Main Menu

কমলগঞ্জে বিনষ্ট হচ্ছে ১৬ লক্ষ টাকা মূল্যের গাছ

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পতনঊষার উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত শমশেরনগর এয়ারপোর্ট-তারাপাশা সংযোগ সড়কের দুপাশে ১.৫ কিলোমিটার সামাজিক বনায়নের আওতায় গাছ রোপণ করা হয় । দীর্ঘ সাত বছর পর হলেও বনবিভাগের অবহেলার কারণে প্রায় ১৬ লক্ষ মূল্যের গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, বনবভিাগের রাজকান্দি রেঞ্জ এর মাধ্যমে একটি স্ট্রীপ বাগানটি ২০১৩ সালের ১৭ জানুয়ারি মৌলভীবাজার জেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটির ১১ তম সভায় এই বাগানসহ কয়েকটি বাগানের খাড়া গাছ বিক্রির জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসেন এর স্বাক্ষরে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর খাড়া গাছ বিক্রয়ের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নং-৪৬/ স্ট্রীপ বাগান ২০১৪-১৫ আহবান করলে তা একই বছরের ৩ নভেম্বর একটি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। উক্ত বাগানে রেইন্ট্রি, আকাশ মনি, মেহগনি, শিশু ও ছাম ইত্যাদিসহ ১৪৩টি গাছের সরকারিভাবে ২৪০১ ঘনফুট কাঠ এবং অপ্রয়োজনীয় ৮০০ ফুট ডালপালা দরপত্রে উল্লেখ করা হয়। লটক্রেতা অর্জুন কুমার ধর রাজকান্দি রেঞ্জের লট নাম্বার ৩/ রাজ / কাট ২০১৪-১৫ এর বিপরীতে ৮ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩০২ টাকা দর উদ্ধৃত করেন।

নির্ধারিত সময়ে মূল্য পরিশোধ না করায় রাজকান্দি রেঞ্জ কর্মকর্তা ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই, ২০১৯ সালের ৩০ জুন এবং ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরপর তিনটি তারিখে লটক্রেতাকে মূল্য পরিশোধের জন্য নোটিশ করেন। লটক্রেতা অর্জুন কুমার ধর লটের টাকা পরিশোধ না করায় কমলগঞ্জের রাজকান্দি রেঞ্জ কর্মকর্তা ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নাম্বার ৪৬/ স্ট্রীপ বাগান/ ২০১৬-১৭, তারিখ ২৩ মার্চ ২০১৭ এর ১২ নাম্বার শর্ত ভঙ্গ করায় দরমূল্য বাতিলপ‚র্বক পুণরায় বিক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেন এবং লটক্রেতা অর্জুন কুমার ধর এর জমাকৃত ৪১ হাজার ৯০০ টাকা সরকারের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।

কিন্তু এখন পর্যন্ত পুণরায় লটবিক্রয়ের জন্য নতুন করে দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করায় উপকারভোগী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত দীর্ঘ সাত বছরে স্ট্রীপ বাগানের প্রায় ৯০ ভাগ গাছ শুকিয়ে মরে গেছে এবং ঝড়-তুফানে পরে গেছে। যার বাজার ম‚ল্য আনুমানিক ১৪ লক্ষ টাকা। ঝড়-তুফানে পরা কিছু গাছ লটক্রেতাও নিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপকারভোগী মৃত মোঃ মুসলিম মিয়ার ছেলে মোঃ শামিম মিয়া বলেন, বাবা ও মারা গাছেন, গাছও মারা গেছে। আমি জীবিত অবস্থায় এই বাগানের আমার অংশের টাকা পাবো কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আমি গরীব মানুষ, বন বিভাগের অফিসে যোগাযোগ করতে করতে কোন সুরাহা পাইনি। আমার দাবি হল ক্ষতিপ‚রণসহ আমার প্রাপ্য টাকা দেওয়া হোক।

লটক্রেতা অর্জুন কুমার ধর বলেন, বন বিভাগ দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিতে যে পরিমাণ কাঠ উল্লেখ করা হয়েছে বাস্তবে তার অর্ধেক না থাকায় আমি লট ক্রয় করিনি এবং কোন গাছ কেটেও আনিনি। আমার দাবি হল আমার দেওয়া জামানতকৃত টাকা ফেরত দেওয়া হোক।

রাজকান্দি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, যে গাছ এখনও জীবিত আছে তা কিছুদিনের মধ্যে নতুন করে বিক্রয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। ক্ষয়ক্ষতির টাকা আদায়ের জন্য লটক্রেতা অর্জুন কুমার ধরের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৫-৯৬ সালে শ্রীসূর্য্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পতনঊষার উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কের দুপাশে ১.৫ কিলোমিটার সামাজিক বনায়নের আওতায় গাছ রোপন করা হয়।

Share





Related News

Comments are Closed