহ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে পারেননি। তিনি বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে বসে অসত্য ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে বই প্রকাশ করেছেন। তিনি তার স্বপ্নের বই ‘এ ব্রোকেন ড্রিম’-এ মনিপুরি জনগোষ্ঠীর নামে মিথ্যে বানোয়াট তথ্য দিয়ে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছেন। বক্তারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মিথ্যে বানোয়াট তথ্য দিয়ে লিখা এসকে সিনহার এ ব্রোকেন ডিম বইটি নিষিদ্ধ করা হোক। সে সঙ্গে যে ওয়েব সাইটে বইটি বিক্রি হচ্ছে সেটিও বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হোক।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন সিলেট মনিপুরি পঞ্চায়েত প্রধান অনিল কিষাণ সিংহ, বাংলাদেশ মনিপুরি সাহিত্য সংসদের (বামসাস) সভাপতি শেরাম নিরঞ্জন, বাসাস সাধারণ সম্পাদক নামব্রাম শংকর, মানবাধিকার কর্মী লক্ষীকান্ত সিংহ, সংস্কৃতিকমী উত্তম সিংহ রতন, মনিপুরি কালাচারাল কমপ্লেক্সের সদস্য সচিব রবি কিরণ সিংহ রাজেশ, আমসফার সভাপতি সজল সিংহ, সাধারণ সম্পাদক প্রবাল সিংহ, ধরনী সিংহ, নংপকলৈ, নৃপেন্দ্র সিংহ প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভার পূর্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজ ছাত্রী পূণিমা দেবী। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মনিপুরি একটি শান্তিপ্রিয় ও শৃঙ্খল জাতি। প্রায় চারশত বছর পূর্বে এ অঞ্চলে বসবাস করছে। মনিপুরিদের আদিনিবাস ভারতের মনিপুর রাজ্যে হলেও বাংলাদেশে বসবাসকারিরা সামগ্রিক মননে পরিপূর্ণভাবে বাংলাদেশি। যার কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে মনিপুরি সম্প্রদায়ের বহু মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। যাদের অনেকে আহত ও শহীদ হয়েছেন। আবার অনেকে এখনও বেঁচে আছেন। কিন্তু সচেতনতার অভাবে অনেকেই নিজেদের নাম তালিকাভুক্তি করেননি । আবার অনেকে তালিকাভুক্তি করেছেন।
মনিপুরিদের ভাষা মৈতৈ লোন। এ ভাষা ভারতে সরকারের স্বীকৃত অষ্টম তপশিলভুক্ত ভাষা। এটি মঙ্গোলীয় মহাপরিবারের টিব্বেটো-বর্মন শ্রেণীর কুকি-চীন শাখার অন্তর্গত একটি ভাষা। অপরদিকে উর্দু ভাষা ইন্দো-আরিয়ান অন্তর্গত ভাষা। দুটি ভাষার মধ্যে কোনো মিল থাকার কথা নয়। তারপরও এসকে সিনহা তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন হিন্দু ও মুসলিম মৈতৈ সম্প্রদায় ভাষা ছিল পাকিস্তানিদের জন্য সহজ। মৈতৈ হিন্দু ও মৈতৈ মুসলিমরা পাকিস্তানি সমর্থক। সে সঙ্গে তিনি কমলগঞ্জের হোমেরজান গ্রামে ভারতের ইম্পালা থেকে আসা মনিপুরি নেতা সুধির নামের একজনের নাম উল্লেখ করেছেন। যার মাধ্যমে রাজাকার নিয়োগ হতো বলেও তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু বাস্তবে ভারতের ইম্পালা নামের কোনো জায়গা নেই। তিনি তার বইয়ে নিজ সম্প্রদায় বিষ্ণু প্রিয়াকে অত্যন্ত নিচু জাতের উল্লেখ করেও অবজ্ঞা করেছেন।

Share





Related News

Comments are Closed