জাবিতে বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মিছিল সমাবেশ

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে ত্রুটিপূর্ণ লিফটে ৩ ঘন্টা শিক্ষার্থী আটকে পড়ার প্রেক্ষিতে প্রকল্প পরিচালক নাসির উদ্দীনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের ক্লান্তিকর ও হেনস্তামূলক প্রক্রিয়া বাতিল করে অটোমেশন চালুর দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
‘জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন’ -এর আহ্বানে বুধবার (৫ জুন) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে মিছিলটি শুরু হয়। ‘আবাসিক হলগুলিতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ চাই’, ‘অবিলম্বে নাসির উদ্দীনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে’, ‘৩য় প্রশাসনিক ভবন না বানিয়ে, অটোমেশন চালু কর’ ইত্যাদি স্লোগানে মিছিলটি প্রকল্প অফিসকে দুইবার প্রদক্ষিণ করে পরিবহন চত্ত্বরে এসে শেষ হয়।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শহীদ তাজউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সজীব আহমেদ জেনিচ এবং সঞ্চালনা করেন ছাত্র ইউনিয়ন, জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী।
সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হাসান শুভ তাঁর বক্তব্যে বলেন, নতুন হলগুলির কাঠামো এবং ব্যবস্থা কোনোভাবেই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের মতো না৷ এখানে বৃষ্টির দিনে আমাদেরকে পানি সেঁচতে হয়, বিদ্যুৎ না থাকলে দশতলা হেঁটে উঠতে হয়। কোনোরকম পরকল্পনা ছাড়াই তাড়াহুড়ো করে বানানো ত্রুটিপূর্ণ আর্কিটেকচারের এই হলগুলি আমাদের দৈনন্দিন ভোগান্তির কারণ। লিফ্টে আটকে ক্লাস্টোফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাওয়ার দৃষ্টান্ত। সেখানে তাজ উদ্দিন হলের শিক্ষার্থী যিনি তিন ঘণ্টা আটকে ছিলেন। এই দায় প্রশাসন নিচ্ছে না বরং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে। আমরা চাই প্রকল্প পরিচালক তার এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইবে সেই সাথে আমাদের সকল দাবি মানতে হবে।
শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইসফার সাদী তার বক্তব্যে বলেন, যে শিক্ষার্থীর বাবা-মায়ের ট্যাক্সের টাকায় এই প্রকল্প পরিচালকের বেতন হয়, সেই প্রকল্প পরিচালকের কতবড় আস্পর্ধা হলে ছাত্রদের তিনি নিরাপত্তা দিতে পারেনি বরং এ ধরণের ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলতে পারেন, তা দেখে আমরা বিস্মিত হই। অবিলম্বে প্রকল্প পরিচালককে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সজীব আহমেদ জেনিচ বলেন, হলের লিফটগুলি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। মাস্টারপ্ল্যান ব্যতীত শপিং লিস্ট উন্নয়নের ফলাফল আজ আমরা শিক্ষার্থীরা ভোগ করছি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসে কাজে ফাঁকি দিয়ে অফিসাররা ঘুমিয়ে থাকেন। অথচ এই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের ভোগান্তিমূলক এবং ক্লান্তিকর প্রক্রিয়ার জন্যই বিভিন্ন বিভাগের ফলাফল আটকে আছে দিনের পর দিন। এই ভোগান্তিমূলক প্রক্রিয়া বাতিল করে আমরা অটোমেশনের দাবি জানাচ্ছি দীর্ঘদিন ধরে।
সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি জানানো হয়;
১। অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী নাসির উদ্দীনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, নতুবা তাকে অপসারণ করতে হবে।
২। হলগুলোতে ২৪ ঘন্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হবে।
৩। অবিলম্বে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় আনতে হবে।
উল্লেখ্য গত সোমবার (৩ জুন) দুপুর তিনটায় তাজ উদ্দিন হলের নয়ন নামের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী হলের লিফ্টে আটকা পড়েন। হঠাৎ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে এই ঘটনা ঘটে। আটকা পড়ার তিনঘন্টা পর তাকে লিফ্ট থেকে বের করা হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন যেহেতু ক্যাম্পাস বন্ধ তাই ওই শিক্ষার্থীর উচিত ছিল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে হলে অবস্থান করা এবং লিফ্ট ব্যবহার করা । তাহলে হয়তো কর্মচারীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে উদ্ধার করতে পারতো।
Related News

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১২ বছর, রেশমা উদ্ধার ছিল নাটক!
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সাভারে রানা প্লাজা ধসের এক যুগ পূর্ণ হলো আজ বৃহস্পতিবার। ২০১৩ সালেরRead More

১৫ দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম এনসিপির
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগকে ১৫ দিনের মধ্যে আইন তৈরি করে নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম দিয়েছে জাতীয়Read More
Comments are Closed