Main Menu

ঈদে সড়কে প্রাণ গেছে ২৫৯ জনের: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে ২৩৭টি দুর্ঘটনায় এসময় আহত হয়েছেন আরো ৯৬০ জন।

শুক্রবার (৩১ আগষ্ট) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০১৮ এ এই তথ্য তুলে ধরেন।

সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল প্রতিবেদনটি তৈরি করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর ঈদ কেন্দ্রীক সড়ক দুর্ঘটনা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। এছাড়া প্রতিবেদনে ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানির বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক দাবির আন্দোলনে সারাদেশে ব্যাপক নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছে। এ অবস্থায় সরকার সড়ক নিরাপত্তায় ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। পুলিশ, র‌্যাব, বিআরটিএ ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নানামুখী তৎপরতা ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার থাকায় এবারের ঈদযাত্রায় বিগত ঈদুল ফিতরের তুলনায় প্রাণহানি কমেছে ২৩.৫৯ শতাংশ।

তবে গত ঈদুল ফিতরের তুলনায় দুর্ঘটনা ১৩.৫০ শতাংশ ও আহত ১১.৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদুল আজহায় যাত্রা শুরুর দিন ১৬ আগস্ট থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরা ২৮ আগস্ট পর্যন্ত ১৩ দিনে ২৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫৯ জন নিহত ও ৯৬০ জন আহত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে এ প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করে বলে জানায়।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন, বিরতিহীন/বিশ্রামহীন ভাবে যানবাহন চালানো, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও অদক্ষ চালক-হেলপার দ্বারা যানবাহন চালানো, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নসিমন-করিমন ও মোটর সাইকেল অবাধে চলাচল, বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো সড়ক-মহাসড়কে ফুটপাত না থাকা এবং সড়ক-মহাসড়কে বেহাল দশার কারণে এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

এ সময় সড়ক মহাসড়কে পরিবহন দুর্ঘটনা রোধ ও দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু কমিয়ে আনতে ১০ দফা সুপারিশ করে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।

১. সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে রোড সেফটি ইউনিট গঠন করে নিয়মিত দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিকারের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ

২. প্রশিক্ষিত চালক গড়ে তোলার জন্য সরকারি খরচে ‘চালক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ চালু

৩. নিয়মিত রাস্তার রোড সেফটি অডিট করা

৪. ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা

৫. ওভারলোড নিয়ন্ত্রণে মানসম্মত পর্যাপ্ত গণপরিবহনের ব্যবস্থা করা

৬. মহাসড়কে ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা

৭. মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা বন্ধে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়ন

৮. ভাঙা রাস্তার সংস্কার করা

৯. ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় ও ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে উদ্যোগ এবং

১০ জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ফুটপাত, আন্ডারপাস, ওভারপাস তৈরি করে পথচারীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক চৌধুরী ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সেফ রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান ও এফবিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আব্দুল হক।

Share





Related News

Comments are Closed