৩৪ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী বিষন্নতায় ভোগেন

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক : দেশে ২০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিস শনাক্তের হার প্রায় ১৩ শতাংশ। এর মধ্যে ১৫ থেকে ৩৪ শতাংশের মতো ব্যক্তির স্বল্প, মধ্যম ও উচ্চমাত্রার বিষণ্নতা আছে। বহুমাত্রার বিষণ্নতা ডায়াবেটিস শনাক্ত ব্যক্তিদের অসুস্থতার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস ও বিষন্নতা রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের আয়ু ২০ বছর কমে যেতে পারে। আশার কথা হচ্ছে, বিশেষ থেরাপির মাধ্যমে ডায়াবেটিস ও বিষন্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিষন্নতা মোকাবিলা করা সম্ভব।
ডায়াবেটিস ও বিষন্নতা নিয়ে বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বাডাস) আয়োজিত এক সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। রাজধানীর শাহবাগে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মাল্টিপারপাস হলে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, ডায়াবেটিস শনাক্ত ব্যক্তিরা যেন বিষন্নতার ক্ষতিকর দিকগুলো অবহিত হয়ে চিকিৎসা নেন, সে ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
সভায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বিষন্নতা এবং ডায়াবেটিস শনাক্ত ব্যক্তিদের জন্য আচরণগত সক্রিয়করণ পদ্ধতির বিকাশ ও মূল্যায়ন’ শিরোনামের চলমান প্রকল্পের তথ্য তুলে ধরা হয়। গবেষণাভিত্তিক এই প্রকল্পটিকে সংক্ষেপে ‘ডায়াডেম’ বলা হয়। প্রকল্পটি ‘আচরণগত সক্রিয়করণ’ নামের একধরনের থেরাপি নিয়ে কাজ করছে। পশ্চিমা বিশ্বে এটি বিষন্নতা মোকাবিলায় একটি কার্যকর থেরাপি। বাংলাদেশেও এই থেরাপি কার্যকর কি না, তা বোঝাই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য।
এই প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে বাডাসের সেন্টার ফর হেলথ রিসার্চ অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (সিএইচআরআই) এবং যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ডায়াবেটিস শনাক্ত ব্যক্তিদের ওপর বিষন্নতা ও বহু ধরনের অসুস্থতার অবস্থা বুঝতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পটি শুরু হয়। এটির মেয়াদ চার বছর।
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্য অনুসারে, ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে অষ্টম। আনুমানিক দেড় কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অপর দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৫ শতাংশ বিষণ্ণতায় ভুগছে। এ ছাড়া ডায়াবেটিক জনসংখ্যার ১৫ থেকে ৩৪ শতাংশ বিভিন্ন মাত্রার বিষন্নতায় আক্রান্ত।
প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করেন ডায়াডেম গবেষণার ট্রায়াল সমন্বয়কারী নাভীদ আহমেদ। তিনি বলেন, এ বছরের মার্চে ডায়াডেমের সম্ভাব্যতা যাচাই হয়। এরপর মার্চের শেষ থেকে মে মাস পর্যন্ত গবেষণার জন্য রোগীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঢাকা ও সিলেটের ৩৫৩ জনকে যাচাই-বাছাই করার পর ৬৪ জন রোগীকে নির্বাচন করা হয়। এর মধ্যে ৩২ জনকে ছয়টি সেশনে বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে সেবা দেওয়া হয়। বাকি ৩২ জনকে সাধারণ সেবা দেওয়া হয়। ১৬ আগস্ট তিন মাসের ফলোআপ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। ছয় মাসের ফলোআপ প্রক্রিয়া শুরু হবে ২ অক্টোবর থেকে। পুরো প্রক্রিয়া শেষের পর সেবা পাওয়া ব্যক্তিদের অবস্থা জেনে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, এই ব্যক্তিরা আগের চেয়ে ভালো বোধ করছেন।
ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং প্রকল্পের প্রধান গবেষক পাকিস্তানের নাজমা সিদ্দিকি তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, একই সঙ্গে ডায়াবেটিস ও বিষন্নতা রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের আয়ু ২০ বছর কমে যেতে পারে। ডায়াবেটিস ও হৃদ্ররোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মানসিক অসুস্থতার আশঙ্কা দুই থেকে তিন গুণ বেশি।
Related News

বিশ্বে প্রথম নাকে দেওয়ার করোনা ভ্যাকসিন আনল ভারত
স্বাস্থ্য ডেস্ক: শরীরে পুশ করার করোনা ভ্যাকসিন বাজারে এসেছে বেশ আগেই। তবে বিশ্বে এই প্রথমRead More

ওসমানী হাসপাতালে নাক ডাকাদের বিনামূল্যে অপারেশনের সুযোগ
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা এবং হেড-নেক সার্জারিRead More
Comments are Closed