শান্তিগঞ্জের সাত গ্রামে নেই একটিও মাধ্যমিক বিদ্যালয়!

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরে মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় দিন দিন ঝড়ে পড়ছে কোমলমতি মেধাবী শিক্ষার্থীরা। এতে দুশ্চিন্তার শেষ নেই অভিভাবকদের। উপজেলা সদরে ডুংরিয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজ ও জয়কলস উজানীগাঁও রশিদিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং পার্শবর্তী পাগলা মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজ থাকলেও আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় ৫ম শ্রেণী পাশ করে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে এবং নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণী পাশ করে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না উপজেলার সুলতানপুর, তেঘরিয়া, সদরপুর, পার্বতীপুর, তালুকগাঁও, কামরুপদলং, আস্তমা গ্রামের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায, উপজেলা সদরের কাছাকাছি ৩ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শিক্ষার্থীদের তুলনায় বিদ্যালয়ের সংখ্যা কম হওয়ায় এবং বিদ্যালয়গুলো অনেক দূরে থাকায় অনেক শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। এতে করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার প্রবল ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন সাত গ্রামের একাধিক অভিাবকের কথা বলে জানা যায়, উপজেলার সদরপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং অন্যান্য গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা ৫ম শ্রেণী এবং ৮ম শ্রেণী পাশ করে ৬ষ্ঠ ও ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু দূরবর্তী ঐ বিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে আবেদন করে লটারীর মাধ্যমে অনেকেই সুযোগ না পেয়ে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এতে ধনাঢ্য পরিবারের ছেলে মেয়েরা শহরের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সুযোগ পেলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরা নিরুপায় হয়ে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক ও শিশু শ্রমে জড়িত হয়ে মেধাহীন হয়ে পড়ছে। এতে চরম দুশ্চিন্তায় ভোগছেন অভিভাবকরা।
তাই প্রশাসন সহ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে সাত গ্রামবাসী জরুরী ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ঝড়েপড়া রোধে উপজেলা সদরে একটি বালক ও একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের জোর দাবী জানান।
একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, উপজেলা সদরের মধ্যে কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় আমরা প্রতিনিয়ত সমস্যায় ভোগছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা ৫ম শ্রেণী পাশ করে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারছে না। ফলে অভিভাবকরা আমাদের সাথে নানাভাবে যোগাযোগ করলেও কোন ধরনের সুরাহা হচ্ছে না। প্রতি বছরই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থীরা। তাই আমাদের দাবী অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে যেন উপজেলা সদরে একটি বালক ও একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়।
উপজেলার সচেতন মহলের মতে, এই ডিজিটাল যোগে অপার সুযোগ সুবিধা থাকা স্বত্ত্বেও শান্তিগঞ্জের সাত গ্রামের শিক্ষার্থীর শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়া অত্যন্ত উদ্ধেগের বিষয়। এতে করে দিন দিন এই গ্রামগুলোতে শিক্ষার হার কমার পাশাপাশি ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীরা মেধাহীন হয়ে পড়বে। সুতরাং অনতিবিলম্বে উপজেলা সদরে মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে প্রশাসন সহ এলাকার শিক্ষানুরাগী ধনাঢ্য ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা উচিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, মাধ্যমিকে ঝড়ে পড়া রোধে এই এলাকায় একটি বিদ্যালয় স্থাপন করা প্রয়োজন। বিষয়টি আমাদের নজরে আছে।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, উপজেলা সদরের মধ্যবর্তী স্থানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংকট রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই এলাকায় আমরা একটি বিদ্যালয় স্থাপনের চিন্তা করছি। পাশাপাশি এটি বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
Related News

ছাতকে আ.লীগ নেতা সাত্তার গ্রেফতার
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জ ছাতক উপজেলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে নিয়মিত মামলায় একজন আসামিকে গ্রেফতার করাRead More

দোয়ারাবাজারে সুরমা নদীতে ধরা পড়ল ৪২ কেজির বাগাড়
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা নদীতে এক জেলের জালে ধরা পড়েছে ৪২ কেজিRead More
Comments are Closed