Main Menu

সিলেটের সাদাপাথর ও জাফলং পর্যটন স্পটে পর্যটকদের ঢল

পর্যটন ডেস্ক: মনোমুগ্ধকর ও প্রবল চিত্তাকর্ষক সিলেটের সাদাপাথর ও জাফলং পর্যটন স্পট। সাদাপাথরের শীতল পরশ পেতে ও জাফলংয়ের মেঘ-পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দলে দলে আগমন ঘটে পর্যটকদের। ঈদসহ বিভিন্ন জাতীয় ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নামে সিলেটের এই দুটি পর্যটন স্পটে।

এবারের মহা উৎসব আনন্দঘন ঈদুল ফিতরেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জের নজরকাড়া ভোলাগঞ্জ পর্যটন স্পট সাদাপাথরে দেশের বিভন্ন স্থান থেকে ছুটে এসেছেন হাজার হাজার পর্যটক আবাল-বৃদ্ধ ও বণিতা।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সারি সারি গাড়ি ও নৌযান নিয়ে এসে জড়ো হচ্ছেন সাদাপাথর স্পটে। মহা আনন্দে কাটাচ্ছেন দৈনন্দিন জীবনের কিছু সময়।

ঈদুল ফিতরের ছুটির শেষ ও দ্বিতীয় দিন শনিবার। এই দিনে পর্যটকদের বাঁধভাঙ্গা ঢল নেমেছে সাদা পাথর রাজ্যে।

সিলেট শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদীর উজানে এই সাদাপথর রাজ্য। সাদাপাথর ও ধলাই নদীর শীতল স্পর্শ যেনো এক নৈসর্গিক আবহের হাতছানি। এই আবহে নিজেদেরকে সপিয়ে নিতে মাতোয়ারা মানুষজন ছুটে আসেন সারাবছর ধরে।

সিলেটের সাদাপাথর নামীয় এই নৈসর্গিক রাজ্যের একদিকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সূরম্য পর্বতমালা, অন্যদিকে বাংলাদেশের পল্লীঘেরা সবুজশ্যামল পরিবেশ। এর মাঝখান দিয়ে মেঘালয় পর্বত থেকে প্রবাহিত ধলাই নদী। নদীর উজানে দুই পাড়ে প্রাকৃতিকভাবে বর্ণিল সাজে সাজিয়ে রাখা সারি সারি সাদাপাথর। উপরের নীল আকাশ, উজানের সবুজ পর্বতমালা ও নিচের সাদাপথর বরাবরই মুগ্ধ করে ও মাতিয়ে তুলে ভ্রমনপিপাসু পর্যটকদের।

সাদাপাথর দেখতে আসা নারায়ণগঞ্জের সোমা আক্তার তার অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন- এই পরিবেশ ও এই প্রতিবেশ নয়নাভিরাম এবং অপরূপ। এই শীতল পরিবেশ যেকোনো মানুষের মনকে ক্ষণিকে পরিবর্তন করে দিতে পারে, নিমিষেই দুর করে দিতে পারে জীবনের সকল ক্লেশ ও জ্বালাতন।

নেত্রকোনা থেকে স্বপরিবারে বেড়াতে আসা গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার তানহা জানান, সাদা শ্যামল ও নীল-সবুজের এই পাথুরে শীতল পরিবেশে আমি যেনো নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। মন চাচ্ছে না ফিরে যেতে। কিন্তু তারপরও ফিরতে হচ্ছে নিজ নীড়ে।

সাদাপাথর ঘুরে কুমিল্লার শিউলি বেগম জানান, এই পরিবেশ অপরূপ। যে কেউ আসলে মন ভালো হয়ে যাবে।

মৌলভীবাজারে কুলাউড়া থেকে আসা শামীম আহমেদ বলেন, সাদাপাথর ও ধলাই নদীর শীতল পরশ মনকে আরো শীতল করে দিয়েছে। সত্যিই এটা এক অসাধারণ পর্যটন স্পট। একবার এসে ফিরে যাওয়ার পর বারবার মন চাইবে আবার চলে আসতে।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থেকে আসা রাজেল মিয়া বলেন, দুপুরে সাদাপাথরে এসেছি। সাদাপাথরের ধলাই নদীর শীতল স্পর্শ মনকে চাঙ্গা করে দিয়েছে। সত্যিই অসাধারণ জায়গা। অবসর পেলেই চলে আসি।

ঈদে সাদাপাথরে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে প্রচুর ট্যুরিস্ট পুলিশ। সিলেট রিজিওনের পুলিশ ইন্সপেক্টর আখতার হোসেন বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও তৎপর রয়েছে। কয়েকটি টিমে বিভক্ত হয়ে আমাদের পুলিশ পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছে। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দে ঘুরাফেরা করতে কোনো অসুবিধা ও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছ না বলেও জানান তিনি।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুনজিৎ কুমার চন্দ জানান, সাদা পাথর পর্যটন স্পটে বেড়াতে আসা পর্যটকের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সঠিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ আগন্তুক পর্যটকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। আর এতে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে উপজেলার সব কটি পর্যটনকেন্দ্র।

শনিবার ঈদের দ্বিতীয় দিনেও উপজেলার বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় দেখা গেছে ভ্রমণপ্রিয়দের। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে মেঘ-পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা।

উপজেলার জাফলং, বিছনাকান্দি, সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুল ছাড়াও পানতুমাই ঝরনা, জাফলং চা বাগান ও মায়াবী ঝরনায় পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

পর্যটকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, পাহাড়, পাথর আর স্বচ্ছ জলের সমাহার দেখে তাঁরা বিমোহিত হয়েছেন। পরিবার-পরিজন বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে তারা এসেছেন প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে মেঘ-পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা। উপজেলার জাফলং, বিছনাকান্দি, সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুল ছাড়াও পানতুমাই ঝরনা, জাফলং চা বাগান ও মায়াবী ঝরনায় পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

পর্যটকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, পাহাড়, পাথর আর স্বচ্ছ জলের সমাহার দেখে তাঁরা বিমোহিত হয়েছেন। পরিবার-পরিজন বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে তারা এসেছেন প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (জাফলং এরিয়া) মো রতন শেখ (পিপিএম) জানান- পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও তৎপর রয়েছে। কয়েকটি টিমে বিভক্ত হয়ে আমাদের পুলিশ পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছে। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দে ঘুরাফেরা করতে কোনো অসুবিধা ও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছ না বলেও জানান তিনি।

তিনি জানান শুক্রবার বিকেলে ছাতক থেকে একটি পরিবার জাফলংয়ে বেড়াতে এসে দুই কিশোর ও এক তরুণের ইভটিজিংয়ের শিকার হন ওই পরিবারের নারীরা। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ ভিকটিমরা ট্যুরিস্ট পুলিশকে জানালে আমরা ইভটিজারদের আটক করে উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেই। পরে উপজেলা প্রশাসন এসে ওই তরুণকে দুই বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। আর অপর দুই কিশোরকে তাদের পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়। আদালতের ম্যাজিস্ট্যাট ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম।

Share





Related News

Comments are Closed