তাহিরপুরে চলাচলের অনুপযোগী ৮ কিলোমিটার সড়ক

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কে ১৯৯৩ সালে কাজ শুরু হলেও গত তিন দশকেও আট কিলোমিটার সড়কের দুঃখ ঘুচল না। অথচ সাড়ে তিন লাখ মানুষের চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ একমাত্র সড়কটি মেরামতে বছরে ব্যয় হয়েছে সরকারের কোটি কোটি টাকা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বিভিন্ন জায়গায় গর্তের কারণে বিপর্যস্ত সড়কটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থায় চরম দুর্ভোগের মাঝেই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ফলে সবার মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে ও জনদুর্ভোগ লাঘবে সড়কটি দ্রুত চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ।
অর্থনৈতিক ও পর্যটনসমৃদ্ধ হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক তাহিরপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট বাজার। এছাড়াও চারটি ইউনিয়নের লোকজন, উপজেলা সদর, হাসপাতাল, বাদাঘাট সরকরী কলেজ, জয়নাল আবেদীন মহাবিদ্যালয়, তিনটি শুল্ক স্টেশনের ব্যবসায়ী, পর্যটন স্পষ্ট শিমুল বাগান, যাদুকাটা নদী, বারেকটিলা, শহীদ সিরাজ লেকসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে যাতায়াত করতে হয় তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক দিয়ে।
এই সড়কের হুসনারঘাট থেকে পাতারগাঁও দুই কিলোমিটার সড়ক যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। তিনটি অপরিকল্পিত সেতু আর হুসনার ঘাটের সেতুটি হেলে গেছে। যেকোন সময় ভেঙে যেতে পারে। আর মাটির সড়কটি এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান খেলুসহ উপজেলার বাসিন্দারা জানান, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটির পাতারগাঁও নামক স্থান থেকে হুসনারঘাটে সড়কটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও হুসনার ঘাটের সেতুটি হেলে গেছে। যেকোন সময় ভেঙে যেতে পারে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) তাহিরপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে এলজিইডি তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নিলে মাটির সড়ক তৈরি করা হয়। পরে বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০১১-১২ অর্থবছর পর্যন্ত সড়কের ছয় কিলোমিটার কাজ পাকা করা হয়েছে।
এরপর ২০১৮ সালের শুরুর দিকে এই সড়কটিতে তিনটি ভাগ করে মেরামতের জন্য প্রায় চার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এই সড়কের বৌলাই নদীর উপর নির্মিত ব্রিজ থেকে সূর্যেরগাঁও পর্যন্ত ৭৫০ মিটার ও টাকাটুকিয়া ব্রিজে দুই পাশে মিলিয়ে বল্ক দিয়ে ২৫ ফুট সড়কের কাজ হয়েছে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ভাঙন অংশে মেরামত হয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভাঙন অংশে (হুসনারঘাট, পাতারগাও) কোনো কাজ হয়নি।
বাদাঘাট বাজার বণিক সমিতির সাধরণ সম্পাদক মাসুক মিয়া জানান, তাহিরপুর-বাদাঘাট রাস্তাটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি বাড়বে। দ্রব্যমূল্যের দামও কমবে। যোগাযোগের জরুরি প্রয়োজনে সহজে সবাই চলাচল করতে পারবে।
উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবীর বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি চলাচলের জন্য প্রায় সময় মেরামত করা হয়। মেরামত কাজ চলমান রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবীর বলেন, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত আছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় ভাঙনের কারণে উপজেলা সদরে আগত মানুষজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন করে চলাচল করছে।
হাওরবাসীর উন্নয়নে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প সম্প্রতি একনেকে পাস হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের কাজ দ্রুত দৃশ্যমান হবে।
Related News

তাহিরপুর সীমান্তে ভারতীয় কয়লার চালান জব্দ
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে বিজিবি’র পৃথক অভিযানে ভারতীয় কয়লার চালান জব্দ করেছে ২৮Read More

দিরাইয়ে জুমার নামাজে এসে মারা গেলেন মুসুল্লি
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে জুমার নামাজে মসজিদে এসে ওজু করার পরপরই মারা গেছেন ইউনুছRead More
Comments are Closed