Main Menu

ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার বন্ধ, বিপাকে শিক্ষার্থিরা

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: করোনায় সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধের কারণে বাংলাদেশে ভিসা ফ্যাসিলেশন সার্ভিসের (ভিএফএস) অধীনস্থ ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা।

করোনাকালীন সময়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ থেকে সীমিত পরিসরে ভিসা সার্ভিস দিয়ে গেলেও বাংলাদেশে কোনো ধরণের নির্দেশনা ছাড়াই গত ৫ এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে এই কার্যক্রম। ভিসা ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রতিদিন ভিএফএস অফিস থেকে হতাশ হয়ে ফিরছেন বিদেশগামী শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত সময়ে যেতে না পারলে ২৫ শতাংশ টিউশন ফি হারানোর শঙ্কাও রয়েছে অনেকের।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) এ নিয়ে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সিলেটের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে গিয়ে এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন সিলেটসহ সারাদেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। জরুরী সেবার মত ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার সীমিত পরিসরে খোলা রেখে কার্যক্রম চালু করতে জোর দাবি জানান তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা ও ডিগ্রী অর্জনের জন্য আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকের ভিসা হয়েছে আবার অনেকে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধের কারণে ৫ এপ্রিল থেকে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার বন্ধ রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের পাসপোর্ট ওই অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারছেন না। পাসপোর্ট না পাওয়ায় ভিসা পেয়েও অনেকে পছন্দের বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য রাখেন রাহিমা আক্তার চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি দিয়ে ভর্তি হয়েছি। ভিসা প্রাপ্তির জন্য ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে পাসপোর্টসহ সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভিসা ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের টিউশন ফি ২৫ শতাংশ কেটে নেবে। এতে আমরা আর্থিকভাবে খুব ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

রাহিমা আক্তার চৌধুরী বলেন, যারা আবেদন করেছেন তাদের অনেকের IELTS ও মেডিকেল পরীক্ষার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। যা পূনরায় রি-ইস্যু করা সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। তাছাড়া আমরা গত ২/৩ মাস থেকে অনলাইনে ক্লাস করতেছি। নেটওয়ার্ক সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে আমারা ক্লাসে যুক্ত হতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের বারবার ইমেইল করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার বন্ধ থাকায় আমরা বারবার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হচ্ছি। প্রতিদিন অনেকে অফিসে গিয়ে কাউকে না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসছেন। লকডাউনের সময় ভিএফএস অফিস বন্ধ করা হলেও সেবাগ্রহীতাদের ব্যাপারে তারা কোনো নির্দেশনা দেয়নি। তাছাড়া ভিএফএস অফিসে ৫ এপ্রিলের পরে যাদের অ্যাপয়েনমেন্ট ছিলো তারা দুর দুরান্ত থেকে গিয়ে দেখেন তাদের অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে তাদেরকে পূর্বে কিছু জানানো হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে রাহিমা জানান, বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদকারী প্রত্যেকটা স্টুডেন্ট ও তাদের ডিপেন্ডেন্টের জন্য আলাদা আলাদা হেলথ ইন্সুরেন্সের জন্য পে করতে হয়। সেশন মিস হলে নতুনভাবে এই হেলথ ইন্সুরেন্সের টাকা পে করতে হবে। যা প্রায় লক্ষাধিক টাকার মত। তাছাড়া আগের প্রদান করা ফি রিফান্ড হতে অর্ধবছর লেগে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, করোনা সংক্রমণরোধে লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি আমরাও মানি। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেহেতু শপিংমল থেকে শুরু করে গার্মেন্টস পর্যন্ত খোলা রয়েছে। তাই জরুরী সেবার মত সীমিত পরিসরে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার খোলা রেখে সার্ভিস প্রদান করলে করোনার দুঃসময়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবো না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু তাহের, মোহাম্মদ ছামি, শাব্বির ইসলাম নাঈম, এনাম আহমদ, সাকিব আহমদ, মোহাম্মদ রাফি, মহসিন আহমদ, রোমান আহমদ ও নাহিদ আহমদসহ অনেকে।

Share





Related News

Comments are Closed