Main Menu

সিলেটে হঠাৎ আন্দোলনে পরিবহন শ্রমিকরা, সড়কে দীর্ঘ যানজট

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেটে শ্রমিক নেতাদের পাল্টাপাল্টি মামলা প্রত্যাহার ও এমএমপি কমিশনারের অপসারণের দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তারা নগরের প্রবেশদ্বার প্রতিটি সড়কের মধ্যখানে যানবাহন দাঁড় করিয়ে আন্দোলন চালান।

আন্দোলনকালে শ্রমিকরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখেন। আন্দোলনের কারণে সিলেট শহরে কোনো ধরনের যানবাহন প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে প্রতিটি সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানজটে শতশত গাড়ি আটকা পরেছে। দূরপাল্লার বাসসহ সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া সাতটার দিকে এ আন্দোলন শুরু হয়। রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম, সিএনজি অপটোরিকশা ম্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া আহমদ, হিউম্যান হুলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল মিয়া মইনসহ চার শ্রমিক নেতার নাম উল্লেখ করে ২০/৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এবারের আন্দোলনে নেমেছেন শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে যানবাহন বন্ধ রেখে সিলেট নগরের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা।

ফলে সন্ধ্যা থেকে দূরপাল্লার বাসসহ সিলেটে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। আচমকা এমন পরিস্থিতিতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকেই বাসের কাউন্টারগুলোতে এসে বসে আছেন।

রাত ৮টায় নগরের উপশরহর, শাহী ঊদগাহ, বালুচর, টিলাগড়, হুমায়ুন রশীদ চত্বরসহ বিভিন্ন মোড়ে পরিবহন শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। সড়কে টায়ার পুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন তারা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরণের যান চলাচল।

শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ সুরমা থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন লেগুনা শ্রমিক মো. শাহাব উদ্দিন। মামলায় মারপিট ও টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।

এই মামলার জেরেই আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আন্দোলনে নামেন পরিবহন শ্রমিকরা।

দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিবহন শ্রমিকদের দুটি গ্রুপ রয়েছে। দুই গ্রুপের বিরোধের জেরে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। একটি মামলায় পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের আসামি করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের ৮ দিন পর আন্দোলনে নামা প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, মামলার বিষয়টি আমরা আজকেই জানতে পেরেছি। পরে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার নিশারুল আরিফের সঙ্গে দেখা করতে যান শ্রমিক নেতারা। এসময় পুলিশ কমিশনার তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। এর প্রেক্ষিতে আন্দোলনে নেমেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

মইনুল বলেছেন, যিনি আমাদের নামে মামলা করেছেন তাকে আগেই শ্রমিক সমিতি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। এই কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমাদের নামে চাদাবাজি ছিনতাইয়ের অভিযোগে মিথ্যে মামলা করেন। পুলিশও কোন তদন্ত ছাড়াই মামলাটি গ্রহণ করেন।

এই শ্রমিক নেতা আরও বলেন, মামলার বিষয়টি জানতে পেরে শ্রমিকরা আজ বিক্ষোব্ধ হয়ে উঠছে। তারা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে ও সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পরেছে। পুলিশ কমিশনারের অপসারণ ও মামলা প্রত্যাহার না হলে আন্দালন চলবে।

দক্ষিণ সুরমা থানার পরিদর্শক [তদন্ত] সুমন কুমার চৌধুরী বলেন, দুই গ্রুপের শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে থানায় দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলাগুলো তদন্ত করছে। মামলার এতোদিন পর পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলন অযৌক্তিক।

বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা যাওয়ার জন্য সিলেটের কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনালে এসেছিলেন বাসদ নেতা প্রণব জ্যোতি পাল। তিনি বলেন, সব ধরণের বাস বন্ধ রয়েছে। কেউ টিকিট বিক্রি করছে না। আচমকা এমন কর্মসূচীতে চরম দূর্ভোগে পরেছি।

এদিকে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলোচনার আহ্বান করা হলে শ্রমিকরা এতে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে আলোচনায় বসবেন পরিবহন শ্রমিক ও প্রশাসনের লোকজন।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত পৌণে দশটায় এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অতিরিক্ত দায়িত্ব মিডিয়া) সুদ্বীপ দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন- আমরা আন্দোলনকারীদের আলোচনার আহ্বান জানালে তারা এতে সম্মতি প্রদান করেছেন। শিগগিরই আমরা আলোচনায় বসবো।’

 

Share





Related News

Comments are Closed