Main Menu

আনোয়ার মাস্টার ও তার ছেলেদের কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ৫টি পরিবার

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেটের জকিগঞ্জের পশ্চিম কসকনকপুরের মৃত ইব্রাহীম আলীর ছেলে ফয়জুর রহমান উরফে আনোয়ার মাস্টার ও তার ছেলেদের কারণে জান-মালের নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন দুই প্রবাসী পরিবারসহ পাঁচটি পরিবার।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেছেন পশ্চিম কসকনকপুরের মৃত ডা. আবদুল হকের ছেলে মো. সাহেদুল আলম।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাহেদুলের চাচা আমেরিকা প্রবাসী আজিজুর রহমানের ছেলে আমির হোসেন মুক্তা, মৃত চাচা আবদুল মতিনের ছেলে আমেরিকা প্রবাসী নূরে আলম বাবলার পক্ষে তার ভাগ্না শিমুল আহমদ, মৃত চাচা আব্দুন নূরের একমাত্র মেয়ে লুৎফা বেগম এবং চাচা তফজ্জুল আলী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাহেদুল আলম দাবি করেন, তার চাচা আনোয়ার মাস্টার ও চাচাতো ভাইদের হয়রানী, হুমকি-ধামকির কারণে তাদের ৫টি পরিবারের জীবনযাপন অতীষ্ট হয়ে উঠেছে। জান-মালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। তার দাদা মৃত ইব্রাহীম আলী মৃত্যুর পর তাঁর রেখে যাওয়া জায়গা-সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আনোয়ার মাস্টারের অন্যায় আচরণের প্রতিবাদে সাহেদুল তাদের ৫টি পরিবারের পক্ষে আনোয়ার মাস্টারের বিরুদ্ধে পৃথক স্বত্ত মামলা, স্বত্ত্ব বাটোয়ারা মামলাসহ বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটে একাধিক মামলা দায়ের করেন। এগুলোর মধ্যে দুটি মামলায় আদালত আনোয়ারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। যার কারণে হিংসা পরায়ণ হয়ে গত ১৭ আগস্ট আনোয়ার মাস্টারের ছেলেরা সাহেদুল ও তার ভাইকে হামলা করেন, চাঁদা দাবি করে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। এই ঘটনায় সাহেদুল জকিগঞ্জ থানায় মামলা (নং-১১(৮)২২) দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ সুহেদ, আমিনুর রশিদ জাহেদ ও হুমায়ুন রশিদ সাদেককে গ্রেফতার করেন। ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে তারা পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

সাহেদুল লিখিত বক্তব্যে বলেন, মনোয়ারা দাবি করেছেন ভূমি সংক্রান্ত মামলায় হেরে গিয়ে আমরা তাদেরকে হয়রানী করছি। প্রকৃতঅর্থে ভূমিসংক্রান্ত মামলার কোনো রায় তাদের পক্ষে যায়নি। ১৭ আগস্টের ঘটনায় মামলা দায়েরে আমাকে থানায় ৪দিন ঘুরতে হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তসাপেক্ষে মামলার আবেদনে সত্যতা পেয়েছেন। ৩ জন আসামি গ্রেফতার করেন। বাকিরা এখনও গ্রেফতার হয়নি। মোবাইল ফোন, লুণ্ঠিত টাকা এখনও উদ্ধার হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে সাহেদুল আলম বলেন, দাদা মৃত ইব্রাহীম আলীর উত্তরাধীকারী ৬টি পরিবারের ৫টি পরিবারের একযোগে কেনো আনোয়ার মাস্টারের বিরুদ্ধে অবস্থান; এটা দিবালোকের মতো সত্য তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত, তিনি চাচাতো ভাইদের জমিজমা গ্রাস করতে মরিয়া। তিনি যদি সৎ থাকতেন তবে তো কোনো না কোনো পরিবার তার পক্ষে থাকতো। গত ২৭ আগস্ট আনোয়ার মাস্টারের স্ত্রী মনোয়ারা খানম সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন সেগুলোর সব মিথ্যে, সাজানো ও বানোয়াট এটা আমাদের ৫টি পরিবারের একপক্ষে থাকাই প্রমাণ করে। তিনি বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে মামলাগুলোকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছেন।

লিখিত বক্তব্যে ৫টি পরিবারের সদস্যদের দাবি, তারা সকলেই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। জায়গা-জমি সত্ত্ব যথাযথভাবে বুঝে পেতেই তারা মামলা করেছেন। হামলা-মামলার শুরুটা আনোয়ার নিজেই করেছেন। ২০২০ সালে তিনি বাদি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল (এলএসটি) সিলেটে মামলা (নং-৪৮৩/২০) দায়ের করেন। জমিতে ধানকাটা, বাড়ির গাছকাটা, পুকুরের মাছ মারার অভিযোগে সাহেদুল আদালতে মামলা নং ৩২/২১ ও ৩৩/২১ দায়ের করেন। এ দুটি মামলার রায় আনোয়ার মাস্টার ও ছেলেদের বিপক্ষে গেছে। তাই বিভিন্নসময়ে হামলা করে ক্ষতিগ্রস্ত করেন। যা এলাকার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, প্যানেল চেয়ারম্যান ও মেম্বার অবগত রয়েছেন। তফজ্জুল আলীর ছেলে আবু জাফর সিদ্দিকীকেও তারা মারপিট করেছে। যার কারণে তার মা শেলিনা আক্তার বাদি হয়ে মামলা (১৩৭/২০) দায়ের করেন। যা এখনও চলমান।

সংবাদ সম্মেলনে সাহেদুল আলম বলেন, ‘আমার বাবা-চাচাদের মধ্যে আনোয়ার মাস্টার ব্যতিত অন্য সকলেই বাড়ির বাহিরে বসবাস করছেন। এই সুযোগে আনোয়ার মাস্টার একাই সকল সম্পত্তি গ্রাস করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। পিতার মৃত্যুর পর আনোয়ার মাস্টার আমাদের প্রাপ্ত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছেন। বাবা-চাচাদের সকলেই দাদার সম্পত্তির ভাগ পেলেও আমি সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত ছিলাম। ২০২০ সালে আমার নামীয় প্রিন্ট পর্চায় আংশিক জমি পেলে তারা আবারও বিভিন্ন ধরণের বাঁধা-বিপত্তির মাধ্যমে হয়রানী করে। আমার অন্য চাচারাও ফয়জুর রহমানের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অতীষ্ট। আমার আমেরিকা প্রবাসী দুই চাচার জমিজমাও তিনি ভোগদখলের অপচেষ্টা করেন। চাচাতো ভাই নূরে আলম বাবলার পক্ষে, আমির হোসেন মুক্তা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ জবরদখলের প্রমাণ পেয়ে মামলা রেকর্ড করতে চাইলে আনোয়ার মাস্টার ও তার ছেলেরা তখন তদন্ত কর্মকর্তার সামনেই আপোষের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমা চান। পরবর্তীতে চেয়ারম্যন-মেম্বারের সামনে চলতি বছরের ১৭ মার্চ আপোষনামা প্রদান করেন। যা আনোয়ার মাস্টার ও তার ছেলেদের জায়গা-জমি দখলের উদাহরণ।

সাহেদুল আলম ও তার স্বজনরা লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ছেলেদের বিদেশ পাঠানোর কথা বলে আনোয়ার মাস্টার ভাই আজিজুর রহমানের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ঋণ সেটি আত্মসাত করেছেন। আজিজুরের কাছে তিনবিঘা জমি বিক্রি করে সেগুলো রেজিস্ট্রি করে দেননি। মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে নূরে আলম বাবলা তার পিতার মৌরসী সত্ত্বের ১১ শতক জায়গা আনোয়ার মাস্টার প্রতারণা করে নিজের নামে রেকর্ডভূক্ত করে নেন। মতিনের বসতঘরও আনোয়ার নিজের বলে দাবি করছেন। তফজ্জুল আলীর প্রাপ্ত সম্পদের ২ শতক জায়গা আনোয়ার জবরদখল করে রেখেছেন। লুৎফা বেগমের পৈতৃকভূমি জবরদখলের চেষ্টাও চালাচ্ছেন।

আনোয়ার মাস্টার ও তার ছেলেদের হাত থেকে ২টি প্রবাসী পরিবারসহ ৫টি পরিবারের সদস্যদের হয়রানীমুক্ত করতে এবং তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

Share





Related News

Comments are Closed