Main Menu

মায়ের মোবাইল ফোন বিস্ফোরণে ৮ মাসের শিশুর মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মায়ের মোবাইল ফোন বিস্ফোরণে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই শিশুর বয়স আট মাস। বিস্ফোরিত ওই মোবাইল ফোনটি চার্জিং মোডে ছিল এবং একপর্যায়ে শিশুটির মুখের কাছে সেটির ব্যাটারি বিস্ফোরিত হয়।

এতেই মারা যায় ওই শিশু। গত রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) ভারতের উত্তরপ্রদেশের বরেলি জেলায় মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত রোববার বরেলিতে চার্জিং মোডে পাশে রাখা একটি মোবাইল ফোনের ব্যাটারি বিস্ফোরণে আট মাস বয়সী ওই শিশু মারা যায়। নিহত ওই শিশুর নাম নেহা। আর তার মায়ের নাম কুসুম কাশ্যপ। ঘটনার সময় মা কুসুম ঘরে ছিলেন না।

টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, বিস্ফোরিত মোবাইল ফোনটি একটি কীপ্যাড ফোন। ছয় মাস আগে সেটি কেনা হয়েছিল। মোবাইল ফোনটির ব্যাটারি আগে থেকেই ফোলা ছিল এবং বিস্ফোরণের সময় সেটি সৌর প্যানেলের সাথে সংযুক্ত একটি সুইচের মাধ্যমে চার্জে রাখা ছিল বলে ঘটনা সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

শিশুটির মা কুসুম কাশ্যপ ঘটনার সময় ঘরে ছিলেন না। পরে তিনি একটি বিকট শব্দ শুনে ছুটে আসেন এবং তার অপর মেয়ে নন্দিনিকে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শোনেন। পরে ঘরে ঢুকে শিশুটিকে পোড়া জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পুলিশ বলেছে, ‘অভিভাবকের অবহেলার কারণে’ এই ঘটনা ঘটেছে তবে এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

নিহত শিশু নেহার বাবার নাম সুনীল কুমার কাশ্যপ। ৩০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি বরেলি জেলার ফরিদপুর থানার পাচোমি গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন শ্রমিক এবং নিজের নির্মাণাধীন বাড়িতে বসবাস করেন, যদিও সেখানে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। আর এ কারণে সুনীলের পরিবার আলো জ্বালানো এবং মোবাইল ফোন চার্জ করার জন্য সোলার প্লেট এবং ব্যাটারি ব্যবহার করে থাকে।

ঘটনার দিন সুনীল কাজে বের হলে স্ত্রী কুসুম মেয়েদের সাথে বাড়িতেই ছিলেন। দুপুরের খাবারের পর, কুসুম তার মেয়েদের আলাদা চৌকিতে ঘুমাতে দেয় এবং নেহা যেটিতে ঘুমাচ্ছিল সেখানে তার ফোনটি চার্জে রেখে দেয়।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কুসুম বলেন, ‘একজন প্রতিবেশীর সাথে কথা বলার সময় আমার মেয়ে নন্দিনীকে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শুনতে পাই। মোবাইল বিস্ফোরণের কারণে চৌকিটি পুড়ে গেছে। নেহাও মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে। আমি কখনোই ভাবিনি যে, আমার মোবাইল ফোনটি আমার মেয়ের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে, না হলে আমি সেখানে এটি রাখতাম না।’

সুনীলের ভাই অজয় ​​কুমার বলেন, ‘আমরা খুবই দরিদ্র এবং এখনও কীপ্যাড ফোন ব্যবহার করি। ফোনটি একটি ইউএসবি ক্যাবল ব্যবহার করে চার্জ হচ্ছিল কিন্তু অ্যাডাপ্টারটি সংযুক্ত ছিল না, যে কারণে এটি বিস্ফোরিত হয়। আমার ভাইয়ের কাছে খুব বেশি টাকা ছিল না। একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেহার চিকিৎসা হলে হয়তো তার (নেহার) জীবন বাঁচানো যেত।’

ফরিদপুর থানার এসএইচও হারভীর সিং বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ দায়ের করতে অস্বীকার করেছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার পর নেহার মরদেহ তাদের কাছে দেওয়া হয়। তদন্তেও দেখা গেছে, মোবাইল বিস্ফোরণের কারণেই শিশুটি আহত হয়েছিল। পরিবার বলেছে, এটি একটি দুর্ঘটনা এবং কোনো অভিযোগ করতে চায় না তারা।’

Share





Related News

Comments are Closed