Main Menu

দেশেই ভ্যাকসিন উৎপাদনের চেস্টা প্রবাসী চিকিৎসকদের

আহমেদ বকুল: প্রবাসে বসবাসরত কয়েকজন স্বনামধন্য চিকিৎসক দেশের মহাদুর্যোগে বিশাল অবদান রাখছেন। জীবন রক্ষাকারী ভেন্টিলেটর ও ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পাঠাচ্ছেন। প্রবাসী চিকিৎসকদের তৎপরতায় বাংলাদেশ এমন একটি ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে যাচ্ছে যা সফল হলে শুধু বাংলাদেশ নয় গোটা বিশ্ব এই ভ্যাকসিনের উপকারিতা পাবে। এই ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।

গত বুধবার (১১ আগস্ট) রাতে সিলেট মিডিয়া সংলাপে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক (একুশে পদকপ্রাপ্ত) প্রফেসর ডাক্তার এবিএম আব্দুল্লাহ একথা বলেন।

গণটিকার ব্যাপারে তিনি বলেন, এই কর্মসূচিতে কিছুটা ভুল থাকার জন্য ঝামেলা হয়েছে। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন পাওয়া সাপেক্ষে গণটিকা কর্মসূচি শুরু হবে। তবে এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান করে টিকা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

তিনি বলেন, এত লম্বা একটি লকডাউন মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। মানুষের রুটিরুজি বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছাতে না পারলে মানুষ করোনার থেকেও খাদ্য সংকটে বেশি পড়বে। যার কারণে লকডাউন খুলে দেয়া হয়েছে। মানুষের সচেতন হওয়া দরকার। মাক্স এবং হাত ধৌত করা এই কাজগুলো করলে মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ কম হবে।

আমেরিকা মেট্রোপলিটন লার্নিং ইউনিভার্সিটির পরিচালক ও বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাক্তার মাসুদুল হাসান বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। এই দেশ স্বাধীন করতে আমাদের অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। তাই দেশের এই দুর্যোগে আমরা বসে থাকতে পারিনা। আমরা দেশের জন্য ৬৫০ টির মত ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা করেছি। সাড়ে ৩০০ ভেন্টিলেটর ইতোমধ্যে আমরা দেশে পাঠিয়েছি। বাকিগুলো দু এক দিনের ভিতর দেশে পৌঁছে যাবে।

মাসুদুল হাসান আরও বলেন, প্যানডেমিক শুরু হওয়ার পর থেকে আমি একটি কথাই বলে যাচ্ছি করোনার চিকিৎসা মাত্র ১০০ টাকা। আইভারমেকটিন ও ডক্সিসাইক্লিন এই চিকিৎসার একটি অনুষঙ্গ। আমার অনেক পেসেন্ট আইভারমেকটিন খেয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ আছেন। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর কয়েকটি দেশে আমার কয়েক হাজার পেশেন্ট আইভারমেকটিন নিয়মিত ব্যবহার করে সুস্থ আছেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আইভারমেকটিনকে জরুরিভিত্তিতে প্রটোকলের আওতায় আনলে করোনা রোধ সহজ হবে।

উল্লেখ্য, আইভারমেকটিন প্রণয়নের জন্য আমেরিকা থেকে ডাক্তার হোসেন আশফাক, ডাক্তার আশরাফ উদ্দিন নাসিম, ডাক্তার নেবেল, ডাক্তার আরিফ, প্রফেসর ডাক্তার জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদিক, ডাক্তার রাকিবুল হাসান, বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডাক্তার মো: তারেক আলম, প্রফেসর এবিএম আব্দুল্লাহ ও মোঃ সাইদুল হাসান আইভারমেকটিন নিয়ে কাজ শুরু করেন।

সর্বপ্রথম ডিবিসি টিভি চ্যানেলে গত ২ মে এবং ২০ জুন সিলেট মিডিয়াতে অধ্যাপক মাসুদুল হাসান করোনা চিকিৎসা ও তা প্রতিরোধের জন্য আইভারমেক্টিন এর কথা বলেন। এরপর থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিনি ও তাঁর টিমের সদস্যরা তা প্রচার করতে থাকেন। বর্তমানে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে আইভারমেকটিন করোনা রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভারতের অল ইন্ডিয়া মেডিকেল সাইন্স আইভারমেকটিনকে করোনা চিকিৎসার জন্য এপ্রুভ করেছে।

মাসুদুল হাসান বলেন, আমরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে যতটুকু করা প্রয়োজন আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করব। তিনি বলেন, আমরা বাইডেন প্রশাসনের ‘করোনা প্রতিরোধ কমিটি’র সাথে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশকে ইতিমধ্যে ৩০ লাখ ভ্যাকসিন পাঠিয়েছি। প্রতিটি ধাপে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাবে।

আমেরিকার টেম্পল ইউনিভার্সিটির বিশিষ্ট নেফ্রলজিস্ট অধ্যাপক ডাক্তার জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদিক বলেন, আমরা সুইডেনের আবিষ্কৃত একটি ভ্যাকসিনের ফর্মুলা বাংলাদেশে আনার জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছি। এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে মেনুফেকচারিং হবে। এটা সব ধরনের তাপমাত্রায় রাখা যাবে। নাক এবং মুখ দিয়ে তা ব্যবহার করা যাবে। এটা উৎপাদিত হলে আমরা বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে রপ্তানী করতে পারব।

তিনি বলেন, আমরা শহীদ পরিবারের সন্তানরা এই প্রকল্পের নাম দিয়েছি ‘বঙ্গবন্ধু আই এস আর ভ্যাকসিন প্রজেক্ট’। শোকাবহ আগস্ট মাসে এটাই আমাদের একটি নিবেদন।

এই প্রকল্পের টিম লিডার হলেন ডাক্তার আরিফুর রহমান, টিমের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, আমেরিকা থেকে অধ্যাপক ডাক্তার মাসুদুল হাসান, অধ্যাপক ডাক্তার জিয়াউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডাক্তার চৌধুরী হাফিজ আহসান, সাবেক আইসিএস কর্মকর্তা মাহমুদ উস শামস চৌধুরী বাপ্পী ও সুইডেন প্রবাসী সৈয়দ শাহজাহান, বাংলাদেশ থেকে এই প্রকল্পে সহায়তা করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডাক্তার এবিএম আব্দুল্লাহ, অধ্যাপক আহমেদুল কবির এবং অধ্যাপক সৈয়দ মুদাসসের আলী।

প্রফেসর ডাক্তার এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের জন্য এটি একটি আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেবে। এই নজেল স্প্রে সব ধরনের করোনার ভেরিয়েন্টকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম। আমরা এই ভ্যাকসিন এর ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদী। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন করতে হলে টিমওয়ার্কের প্রয়োজন। আমরা সেই চেষ্টাই করছি। ইনশাল্লাহ্ আমরা এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষম হব।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুক্তরাজ্যের টেম্পল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডাক্তার জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদিক, সঞ্চালনা করেন, সিলেট মিডিয়ার সভাপতি আহমেদ বকুল।

Share





Related News

Comments are Closed