জগন্নাথপুরে শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি একাই দখলে নিতে চান সুহেনা বেগম, প্রতিকার দাবি
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি জোরপূর্বক একাই ভোগ দখলের মরিয়া হয়ে উঠেছেন এক প্রবাসী পরিবারের নারীর বিরুদ্ধে। বাধা দেওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বাড়ির কেয়ারটেকার ও বাড়ির স্বত্বাধিকারীদের চাচাতো ভাই আফাজ চৌধুরী।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগই করলেন সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের আহমদাবাদ গ্রামের তছর উদ্দিনের ছেলে মো. আফাজ চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, আহমদাবাদ কুবাজপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত নূর মিয়া চৌধুরীর ছেলে শাহ সুবা চৌধুরী, শাহ শাহব চৌধুরী, মৃত শাহ নেওয়াজ চৌধুরী, মৃত শাহ কুতুব চৌধুরী ও শাহ ইদুজ্জোহা চৌধুরী মালিকানাধীন বাড়ির কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তাদেরই চাচাতো আফাজ চৌধুরী। বাড়িতে মৃত শাহ নেওয়াজ চৌধুরীর স্ত্রী সুহেনা চৌধুরীও বসবাস করে আসছেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় শাহ নেওয়াজ চৌধুরী ২০২৩ সালের ৬ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর থেকেই শাহ নেওয়াজ চৌধুরীর স্ত্রী সুহেনা চৌধুরী তার ভাই রিজু মিয়া ও ভাইয়ের স্ত্রী সুমি বেগমকে ওই বাড়িতে এনে তুলেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় তখন থেকেই সুহেনা বেগম চৌধুরী বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২২ আগস্ট সুহেনা চৌধুরী ঘরে থাকা বিষয়সম্পত্তির দলিলপত্র নিয়ে ঘরে তালা দিয়ে অজ্ঞাতস্থানে চলে যান। এ ব্যাপারে সুহেনা চৌধুরীর ভাই রিজু মিয়াকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। পরে এ বিষয়টি আফাজ চৌধুরী তার প্রবাসী চাচাতো ভাইদের অবহিত করেন। ওই দিন বিকেলেই বাড়ির পাহারাদার একই গ্রামের মৃত রশিদ উল্লাহর ছেলে মো. নূর হাকিম আফাজ চৌধুরীকে বসতঘরে ঘরের ছাদের দরজা ভাঙা দেখতে পেয়েছেন বলে জানান। আফাজ চৌধুরীর ভাষ্য, তিনি সাথে সাথেই বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় সদস্য তার প্রবাসী চাচাতো ভাইদের জানান। পরে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের উপস্থিতিতে রিজু মিয়া ও তার স্ত্রী তাদের নিকট থাকা চাবি দিয়ে ঘরের দরজা খুলেন। এবং ঘরের প্রবেশ বিভিন্ন ড্রয়ার খোলার চেষ্টা করেন। তখন আফাজ চৌধুরী বাধা দিলে তারা তাকে হুমকি দেন। আফাজ চৌধুরী বলেন এ ঘটনার জের ধরে পরেও তাকে একাধিকবার মারধরের হুমকি দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে তিনি সুহেনা চৌধুরী, তার ভাই রিজু মিয়া ও তার স্ত্রী সুমি বেগমের বিরুদ্ধে ২৯ আগস্ট জগন্নাথপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ( নং- ১০৪২) করে। পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল আমলী-১ আদালতের মাধ্যমে মামলাও করেন (৫৬/২৪)।
তদন্তে সত্যতা পেয়ে পুলিশ সুহেনা চৌধুরী, তার ভাই রিজু মিয়া ও তার স্ত্রী সুমি বেগম ও একই গ্রামের কলমদর আলীর ছেলে জাকির মিয়ার বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। পরবর্তীতে ওই আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিবিধ মোকদ্দমা (৮০/২০২৪) বর্তমানে আদালতে মামলাটি চলমান রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, বাড়িতে বসবাসকারী পাহারাদার মো. নূর হাকিমকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্যও উঠেপড়ে লেগেছেন সুহেনা চৌধুরী। তিনি তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সহযোগিতায় এমনকি নূর হাকিম ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর অত্যাচার ও নির্যাতন চালাতে থাকেন। বন্যার পানি থেকে রক্ষার জন্য নূর হাকিম তার কষ্টে উপার্জিত ৩৫ মন শুকনো ধান ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় মালামাল বসতঘরের ভেতর নিরাপদে রেখে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। গত ২৩ জুন সুহেনা চৌধুরী তার ভাইয়ের স্ত্রীসহ কয়েকজনকে নিয়ে ঘরের দরজা ও তালা ভেঙে ধান নিয়ে যান। ২৬ জুন ধানের বিষয় নূর হাকিম জানতে চাইলে তারা তাকে ও তার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বাঁশের লাঠি মারধর শ্লীলতাহানি করেন। এমনকি হত্যারও হুমকি দেন তারা। প্রাথমিক চিকিৎসার পর এ ঘটনায় নূর হাকিম ২ জুলাই সুহেনা চৌধুরী, তার ভাই রিজু মিয়া, তার স্ত্রী সুমি বেগম, জাকির মিয়া, মো. তাহিমিদ মিয়াকে আসামী করে সুনামগঞ্জে জগন্নাথপুর আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা (সিআর মোকদ্দমা নং-১২৯/২০২৪) দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ সুহেনা চৌধুরী ও তার ভাই রিজু মিয়া ও তার বউ সুমি বেগম, জাহির মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সুনামগঞ্জ আমলী আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। বর্তমানে এ মামলাটিও বিচারাধীন রয়েছে।
আফাজ চৌধুরী অভিযোগ করেন, সুহেনা চৌধুরীর ইন্ধনে আহমদাবাদ গ্রামের ইয়াওর মিয়ার ছেলে খলিল চৌধুরী খলিল চৌধুরী ও লুবন চৌধুরী ও একই গ্রামের মৃত ছাতির উল্লার ছেলে রিজু মিয়া ও ইয়াওর মিয়া গত ২৮ আগস্ট শাহ সুবা চৌধুরীদের মালিকানাধীন ফিশারি জোরপূর্বক দখল কের। আফাজ চৌধুরী ও শাহ সুবা চৌধুরীদের নিয়োগকৃত ম্যানেজার মো. ইউসুফ আহমদ তাদের বাধা দিলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়। এবং জানানো হয় তাদের কাছে চুক্তিপত্র রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের কোনো চুক্তি হয়নি বলে শাহ সুবা চৌধুরীরা আফাজ চৌধুরীকে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আফাজ চৌধুরী এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
Related News
মানসিক শান্তি নিশ্চিতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন অপরিহার্য
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: রোটারী ক্লাব অব জালালাবাদের উদ্যোগে আয়োজিত “মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেরRead More
তারেক রহমানের নির্দেশে সিলেটে পূজা মণ্ডপে অর্থ বিতরণ
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে বিভিন্নRead More
Comments are Closed