Main Menu

জবি ছাত্র আরিফকে হত্যার অভিযোগ

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফকে (২১) হত্যা করে বুড়িগঙ্গার পানিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তার বড় ভাই। আরিফের বান্ধবী সুমাইয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে তিনি এ অভিযোগ করেন। নিহত আরিফ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মারুফদাহ গ্রামের মঈন উদ্দীনের ছোট ছেলে।

নিহত আরিফের বড় ভাই রাশিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আরিফ পড়াশুনার সুবাদে ঢাকার কেরানীগঞ্জের একটি মেসে থাকতো। ২৯ জুলাই আরিফের বান্ধবী সুমাইয়া ফোন করে তার বাসায় দেখা করতে ডাকে এরপর ৩০ জুলাই আরিফ মেস থেকে বান্ধবী সুমাইয়ার বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়ে আর মেসে ফিরে আসেনি। এক পর্যায়ে আরিফের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তার মেসের অন্য বন্ধুরা জানার পর তারা খোঁজাখুজি শুরু করে। পরে বুড়িগঙ্গার তীরে আরিফের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন পাওয়ার খবর পেয়ে নৌপুলিশ বুড়িগঙ্গায় খোঁজ করে। বিকেলে নদী থেকে আরিফের লাশ উদ্ধার করে নৌপুলিশ।

তিনি আরও জানান, আরিফ ভালো ছাত্র হওয়ায় তার বান্ধবী সুমাইয়া বিভিন্ন সময় তার কাছে থেকে নোটসিট নেওয়াসহ বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগীতা নিত। কিন্তু সুমাইয়ার স্বামী সেটা ভালো চোখে দেখতো না। আর এর ফলেই তার ভাই আরিফকে কৌশলে ডেকে সুমাইয়া ও তার স্বামী হত্যা করে বুড়িগঙ্গার পানিতে ফেলে দিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

নিহত আরিফুল ইসলামের চাচা হাসাদাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাইদুর রহমান জানান, আরিফুল ইসলাম ছাত্রজীবনে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে শান্ত প্রকৃতির ছেলে এবং পড়ালেখায় খুব মেধাবী ছিল।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রওশন আলম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আরিফুল ইসলাম ছোটবেলা থেকে খুব শান্ত প্রকৃতির ছিল। তাকে কখনো কোনও ঝামেলায় জড়াতে দেখিনি।

গ্রামবাসী জানায়, উপজেলার মারুফদহ গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিন মঈনুদ্দিনের দুই ছেলে। বড় ছেলে রাশেদুল ইসলাম সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ছোট ছেলে নিহত আরিফ ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এর আগে আরিফুল ইসলাম উপজেলার নিধিকুন্ড-বাড়ান্দি মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও হাসাদাহ মডেল ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন। আরিফ কোটা সংস্কার আন্দোলনের জবি শাখার যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তিনি কেরানীগঞ্জের একটি মেসে থাকতেন। বুড়িগঙ্গার তীরের একটি বাসায় টিউশনি করাতেন। গত সোমবার টিউশনি করার উদ্দেশ্যে তিনি মেস থেকে বের হন। এরপর রাতে তিনি আর মেসে ফেরেননি। এক পর্যায়ে আরিফের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তার মেসের অন্য বন্ধুরা জানার পর তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে বুড়িগঙ্গার এক নৌকার মাঝি আরিফের মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন পায়। থানায় জিডি করা হয়। খবর পেয়ে নৌপুলিশ বুড়িগঙ্গা হতে তার লাশ উদ্ধার করে।

উল্লেখ্য ঢাকার কেরানীগঞ্জে নিখোঁজের একদিন পর বুড়িগঙ্গা নদী থেকে জগন্নাথ বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র মো. আরিফুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) বিকালে রাজধানীর সদরঘাটের লালকুঠিঘাট বরাবর বুড়িগঙ্গা নদীর মাঝখান থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার মধ্যরাতে আরিফের লাশ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স মারুফদহ গ্রামে পৌঁছালে বাড়িতে শোকের মাতম শুরু হয়। ১ জুলাই বুধবার সকালে আরিফের মরদেহ জীবননগর উপজেলার মারুফদাহ গ্রামের মাঝপাড়া কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

Share





Related News

Comments are Closed