কমলগঞ্জে ভবনের ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরী আহত

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে একটি ভবনের ছাদে কাপড় শুকাতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত এক কিশোরী গুরুতর আহত হয়ে পড়ে। হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর ডান হাতের কব্জি পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়েছে। বর্তমানে পঙ্গুত্ব বরন করে অনিশ্চিত জীবনে পা ফেলেছে কিশোরী। তবে পল্লী বিদ্যুতের উন্মুক্ত তারের সাথে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার জন্য দায় কার? তা আজো বুঝে উঠতে পারেনি পঙ্গু কিশোরী ও তার পরিবার।
গত ৪ জুলাই শনিবার দুপুরে শমশেরনগরের শিংরাউলী গ্রামে আবাসিক এলাকায় আব্দুল করিমের ভবনের ছাদে কাপড় শুকাতে গিয়ে উন্মুক্ত তারে পৃষ্ট হয়ে ভাড়াটিয়া পরিবার সদস্যের কিশোরী মুন্নী বেগম (১৬) গুরুতর আহত হয়। দুই হাত ও বুকে বড় ধরণের ক্ষত সৃষ্টি হয়। পরে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইন্সটিটিউটে দীর্ঘদিন চিকিৎসা প্রদান করা হয়। সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া এই কিশোরীকে প্রায় ৪ মাস চিকিৎসা প্রদান করা হয়। বিদ্যুতায়িত মুন্নীর ডান হাতের অবস্থা ভালো না থাকায় চিকিৎসক হাতের কব্জি পর্যন্ত কেটে ফেলেন। এছাড়াও ভবনের ছাদে লোহার রডে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কিশোরীর বুকে মারাত্মক জখম হয়। বর্তমানে ডান হাত হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরন করে অনিশ্চিত জীবনে পা দিয়েছে মুন্নী।
পঙ্গুত্ব বরনকারী কিশোরী মুন্নী কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামের প্রবাসী মোবারক আলীর মেয়ে। সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধার জন্য মোবারক আলী শিংরাউলী গ্রামে বাসা ভাড়া নেন। কিশোরী মুন্নী বেগম পার্শ্ববর্তী উসমানগড় মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্রী।
মুন্নী বেগম জানায়, ভবনের ছাদে কাপড় শুকাতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটে। ভবনের সাথে বৈদ্যুতিক তারের লাইন রয়েছে। এজন্য দায়ী কারা বা কাদের ভুলের জন্য আমাকে পঙ্গু হতে হলো, তা আজও স্পষ্ট নয়।
কিশোরী মুন্নীর বাবা প্রবাসে থাকায় মামা মো. ইকবাল আহমদ বলেন, মেয়েটির চিকিৎসায় কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে মেয়েটির জীবন নষ্ট হয়েও তাদের মানবেতর জীবন যাপন চলছে। ভবনের সাথে বিদ্যুৎ লাইন থাকলেও এর দায় কার? আমরা ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। এজন্য আমরা আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সরেজমিনে দেখা যায়, আব্দুল করিমের ভবনের ছাদ ঘেষে শিংরাউলী এলাকায় মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন প্রবাহিত। বিদ্যুৎ লাইন ঘেষেই নির্মিত হয়েছে ভবন। ভবন নির্মাণের পর বাসা ভাড়া প্রদান করা হয়। তবে ভবনের সাথে উন্মুক্ত বিদ্যুৎ লাইন থাকলেও এটি নিয়ে ভবন মালিক কিংবা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কেউ গুরুত্ব দেয়নি। তবে ঘটনার পরদিন ভবন মালিক আব্দুল করিম বিদ্যুৎ লাইনের জন্য মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে দায়ী করে কমলগঞ্জের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারকে লিখিত অভিযোগ দেন।
ভবনের মালিক আব্দুল করিম বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও ঠিকাদার পার্শ্ববর্তী একটি বাসায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের সময় কাভার লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ নিবেন প্রতিশ্রুতি দিলেও তা দেননি। ফলে তাদের ভুলের জন্যই এঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শ্রীমঙ্গলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) খালেদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের এই লাইন দীর্ঘদিনের। বিদ্যুৎ লাইনের পরে ভবন নির্মিত হয়েছে। সর্বশেষ পার্শ্ববর্তী বাসায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে নতুন খুঁটি বসানোর কারণে কিছুটা ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে। তবে কিশোরীর অসাবধানতাবশত হয়তো কাপড় ছোড়ে মারায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
Related News

কমলগঞ্জে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষনের শিকার
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে ১৩ বছরের এক প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষিতা শিশুকেRead More

জুড়ীতে আগুনে পুড়ল ৬টি দোকান
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: মৌলভীবাজারের জুড়ীতে একটি মার্কেটে আগুন লেগে মালামালসহ ৬টি দোকান ও গুদাম এবংRead More
Comments are Closed