Main Menu

ওসমানীতে যাত্রী হয়রানি, দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী জামিলা চৌধুরীকে হয়রানির অভিযোগে দুই কর্মকতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও আরেকজনকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (৩১ জুলাই) ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক চৌধুরী ওমর হায়াত এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে শাস্তির আওতায় আনা দুই কর্মকতার নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

চৌধুরী ওমর হায়াত বলেন, গত বুধবার (২৮ জুলাই) ওই নারীর সঙ্গে সৃষ্ট ঘটনার জন্য শুক্রবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় তার বাসায় গিয়ে বলেছি, আগামী ৪ আগস্ট যে ফ্লাইট আছে, সেই ফ্লাইটে যেতে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। এছাড়া ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলইন্স কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামীকাল রোববার (১ আগস্ট) তদন্ত করতে আসবেন বিমানের জিএম পদবির এক কর্মকর্তা।

জানা গেছে, গত বুধবার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ বিমানের (বিজি-২০১) সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্য যাওয়ার কথা ছিল জামিলা চৌধুরীর। ফ্লাইট ধরতে তিনি ওইদিন দুপুর সোয়া ১টায় বিমানবন্দরে হাজির হন। চেকইনের সময় তিনটি লাগেজে তার মালামাল ৮৪ কেজি ওজন হয়। নির্ধারিত ওজনের চেয়ে ৪৪ কেজি বাড়তি হওয়ায় ফি আসে ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৮৪ টাকা।

এ নিয়ে বিমান কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয় জামিলার। তারা তাকে অপমান করেছেন- নিজের ফেসবুক লাইভে এমন দাবি করেন জামিলা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দর পৌঁছানোর পরও কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে তাকে রেখেই প্লেন ছেড়ে চলে যায়।

ফেসবুক লাইভে জামিলা চৌধুরী জানান, নিজের বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে দেশে এসেছিলেন তিনি। ফেরার পথে চেকইনকালে ৩টি লাগেজে নির্ধারিত ওজনের চেয়ে অতিরিক্ত মালামাল হয়ে যায়। এজন্য তার কাছে ২৬ হাজার টাকা দাবির অভিযোগ করেন ওই কর্তব্যরত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় তার লাগেজ ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাকে অপমান করে বলা হয়, ‘তুমি একটা পাগল মেয়ে’।

ওই লাইভে নিজের ভোগান্তির কথা জানিয়ে জামিলা চৌধুরী জানান, চেকিংয়ের নামে বিমান বাংলাদেশ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। ২৬ হাজার টাকা না দেওয়াতে তারা তাকে এমন হয়রানি করে ফ্লাইট মিস করান। তারা তার ইমোশনকে নিয়ে খেলা করছেন। যখন তিনি বলেছেন, ‘আমি ডিপ্রেশনের ট্যাবলেট খাই’, তখন বলা হয়েছে, ‘তুমি তো একটা পাগল মেয়ে’। মিথ্যে অপবাদ দিয়ে পাসপোর্ট ছুড়ে ফেলা হয় এবং ফ্লাইটের ডেট লাইন সম্পর্কেও কেউ তাকে অবহিত করেনি।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে সন্তানদের রেখে আমার অসুস্থ বাবাকে দেখতে আসি। মা-বাবা চলে গেলে এই বাংলার মাটিতে আসবো না। আমাকে তারা লাঞ্ছিত করেছেন। আমি এতো লাঞ্ছিত হয়েছি, শুধু জায়নামাজে বসে আল্লাহকে বলেছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ বিমানের কাউন্টারে পৌঁছালেও দায়িত্বরত কর্মকর্তা জামিলা চৌধুরীর কাছে লোকেটর ফরম চান। তখন নিজ মোবাইলে লোকেটর ফরমটি দেখালে প্রিন্ট কপি চান এক কর্মকর্তা। বারকোডযুক্ত লোকেটর ফরমে প্রিন্ট কপি বাধ্যতামূলক হতে পারে না- এ নিয়ে বাকবিতন্ডা হয় দুইপক্ষের। জামিলা জানান, এখন সবকিছুই ডিজিটালি চলছে। কিন্তু বিমানের ওই কর্মকর্তা তা মানেননি। কিছুক্ষণ বাকবিতন্ডার পর লোকেটর ফরম প্রিন্ট করার জন্য যান জামিলা। কিন্তু সেখানে দীর্ঘ লাইন থাকায় তা প্রিন্ট করাতে পারেননি তিনি। এখানে দুই দফায় বেশ খানিকটা সময় চলে যায় তার।

এরপর তার লাগেজে অতিরিক্ত মালামালের জন্য কর্মকর্তা ‘অনৈতিকভাবে’ টাকা দাবির অভিযোগ করেন জামিলা চৌধুরী। তিনি অপারগতা জানালে অতিরিক্ত ওজনের লাগেজ ফিরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র একটি লাগেজ নিয়ে বোর্ডিং পাস দেওয়ার জন্য আকুতি জানান। ততক্ষণে কাউন্টার বন্ধ করে কর্মকর্তারা চলে যান। উপস্থিত অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও অনুরোধ জানালে কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। এরপর নিজের মোবাইল ফোনে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন তিনি। ওই সময় বিমানের কর্মকর্তারা এবং এভিয়েশনের সিকিউরিটি ইনচার্জ কেউই তাকে বাধা দেননি।

এ বিষয়ে বিমানের ব্যবস্থাপক চৌধুরী ওমর হায়াত সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, করোনার জন্য লোকেটরের হার্ডকপি যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। কারণ মোবাইল ফোন অনেক সময় মিসিং হয়ে গেলে যাত্রীকেই বিপত্তিতে পড়তে হবে।

Share





Related News

Comments are Closed