শাহবাগ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা কোটা বিরোধীদের

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলো শিক্ষার্থীরা। ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৪টায় সারাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে কোটাবোরোধীরা।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত ৯টায় শাহবাগ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
এসময় ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার নিন্দা জানান তারা।
একইসঙ্গে সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে কোটা সংস্কারের আইন পাস না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বিকেল ৫টার দিকে বিশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তারা। এর ফলে শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থান ধরে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। কোটা বিরোধী স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা।
দেখা গেছে শিক্ষার্থীরা, ‘কোটা না মেধা-মেধা মেধা, লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই, আমার সোনার বাংলায়, বৈষ্যমের ঠাই নাই, লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এর আগে বিকেলে শিক্ষার্থীরা ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিয়ে পুলিশকে পিছিয়ে দিয়েছেন। পুলিশ সরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু স্পেশালাইজড হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছে। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য সতর্ক অবস্থায় মোতায়েন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১০ জুলাই) প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের এই রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।
ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন।
টানা কয়েক দিন আন্দোলনের পর গত ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। পরদিন হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। তবে শিক্ষার্থীরা আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
Related News

টাঙ্গাইলে সড়কদূর্ঘটনায় ২ মোটরসাইকেল আরোহি নিহত
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: টাঙ্গাইলের কালিহাতী ও ঘাটাইলে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহি সহRead More

কাঁচপুরে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে মা-ছেলেসহ নিহত ৩
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাস ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সংঘর্ষে মা-ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবারRead More
Comments are Closed